ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
বিমা খাতে চতুর্থ প্রজন্মের শীর্ষে সোনালী লাইফ

প্রথাগত ধারণা ভেঙেই পথচলা শুরু

জাহিদুল ইসলাম

আগস্ট ৪, ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম

প্রথাগত ধারণা ভেঙেই পথচলা শুরু

২০১৩ সালে যে কয়টি বিমা কোম্পানি সরকারের অনুমোদন পায় তার মধ্যে অন্যতম সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ করে পুরো বিমা শিল্পে চমক সৃষ্টি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

পাশাপাশি ব্যবসায়িক অভাবনীয় অগ্রগতির পরও ব্যবস্থাপনা ব্যয় ছিল অনেক কম। ইতোমধ্যে এক দশকে পদার্পণ করেছে চতুর্থ প্রজন্মের এই বিমা কোম্পানিটি। মাত্র এক দশকে প্রতিষ্ঠানটি সমসাময়িক চতুর্থ প্রজন্মের কোম্পানি তো বটেই, দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক জীবন বিমা কোম্পানিকেও পেছনে ফেলেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির আগামী দিনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষ জীবন বিমা কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ২০২১ সালে গ্রোস প্রিমিয়াম এসেছে প্রায় ৩২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথমবর্ষ ২০২ কোটি টাকা এবং নবায়নকৃত ১১৮ কোটি টাকা প্রায়। প্রতিষ্ঠানটি মোট প্রিমিয়াম আয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেকগুলো কোম্পানিকে পেছনে ফেলে শীর্ষ একাদশে উঠে এসেছে। এ ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম আয়ে দ্বিতীয় প্রজন্মের দুই কোম্পানি সন্ধানী ও হোমল্যান্ড লাইফ এবং তৃতীয় প্রজন্মের রূপালী, প্রগ্রেসিভ, সানলাইফ, পদ্মা, সানফ্লাওয়ার, গোল্ডেন ও বায়রা লাইফকে পেছনে ফেলেছে।

অপর দিকে, চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের ১৭টি কোম্পানির মধ্যে একমাত্র গার্ডিয়ান লাইফ সোনালীর চেয়ে উপরে অবস্থান করছে। সাধারণত একটি বিমা কোম্পানি টিকে থাকতে সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো রিনুয়্যাল পলিসি। বিমা খাতে নবায়ন প্রিমিয়ামের গড় ৪০-৪৫ শতাংশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের নবায়ন প্রিমিয়ামের হার ৯১.১৪ শতাংশ। পুরো বিমা খাতে নবায়ন প্রিমিয়ামের এই হারে সোনালী লাইফ সবার উপরে। ফলে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের আশা, আগামীতে শতভাগ না হলেও অন্তত ৯৯ শতাংশ রিনুয়্যাল সংগ্রহ করে পুনরায় দৃষ্টান্ত তৈরি করা। এক্ষেত্রে ভুয়া বিমা পলিসি রোধে সোনালী লাইফ শুধু গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস বা প্রধান কার্যালয়ের পলিসি সার্ভিস বিভাগ থেকে গ্রাহকের নাম্বারে কল করে নিশ্চিত করাই নয়, বর্তমানে সরাসরি ভিডিওকলের মাধ্যমে পলিসির সত্যতা যাচাই করা হয়। এতে ভুয়া পলিসি ও পলিসি ল্যাপস যেমন বন্ধ হবে তেমন রিনুয়্যাল প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে।

আবার জীবন বিমা তহবিলের ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠানটি চতুর্থ প্রজন্মের শীর্ষে অবস্থান করছে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান লাইফ ফান্ড রয়েছে ২৯৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের মধ্যে একমাত্র গার্ডিয়ান লাইফ সোনালী লাইফের কাছাকাছি অবস্থান করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। গার্ডিয়ান লাইফের জীবন বিমা তহবিলের পরিমাণ ২৮৮ কোটি টাকা।

তবে অবাক করা বিষয় হলো, প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা (প্রিমিয়াম আয়) ও জীবন বিমা তহবিলের সমৃদ্ধির পাশাপাশি দাবি পরিশোধে শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও ব্যবস্থাপনা ব্যয় করেছে নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেক কম। ব্যবসায়িক অগ্রগতির ধারাবাহিকতার সাথে সাথে প্রতিষ্ঠানটি ক্রমাগত কমিয়েছে ব্যবস্থাপনা ব্যয়। যেখানে ২০২০ সালে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ছিল ৪৮ শতাংশ, সেখানে ২০২১ সালে অনিরীক্ষিত হিসাবে সব মিলিয়ে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৪৪ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে তার ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সীমা থেকে ৬৯ কোটি টাকা কম ব্যয় করেছে।

তা ছাড়া চলতি বছরের ছয় মাসের অনিরীক্ষিত হিসাবে, সোনালী লাইফ ব্যয়সীমার চেয়েও ৪৫ কোটি টাকা কম ব্যয় করেছে। দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে সোনালী লাইফ রয়েছে অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে। আইডিআরএ সূত্রের তথ্যমতে, বিমা দাবির মধ্যে ম্যাচুরিটি ক্লেইম পরিশোধ হারে প্রতিষ্ঠানটি পুরো জীবন বিমা খাতে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া মৃত্যুদাবি পরিশোধের হারে জীবন বিমা খাতে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, সোনালী লাইফ ২০২১ সালের অনিরীক্ষিত হিসাবে ম্যাচুরিটি ক্লেইম পরিশোধের হার ৯৯.৯২ শতাংশ এবং ডেথ ক্লেইম পরিশোধের হার ৯৯.৩১ শতাংশ। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির এই সফলতার পেছনে পরিচালনা পর্ষদের সঠিক মানসিকতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা তৈরিকেই প্রধান উপলক্ষ হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রতিষ্ঠানটির সিইও মীর রাশেদ বিন আমান এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছিলেন, ‘ইন্স্যুরেন্স হয়রানি হয়, টাকা পাওয়া যায় না, সচেতনতা নেই, পেনিট্রেশন নেই এসব আলোচনা হচ্ছে। আগে যেসব দেশীয় বিমা কোম্পানি কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ ছিল। ফলে গ্রাহকরা সব বিমা প্রতিষ্ঠানকেই প্রতারক মনে করতে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ১ আগস্ট আমাদের কার্যক্রম শুরুর আগে থেকেই কোম্পানি পরিচালকদের একটি ভিশন ছিল। কিভাবে জীবন বিমা কোম্পানির দুর্নাম ঘুচিয়ে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করা যায়। সোনালী লাইফের স্বপ্নদ্রষ্টা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, তার অভিপ্রায় ছিল এমন একটি জীবন বিমা কোম্পানি গড়ে তোলার, যেটি হবে সেবাধর্মী, স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিভিত্তিক।

এগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা যেটা বুঝেছি, তা হলো— আগে নিজেদের (পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ) ঠিক হতে হবে। আমাদের কাছে যেহেতু বোর্ডের ভিশন-মিশন আগেই স্পষ্ট ছিল তাই শুধু প্রয়োগ নিয়ে ভাবনার বিষয় ছিল। আমরা দেখলাম, একমাত্র আইটির মাধ্যমে এটি সম্ভব। তাই আইটিকে কোর হিসেবে ধরে আমরা কাজ শুরু করি। দেশের মধ্যে আমরাই প্রথম ইআরপি বেইজড সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুরো কোম্পানিকে পরিচালনা করছি। তা ছাড়া রয়েছে নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ রয়েছে।’

বিমায় আস্থা ফেরাতে গ্রাহক তার সব তথ্য এখন নিজেই চেক করতে পারে বলে জানান এই সিইও। তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকরা ব্যাংকে বা মোবাইলে অর্থ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রিমিয়াম প্রদান করে। তা ছাড়া কোন গ্রাহক কবে, কত টাকা বোনাস পাবে সেটাও উন্মুক্ত থাকায় নিজেই চেক করতে পারে। গ্রাহকের সব তথ্য সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকে বলে কিছু হলে তার পরিবার সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে বোনাসসহ বিমার টাকা ফেরত পায়। ফলে সোনালী বিগত ৯ বছরে ১৭ হাজার গ্রাহকের দাবি পরিশোধে সাত দিনের বেশি সময় নেয়নি। এমনকি কোন সালে কত টাকা আমাদের দায় এবং সে সব বছরগুলোতে আমাদের রিটার্ন কত, এসব পরিকল্পনাও আমাদের সফটওয়্যারে রয়েছে। শুধু সফটওয়্যারের মাধ্যমে পুরো কোম্পানি পরিচালনা বা মোবাইল অ্যাপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে আইডিআরএ ইউএমপির মাধ্যমে যে ই-রিসিট দেয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে ২০১৪ সালেই তা শুরু করেছে সোনালী লাইফ। গ্রাহকের তথ্য যেকোনো সময় নিরীক্ষা করতে চালু করেছে ই-কেওয়াইসি ফরম।

বিমা খাতের এমন উল্লেখযোগ্য কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি দেশি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মাননা ও অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। এর মধ্যে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে সাসটেইনেবল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ইন বাংলাদেশ ক্যাটাগরিতে অর্জন করে ‘সাউথ এশিয়া বিজনেস অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২০’। এ ছাড়া সেরা সিইও হিসেবে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির হাত থেকে ‘এক্সপার্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন মীর রাশেদ বিন আমান। এর দুই দিন পর ১২ ডিসেম্বর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির হাত থেকে গ্রহণ করে অষ্টম ‘আইসিবি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-২০২০’।

এছাড়া সেরা উদীয়মান জীবন বিমা কোম্পানি হিসেবে চলতি বছরের ১৭ মার্চ অর্জন করে ‘আরটিভি সেরা বিমা সম্মাননা-২০২১’। বিমা গ্রাহকদের সুবিধার্থে লয়্যালিটি পার্টনার্স নামে একটি সার্ভিস চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আওতায় হসপিটাল, লাইফ স্টাইল (পোশাক-গহনা থেকে শুরু করে ঘরের জিনিসপত্র), হোটেল, রেস্টুরেন্স, ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসহ প্রায় ৬০০টি প্রতিষ্ঠানের ডিসকাউন্ট সেবা পাবে গ্রাহকরা। দেশের বিমা খাতে একমাত্র সোনালী লাইফের রয়েছে এমটিবির ভিসা প্ল্যাটিনা কার্ড। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি আগামী দিনগুলোতে গ্রাহক স্বার্থে এমন কিছু প্রযুক্তির সংযোজন করতে যাচ্ছে, যা বিমা খাতে কল্পনাতীত। বিমার প্রথাগত ধ্যান-ধারণাকে পাল্টে দেবে। গ্রাহক আস্থা ফিরে পাবে।

কোম্পানির একটি সূত্রে এমনটা জানা গেছে, গ্রাহক বিমা পলিসির স্যারেন্ডার ভ্যালুর বিপরীতে সাধারণত লোন নিতে পারে। কিন্তু তাৎক্ষণিক কোনো বিপদ-আপদ তৈরি হলে এই লোন নেয়া সময়সাপেক্ষ। কিন্তু গ্রাহকের এই বিপদে তাৎক্ষণিক সেবা দিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি এটি রাত বা দিন যেকোনো সময়েই সম্ভব। এতে তার প্রয়োজন মেটানো যাবে। তবে এ জন্য কমপক্ষে তিন বছর পলিসি চালিয়ে যেতে হবে। গত ২০ জানুয়ারি এই প্রযুক্তির ট্রায়াল দেয়া হয়েছে।

এছাড়া নগদ অ্যাপ থেকে সোনালী লাইফের গ্রাহক টাকা লোন নিতে পারবেন। তা ছাড়া এই প্রযুক্তি সারা দেশে স্থাপন করলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয় অবিশ্বাস্যভাবে কমে আসবে। শুধু গ্রাহকরাই যে প্রতিষ্ঠানটির এত সব সুবিধা পাচ্ছে তা নয়, বরং কর্মীবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন সুবিধা চালু করেছে সোনালী লাইফ। প্রতিষ্ঠানটির নারী কর্মীদের শিশু-বাচ্চাদের জন্য চালু করেছে ডে-কেয়ার সিস্টেম। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক জিমনেশিয়াম।

রয়েছে নিজস্ব ফুডকোর্ট ও প্রার্থনা কক্ষ। এভাবেই গ্রাহক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব কারণে আগামী পাঁচ-ছয় বছরে কোম্পানিটি দেশের শীর্ষ জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর একটি হবে, এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের।
 

Link copied!