ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের সঠিক উপায়

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুলাই ৬, ২০২২, ০৫:১৬ পিএম

ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণের সঠিক উপায়

মাংস সংরক্ষণের জন্য আমাদের কাছে বিভিন্ন উপায় আছে তবে আমরা সবাই ফ্রিজে রাখতেই পছন্দ করি।পবিত্র ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানীর মাংস গুলো নির্দিষ্ট অংশ ভাগ করে দেয়ার পর নিজের অংশটুকু সংরক্ষণ করে থাকে। তবে সঠিক পদ্ধতি না জেনে রাখলে টাটকা মাংস বেশিদিন টাটকা নাও থাকতে পারে এবং মাংসের পুষ্টি গুনও হারিয়ে যেতে পারে।
 

অনেকেই ভাবেন, শুধু পলিথিনের ব্যাগে মাংস ফ্রিজে বরফ করে রাখলেই মাংস দীর্ঘদিন ভালো থাকে। আসলে ব্যাপারটি এতটা সহজও নয়। সঠিক উপায়ে মাংস কাটা, ধোয়া ও সংরক্ষণ না করা হলে মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকী সেই মাংস খাওয়ার পর শরীরে ফুড পয়জনিং বা খাদ্য বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই মাংস সংরক্ষণের সঠিক উপায় জানা জরুরি। 
তাই আজকে ২টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো- 

১. সঠিক উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা না হলে কী ঘটতে পারে?

২. টাটকা মাংস কোন কোন উপায়ে সংরক্ষণ করলে দীর্ঘদিন ভালো রাখা যাবে? 

প্রথমেই আসি, যদি সঠিক উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা না হলে কী ঘটতে পারে। আমেরিকান এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট (USDA) এর নির্দেশনা অনুযায়ী ফ্রিজে রাখা মাংসে ২ ধরনের অণুজীব জন্মাতে পারে। 

১. প্যাথোজেনিক মাইক্রোবস বা মানব দেহে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ও

২. স্পয়লেজ মাইক্রোবস বা খাবারের পুষ্টিগুণ বিনষ্টকারী ব্যাকটেরিয়া।

প্যাথোজেনিক মাইক্রোবস বা মানব দেহে রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব

কাঁচা মাছ মাংসে জন্মানো এই ব্যাক্টেরিয়াগুলো মারাত্মক বিপজ্জনক। মাংস ভালোভাবে না ধুয়ে, রক্ত পরিষ্কার না করে ফ্রিজে রাখলে, সঠিক তাপমাত্রা অনুসরণ না করলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মাংসে জন্মাতে ও দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এদের মধ্যে রয়েছে E. coli, Staphylococcus aureus, Campylobacter jejuni, Clostridium perfringes, Salmonella spp., Listeria monocytogenese ইত্যাদি, যা কিনা বিভিন্ন রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী।

স্পয়লেজ মাইক্রোবস বা খাবারের পুষ্টিগুণ বিনষ্টকারী ব্যাকটেরিয়া

এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মাংসের রঙ, গন্ধ, স্বাদ, গঠন নষ্ট করে দেয়ার জন্য দায়ী। তবে এই ব্যাক্টেরিয়াগুলোতে মানুষের রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু সঠিকভাবে মাংস কাটা, ধোয়া ও প্যাকেট করা না হলে Lactobacillus spp, Leuconostoc spp, Pseudomonus spp. ইত্যাদি গোত্রের বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া গুলো জন্মে ও দ্রুত বৃদ্ধি হয়ে মাংস অল্পদিনেই নষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই, সঠিক ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে মাংস সংরক্ষণ করা জরুরি। 

এবার আসি, টাটকা মাংস কোন কোন উপায়ে সংরক্ষণ করলে দীর্ঘদিন ভালো রাখা যাবে? টাটকা মাংস সংরক্ষণ করার বেশ কয়েকটি উপায় আছে। যেমন- ফ্রিজিং, ক্যানিং, সল্টিং, স্মোকিং, ড্রাইং, কুকিং। এর মধ্যে ফ্রিজিং পদ্ধতিই সবথেকে বেশি সহজ ও সবার পছন্দ। 

ফ্রিজে টাটকা মাংস সংরক্ষণ করবেন কীভাবে?

গরু, খাসি, মহিষ, মুরগীর মাংসসহ সব মাংস হিমশীতল ও ফ্রিজিং করার ক্ষেত্রে USD’র নির্দেশনা হলো, মাংস যেন শূন্য (০) ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে জমাট বেঁধে বরফ হয়ে যায় সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এর ফলে ক্ষতিকর ইষ্ট, ব্যাক্টেরিয়াসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু মারা যায়। সেইসঙ্গে যে এনজাইমগুলোর কারণে মাংস বা খাবার নষ্ট হয়ে যায় সেগুলোর ক্রিয়াও অনেকটাই ধীর হয়ে যায় এবং মাংসের সেলফ লাইফ বৃদ্ধি পায়। 

ফ্রিজে মাংস রাখতে করণীয়

১. মাংস বাসায় এনে ভালো করে ধুয়ে রক্ত ও অন্যান্য ময়লা পরিষ্কার করে নিতে হবে। যে স্থানে এবং যে পাত্রে মাংস বণ্টন ও পরিষ্কার করা হবে সে স্থানে অন্য কোনো খাবার, সবজি রাখা যাবেনা। নয়তো ক্রস কনটামিনেশন হতে পারে। মাংসের রক্ত লেগে থাকলে তা থেকে বাজে গন্ধ হতে পারে এবং মাংসে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে।

২. মাংস রাখার আগে ফ্রিজের প্রতিটি চেম্বার বা ড্রয়ার ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। শুধু মাংস ফ্রিজে ফেলে রাখা যাবেনা। এতে করে ফ্রিজের অন্যান্য খাবারের সাথে ক্রস কনটামিনেশন ঘটতে পারে। এভাবে ফেলে রাখতে পরবর্তীতে মাংস বের করতেও সমস্যা হবে।

৩. যে ব্যাগে মাংস রাখা হবে তা যেন খুব সেফ এন্ড সিকিউরড হয়। খুব ভালো হয় জিপলক বা ভ্যাকুউম সিল্ড করা ব্যাগে রাখলে।

৪. মাংসে চর্বির পরিমাণ যত কম হবে তত বেশিদিন সংরক্ষণ করা যাবে। তাই, মাংসের গায়ে লেগে থাকা চর্বিগুলো কেটে ফেলে দিন। এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণও কমবে। মাংস কাটার দিকেও নজর দিতে হবে। মাংস বাসায় এনে চেষ্টা করুন ছোট ছোট স্লাইস করে রাখার। তা সম্ভব না হলে হাড় থেকে ছাড়িয়ে ছোট টুকরা করে ভালো করে ধুয়ে রাখুন।

৫. চেষ্টা করুন আধা কেজি বা খুব বেশি হলে ১ কেজি পরিমাণ প্যাকেট করার। তাহলে একবারেই পরিমাণমতো বের করে রান্নাকরে ফেলতে পারবেন। বার বার ভিজিয়ে মাংস আলাদা করতে হবে না।

৬. পরপর ২টি প্যাকেট রাখার মাঝে একটু দূরত্ব রাখুন। তাহলে বায়ু চলাচল করতে পারবে।

৭. গাদাগাদি করে মাংস না রেখে গুছিয়ে রাখুন। গরু, খাসি, মুরগির মাংস আলাদা চিহ্নিত করে রাখুন।

৮. মাংসের স্বাদ, গন্ধ, রং অক্ষুণ্ন রাখতে মাংসের উপরে একটু লবণ ছিটিয়ে দিতে পারেন। এতে মাংস ভালো থাকে।


 
যা করা যাবে না

১. অনেকে অলসতা করে অনেক বড় বড় প্যাকেট করে রাখেন। এরপর বের করে পুরো প্যাকেট ভিজিয়ে কিছু মাংস বের করে আবার আবার ফ্রিজে রাখেন আবার বের করেন। এটি একেবারেই করা যাবেনা। তাহলে মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যাবে। খুব বেশিদিন ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবেনা, এমনকী পচনও ধরতে পারে।

২. রান্না করা খাবারের সঙ্গে কাঁচা মাংস একসঙ্গে ডিপে রাখা যাবে না।

৩. সরাসরি মাংস পানিতে না ভিজিয়ে পলিথিনসহ স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে রাখুন। মাংস ছাড়াতে গরম পানি ব্যবহার করবেন না। ভালো হয় আগের রাতে না ভিজিয়ে বের করে রাখুন। তাহলে সারারাত ধরে থয়িং প্রক্রিয়ায় মাংস আলাদা হয়ে থাকবে। 

মাংস ফ্রিজে কতদিন পর্যন্ত ভালো থাকে?

সঠিক এবং নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখলে মাংস ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্তও রাখা যায়। একটু হালকা বড় করে রাখা মাংস হাড় থেকে ছাড়িয়ে রাখলে (-১৮ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রায়) ৪-১২ মাস পর্যন্ত রাখা যায়। রান্না করা গরুর মাংস সঠিক উপায়ে প্যাকেট করে ১-২ মাস পর্যন্ত ডিপ ফ্রিজ করে রাখা যাবে। তবে পুষ্টিমান ঠিক রাখতে গরু বা খাসির মাংস ৭-৮ মাস, রান্না করা গরুর মাংস ১ মাস এবং মুরগির কাঁচা মাংস ২-৩ মাসের বেশি রাখা উচিত নয়। এতে পুষ্টিমান কমতে শুরু করে।

আরইউ

Link copied!