ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

পদ্মা ব্যাংক গ্রাহকের কান্না

জাহিদুল ইসলাম

অক্টোবর ১৬, ২০২২, ০১:০৮ এএম

পদ্মা ব্যাংক গ্রাহকের কান্না

গ্রাহকের অনুকূলে অনুমোদন হওয়া ঋণের অর্থ প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়েছেন কর্মকর্তারা। আবার তার বিরুদ্ধেই খেলাপির মামলা করেছে ব্যাংক। স্বাভাবিক কারণে মর্টগেজ রাখা সম্পদও ফেরত পাননি ভুক্তভোগী। উপায়ান্ত না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে মেলে প্রতিকার।

জালিয়াতির সাথে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রায় দেন বিচারক। কিন্তু ঋণ জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পরও গ্রাহকের মর্টগেজ সম্পদ দখলে রেখেছে ব্যাংকটি। দুর্নীতির দায়ে নাম ও পর্ষদ পরিবর্তনে বাধ্য হওয়া সাবেক ফারমার্স (বর্তমান পদ্মা) ব্যাংক নিয়ে সম্প্রতি এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্যবসা সম্প্রসারণে লোন নিতে পূর্বপরিচিত এক ব্যাংক কর্মকর্তার মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের গ্রাহক হন যাত্রাবাড়ীর আসিফ এন্টারপ্রাইজের (প্লাইউড ব্যবসা) স্বত্ব্বাধিকারী সলিম উল্লাহ।

এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচিত ওই কর্মকর্তা তাকে জানান, তিনি চাইলে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা লোন নিতে পারবেন। এমন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ফারমার্স ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখায় লোনের জন্য আবেদন করেন সলিম উল্লাহ। পরবর্তীতে ব্যাংক থেকে তার যাত্রাবাড়ীস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফেনীর সোনাগাজীতে অবস্থিত মর্টগেজ সম্পদ পরিদর্শন করে।

পরিদর্শন শেষে ব্যাংক থেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলে ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সলিম উল্লাহর ঋণ আবেদনটি মঞ্জুর করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর মর্টগেজ রাখা সম্পত্তি ব্যাংকের অনুকূলে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার পাশাপাশি ১০টি খালি ব্যাংক চেকের পাতায় স্বাক্ষর নেয়া হয় সিকিউরিটি হিসেবে।সাধারণত মর্টগেজ রেজিস্ট্রির তিন-চার দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতার ব্যাংক হিসাবে টাকা বিতরণ করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও লোনের টাকা পাননি গ্রাহক সলিম উল্লাহ।

এ বিষয়ে জানতে ফারমার্স ব্যাংকের পূর্বপরিচিত ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্ট লোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লোনটি দিতে আপত্তি তোলা হয়েছে। তাই লোনের অর্থ বিতরণ হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করলে দেখা যায়, সলিম উল্লাহর নামে এক কোটি ৯৮ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর ওই কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন গ্রাহক। একপর্যায়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কিভাবে সিলমোহর ও স্বাক্ষর জাল করে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছেন তা স্বীকার করতে বাধ্য হন তারা।

তবে বিষয়টি আপস মীমাংসা করতে ওই দিনই কিছু টাকা ফেরত দিয়ে বাকি টাকা দ্রুততম সময়ে টাকা জমা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৭৮ লাখ টাকা জমা দেননি প্রতারকরা। ফলে বাধ্য হয়ে একসময় আদালতের শরণাপন্ন হন ওই ঋণগ্রহীতা।

বিষয়টি নিয়ে ওই গ্রাহক দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘প্রথমে ওই ঘটনাটি আমি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চের তৎকালীন ম্যানেজারকে জানালে তিনি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে তিনিও ম্যানেজ হয়ে যান প্রতারকদের কাছে। পরে থানায় মামলা করতে গেলে তারা মামলা নেয়নি। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে গেলে তারাও মামলা নেয়নি।

পরবর্তীতে দায়রা জজ আদালতে গেলে সেখান থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়। এরপর থানা মামলা নেয় এবং রেকর্ড করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠায়। এ ঘটনায় ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৭ গত ৩১ আগস্ট এই মামলার রায় ঘোষণা করে। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ এবং ১০৯ ধারায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। ফলে আসামিদের প্রত্যেককে আত্মসাৎকৃত ৭৮ লাখ টাকা জরিমানাসহ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

তবে ঋণের অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের বিষয়টির সমাধান হলেও সমস্যা রয়েছে অন্যখানে। গ্রাহক সলিম উল্লাহর মর্টগেজ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দিলেও তা ফেরত দেয়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। উপরন্তু সিকিউরিটি বাবদ স্বাক্ষরসহ যে ১০টি খালি ব্যাংক চেকের পাতা জমা দিয়েছে তার মধ্য থেকে একটি চেকের পাতা দিয়ে বরং তার বিরুদ্ধেই খেলাপি মামলা করেছে পদ্মা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।’

এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খানের কাছে জানতে চাওয়া হয়।

তিনি দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘গ্রাহকের সাথে কার কি হয়েছে সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। তিনি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে সময়মতো টাকা দিতে পারেননি। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’ তবে বিস্তারিত জানতে ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা (ডিএমডি) পরিচালক ফয়সাল আহসান চৌধুরীর সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পরবর্তীতে ডিএমডি ফয়সালের সাথে দেখা করতে অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। উপরন্তু ব্যাংকের কর্মচারীদের কাছে আগমনের কারণ নিয়ে বিভিন্ন জেরার মুখে পড়তে হয় এই প্রতিবেদককে। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যকে কৌশল বলছেন গ্রাহকের আইনজীবী সালাউদ্দিন শিমুল।

তিনি দৈনিক আমার সংবাদকে জানান, গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যাংকের মামলা মূলত আক্রোশবশত। কারণ যখন লোনের জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারি, আমরা ব্যাংকের এমডি ও চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের লিগ্যাল নোটিস দিয়েছি। কাজেই ওই ঘটনা ব্যাংক জানে। পরবর্তীতে ঘটনার সত্যতা থাকায় ব্যাংক ওই কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করে। তাহলে ঋণ জালিয়াতির ঘটনা জানার পরও কেন ব্যাংক গ্রাহকের বিরুদ্ধে মামলা করল। এটি মূলত ব্যাংক নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এ ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমে যে বিষয়টি উদঘাটিত হয়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখা হবে।’

Link copied!