Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪,

পোস্তগোলা ব্রিজ সংস্কার

দক্ষিণাঞ্চলের পথে তীব্র যানজট, ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪, ০৫:৪৮ পিএম


দক্ষিণাঞ্চলের পথে তীব্র যানজট, ভোগান্তি
ছবি: আমার সংবাদ
  • ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার সাড়ে ৩ বছর পর সংস্কার কাজ শুরু
  • ভোগান্তি থাকবে ৮ মার্চ পর্যন্ত
  • আগামী ১, ৪ ও ৮ মার্চ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে
  • বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান সাধারণ মানুষ

গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পোস্তগোলা ব্রিজের সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে ব্রিজটি বন্ধ থাকায় বিকল্প রাস্তাগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দিচ্ছে। সংস্কার কাজের জন্য গতকাল পুরোপুরি বন্ধ থাকে পোস্তগোলা সেতু। এ ছাড়াও আগামী ১, ৪ ও ৮ মার্চ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। যানবাহন চলাচল করতে হবে বিকল্প পথে। এ বিড়ম্বনা চলবে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্র্যাফিক বিভাগ জানিয়েছে, এই চার দিন সেতু দিয়ে কোনো যানবাহন পারাপার হতে পারবে না। বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর (পোস্তগোলা ব্রিজ) সংস্কারকাজের জন্য সেতুটি দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। বিকল্প পথ হিসেবে বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু (বাবুবাজার ব্রিজ) ব্যবহার করছে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় আসা যানবাহনগুলো। এতে বাবুবাজার ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত কেরানীগঞ্জের কদমতলী থেকে নাজিরেরবাগ এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে যান চলাচল।

বাবুবাজার ব্রিজের ওপরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে যানবাহন। অনেকেই পায়ে হেঁটে ব্রিজ পার হচ্ছেন। এসব রাস্তায় ২১ জেলাগামী গাড়ি চলাচলের ফলে যাত্রীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। ঢাকা থেকে দক্ষিণের পথে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য দুটি সেতু আছে। একটি বুড়িগঙ্গা প্রথম (পোস্তগোলা) সেতু ও অন্যটি বাবুবাজারে দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু। ঢাকা থেকে এ দুটি সেতু দিয়ে যেসব যানবাহন দক্ষিণের পথে চলাচল করে, সেগুলো কেরানীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়েতে মিলিত হয়। বাবুবাজার সেতুর উত্তর প্রান্তে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় সড়কের সংস্কারকাজ চলছে। ফলে যানবাহনের চলাচল আরও ধীর হয়ে গেছে। বিকল্প পথ পুরান ঢাকার বাবুবাজার সেতু বিপুল যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না। ফলে দীর্ঘ যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ।

জানা যায়, ২০২০ সালের ৩০ জুন উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের ধাক্কায় পোস্তগোলা সেতুর দুটি গার্ডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। প্রাথমিক মেরামতের পর সেতুটি চালু হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোপুরি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে সওজ।

সওজ সূত্র বলছে, পদ্মা সেতু চালুর পর এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে দিনে প্রায় ৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এই পথ দিয়ে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে দ্রুতগতিতে চলে যাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে বিকল্প পথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ফেরি পারাপার এবং ঘুরপথ বলে সময় বেশি লাগে। দূরের বিকল্প বাদ দিয়ে কাছের বিকল্প বাবুবাজার সেতু দিয়ে যাতায়াতে আগ্রহ বেশি মানুষের। কিন্তু বাবুবাজার সেতু দিয়ে চলতে হলে আসা-যাওয়ার পথে পুরান ঢাকার যানজটে পড়তে হয়। বাড়তি যানবাহনের চাপ সেতুতেও পড়ে। এ জন্য তীব্র যানজট হচ্ছে।

দেখা যায়, ঢাকামুখী যানবাহন জটে আটকা পড়ায় বিরক্ত হয়ে একপর্যায়ে মানুষ নেমে কাঁধে ও হাতে ভারী ব্যাগ বহন করে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা দেন। রাতে ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের আবদুল্লাহপুর থেকে যানজট শুরু হয়। যানবাহনগুলো পুরোপুরি থেমেছিল। এত যানজট যে গাড়ি শুরু করার প্রয়োজন হয়নি। বাস থেকে যাত্রীরা নেমে হেঁটে পোস্তগোলার দিকে রওনা দেন কেউ কেউ। কেউ কেউ কেরানীগঞ্জের ভেতর দিয়ে বছিলা ব্রিজের দিকে রওনা দেন।

এই বিষয়ে আলম হোসেন নামের একজন বলেন, যানজট হলেও থেমে থেমে গাড়ি চলার কথা। কিন্তু দুই ঘণ্টা স্থির হয়ে বসে থাকার পরে বাস থেকে নেমে গেলাম। বছিলা ব্রিজ হয়ে মিরপুরের বাসায় যাব বলে ঠিক করলাম। সেখানে এসেও দেখি, দীর্ঘ যানজট।

আরেকজন বলেন, ঢাকামুখী ও ঢাকা ছাড়ার উভয় রাস্তায়ই জ্যাম লেগে আছে। তবে ঢাকামুখী গাড়ির চাপই বেশি। এতে বাবুবাজার ব্রিজে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি মিলছে না পর্যাপ্ত গাড়িও। যেগুলোও বা চলছে, সেগুলো যাত্রী ভরা।  

বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায় দায়িত্বরত ট্র্যাফিক পুলিশ সদস্যরা জানান, পোস্তগোলা ব্রিজের সংস্কার কাজের প্রভাব পড়েছে বাবুবাজার ব্রিজে। এতে এখান দিয়ে বেড়েছে বড় গাড়ির চাপ। ফলে কিছুটা ধীর গতিতে চলছে গাড়ি। বাবুবাজার সেতুর উত্তর প্রান্তে রাজধানীর নয়াবাজার এলাকায় সড়কের সংস্কারকাজ চলছে। ফলে যানবাহনের চলাচল আরও ধীর হয়ে গেছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে তাঁরা চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে সওজের ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান বলেন, মেরামতের জন্য পোস্তগোলা সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহন আরও কিছু দিন বন্ধ থাকবে। বাকি দিনগুলোতে হালকা যান চলতে পারবে। ভোগান্তি এড়াতে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র ও নির্দেশনা তাঁরা প্রচার করেছেন। কিন্তু মানুষ আসলে দ্রুতগতির মহাসড়কে চলতে চান।

এআরএস

Link copied!