Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪,

আবারো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৭, ২০২৩, ০৭:৩৮ পিএম


আবারো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে: ফখরুল

দেশে আবারও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, নওগাঁয় র্যাব এক নারীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়েছে। ডাক্তার বলছে, নিহত ওই নারীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যে র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার, সেই র্যাবের বিরুদ্ধে আবারও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠছে। নিষেধাজ্ঞার পর নাটকীয়ভাবে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড কমে গিয়েছিল এখন তা আবার ঘটতে তে শুরু করছে। কারণ যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ‍‍`মুক্তিযোদ্ধা গণ সমাবেশে‍‍`প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

৭১ সালের পাকহানাদার সরকারের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কোন পার্থক্য কেউ নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যে সরকার অধিষ্ঠিত তা একাত্তরের পাক বাহিনীর প্রেতাত্মা। এরা সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না, ৭২ সালেই এদের আসল মুখোশ খুলে গিয়েছিল। আওমীলীগ মনে করে তারা একাই যুদ্ধ করেছে এ কারণে তারা শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীদের নাম স্মরণ করে না। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের নাম তো উচ্চারণই করতে চায় না বরং তাকে আরো দোষ দেয়।

তিনি বলেন, বলা হচ্ছে দেশে অর্থনীতির রোল মডেল হয়েছে, অর্থনীতি নয় অনর্থনীতি চলছে, এর মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাচ্ছে। কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের একটা কাজ প্রতারণা করা। ২০০৮ সালে ১০ টাকা চালের কথা বলেছে, এখন চালের দাম কত? তারা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কথা বলছে, যুদ্ধ নয় বরং আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় তাদের দুর্নীতিতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। তারা বলে, এত উন্নতি চোখে দেখে না অথচ সাধারণ মানুষের পেটের উন্নতি হয়নি। ঘর দিয়েছে দুই-তিনদিন পরপর ঘর ভেঙে পড়ে পত্রিকায় রিপোর্ট হচ্ছে। পদ্মা সেতু করেছেন ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এখন এক বছর না যেতেই আবার রাস্তা বন্ধ করে পদ্মা সেতুর রিপেয়ারিং শুরু হয়ে গেছে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে এরা দুর্নীতি করছে। স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত ধ্বংস করেছে।

নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে সংলাপের নাটক করা হচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখনো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিইনি। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ছাড়া আমরা সংলাপ করবো না।

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের সরকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে চিবিয়ে খাচ্ছে। স্বাধীনতা বাংলার মানুষের কাজে লাগছে না। লেবুর হালি ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা।

তিনি বলেন, ধনী বাংলাদেশকে গরিব বানিয়ে কিছু মানুষ বিদেশে নতুন করে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। যেদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থাকবে না সেদিন বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম । তার বক্তব্য চলাকালে মঞ্চে দাঁড়িয়ে নেতারা যেমন পারস্পরিক কথা বলছিলেন এবং ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন, পাশাপাশি হলরুমে উপস্থিত অধিকাংশ নেতাকর্মী দিচ্ছিলেন স্লোগান। ঢাকা মহানগর বিএনপি‍‍`র দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এবং মঞ্চে বসা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার নেতা কর্মীদের স্লোগান দিতে নিষেধ করলে তাতেও কাজ না হয়। এক পর্যায়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুহাত করোজোর করে নিজের কপালে ঠেকিয়ে নেতাকর্মীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন। মঞ্চে চেয়ারে বসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বারবার বলছিলেন, ‍‍`দয়া করে মুক্তিযোদ্ধাদের বসতে দেন।‍‍`

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্য চলাকালে তিনি বলেন,‍‍`গুলশানে বালুর ট্রাকের ওখানে গিয়ে স্লোগান দেন।‍‍` সারাদেশ থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বসার জায়গা পাচ্ছিলেন না, সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন,‍‍`মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ার খালি করে বসার জায়গা করে দেন।‍‍`

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন তখনো শ্লোগান বিশৃঙ্খলা চলে, ফারুক তার বক্তব্য চলাকালে বলেন,‍‍`আপনারা কি শ্লোগান বন্ধ করবেন না? প্লিজ, প্লিজ।‍‍`

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন,‍‍` এই স্লোগান দিও না‍‍`।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের বক্তব্য চলাকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চেয়ার থেকে উঠে ডায়াসের পিছনে পরিষ্কার করতে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাদের সরিয়ে দেন।

অনুষ্ঠানে খেতাবপ্রাপ্ত দুই মুক্তিযোদ্ধা মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এবং মেজর অবসরপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেয়ার উদ্দেশ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করেন। এছাড়াও শাহজাহান ওমর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বি এন পির আহবায়ক আব্দুস সালাম দেন নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরীকে, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত দেন আব্দুস সালামের ছেলে ফয়সাল সালামকে, চেয়ারপারসনের  উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক দেন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদকে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য ইসরাক হোসেনকেও জাতীয় পতাকা হস্তান্তর করা
আরএস
 

Link copied!