ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে হতাশায় জুনিয়ররা

সচিব পর্যায়ে বড় পরিবর্তনের আভাস

বেলাল হোসেন

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২, ০৩:১৩ এএম

সচিব পর্যায়ে বড় পরিবর্তনের আভাস

আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আর বাকি ১৫ মাস। কয়েক মাসের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে খুব শিগগিরই সচিব পর্যায়ে বড় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। ফলে সরগরম হয়ে উঠছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে এবারের নিয়োগে সবার মাঝে এক ধরনের চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।

তবে প্রশাসন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা প্রশাসনের রুটিন ওয়ার্ক। বিশেষ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জুনিয়ররা। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তি নিয়োগ যেন নিয়মে পরিণত না হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি মাসের ২২ তারিখে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আলী আজমের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী নভেম্বরে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস দুজনই দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। তাদের চুক্তির মেয়াদও চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।

এছাড়াও চলতি বছরের ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেশ কয়েকজন সচিব বিদায় নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগেরসচিব খলিলুর রহমান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী।

বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বিসিএস প্রশাসনের ৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা আহমদ কায়কাউসের দুই বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হচ্ছে নভেম্বরে। এরপর তার মেয়াদ আর বাড়ছে না। তবে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে তিন বছর চুক্তির মেয়াদে তিনি (আহমদ কায়কাউস) যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ পদে বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলমের মেয়াদ শেষ হচ্ছে অক্টোবরে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে নিয়োগের দৌড়ে এগিয়ে আছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

সূত্র জানায়, মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। এখানে বর্তমান জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মাহবুব হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। বিসিএস ৮৬ ব্যাচের পরিচ্ছন্ন এ কর্মকর্তা এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ছিলেন। এছাড়াও একই ব্যাচের আরেক কর্মকর্তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষার জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খানের নামও শোনা যাচ্ছে।

এদিকে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের চুক্তির মেয়াদও বাড়তে পারে বলে গুঞ্জন আছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কারণে প্রশাসনের যুগ্ম অতিরিক্ত সচিবদের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে।

অনেক অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তারা জানান, একজন সচিব পদায়ন পান তার মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতার ওপর। সচিব পর্যায়ে চুক্তির মেয়াদ বাড়তে থাকলে আমাদের পদোন্নতির পথ সংকুচিত হয়ে যায়। তারা আরও বলেন, এতে অনেক গুণী কর্মকর্তা অকালেই ঝরে যান।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপসচিব রয়েছেন এক হাজার ৬৩৮ জন, যুগ্ম সচিব ৭১৭ জন এবং অতিরিক্ত সচিব আছেন ৪৩৯ জন। গ্রেড-১ (পদমর্যাদা) পদে আছেন ১৯ জন। সচিবের সংখ্যা ৭৬।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশাসনের শীর্ষ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ ১৩ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সচিবের পদ খালি হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে,  সিনিয়র সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা আছেন ৭৬ জন। তাদের মধ্যে বিসিএস ১৯৮২ নিয়মিত ও স্পেশাল ব্যাচের একজন করে, ১৯৮৪ ব্যাচের পাঁচজন, ১৯৮৫ ব্যাচের দুজন, ১৯৮৬ ব্যাচের ১২ জন, নবম ব্যাচের ১০ জন, দশম ব্যাচের ২৫ জন এবং একাদশ ব্যাচের ২০ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিবসহ ১৩ জনই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কর্মরত।

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা আমার সংবাদকে বলেন, সরকারের একটা সিদ্ধান্ত ছিল আপ টু টেন পার্সেন্ট চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। এটা আছে কি না জানি না। তবে এটা নিয়ম নয়। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকার যদি মনে করে কারো (সচিব) সেবাটা একেবারেই অপরিহার্য, তখন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগটা ব্যতিক্রম বিষয় উল্লেখ করে সাবেক এ মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, স্বাভাবিকভাবে বয়স ৫৯ বছর হলে একজন সরকারি কর্মজীবী অবসরে যাবেন। এ বিষয়গুলো যেন ব্যতিক্রমী থাকে, নিয়মে পরিণত না হয় বলে জানান মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা।

এ বিষয়ে গবেষক ও সাবেক সচিব একেএম আবদুল আউয়াল মজুমদার আমার সংবাদকে বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগটা একেবারেই দেয়া উচিত নয়। যদি চুক্তি নিয়োগ দিতেই হয়, তাহলে উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, রেহমান সোবহান, আকবর আলি খান, ড. সাদাত— এ রকম উচ্চমানের মানুষদের রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বিবেচনা করা যেতে পারে। তাছাড়া সাধারণত এটা উচিত নয়। এতে করে সিস্টেমের ক্ষতি হয় এবং জুনিয়রদের মাঝে হতাশা দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন, যাদের চুক্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়, তারা অপরিহার্য কেউ নন। এটা হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন সাবেক এই সচিব। 

আগামী নির্বাচন ঘিরে সচিবদের মাঝে রদবদল হতে পারে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সদ্য বিদায়ী সরকাররা চেষ্টা করে প্রভাব বিস্তার করার জন্য। সরকার নিজেদের লোকজন দিয়ে ফিল্ড ধরে রাখার চেষ্টা করে। সাবেক এ সচিব আরও বলেন, যদি ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন হয়, তাহলে এরা কাজে লাগবে। আর যদি দৃশ্যপট বদলে যায়, তাহলে এদের আর কাজে লাগবে না। সচিব পদায়নে মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা, সততা এগুলোর মূল্যায়ন হওয়া উচিত। কে আমার লোক, কে আমার লোক নয়— ব্যুরোক্রেসিতে এ ধরনের চর্চা বাদ দিতে হবে।’

Link copied!