ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
স্বপ্নের মেট্রোরেল

বিজয়ের মাসেই বাণিজ্যিক যাত্রা

মো. মাসুম বিল্লাহ

ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ১২:৫১ এএম

বিজয়ের মাসেই বাণিজ্যিক যাত্রা

দেশের গণপরিবহনে প্রথমবারের মতো যুক্ত হতে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক ট্রেন। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই যাত্রী নিয়ে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করবে স্বপ্নের মেট্রোরেল। যদিও বিজয় দিবসের দিনই উদ্বোধনের কথা ছিল কিন্তু সেটি এখন পিছিয়ে গেছে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্র অনুযায়ী, ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার মেট্রোরেলের উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার চালু হবে প্রথম ধাপে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম ৯টি স্টেশনের এই যাত্রায় এরই মধ্যে প্রতিটি স্টেশনের কাজ প্রায় শেষ।

তবে শ্যাওড়াপাড়া স্টেশনে কিছু সমস্যার কারণে সেখানকার কাজে গতি কম থাকলে এখন তা অনেকটা এগিয়েছে। কাজিপাড়া স্টেশনের কাজেও জটিলতা কেটে গেছে। বাকিগুলোর কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে ভেতরের কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম তিনটি স্টেশনের সাইনেস বাদে সব কাজ শেষ। বসেছে টিকিট বুথও। এদিকে যে ১০টি ট্রেন দিয়ে যাত্রা শুরু করা হচ্ছে সে পথের সমন্বিত ট্রায়াল রানও শেষ।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, ডিসেম্বরের শেষ দিকে মেট্রোরেল উদ্বোধনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। উদ্বোধনের পর দিন থেকেই মেট্রো ট্রেন যাত্রী পরিবহন করবে। তবে প্রথমদিকে প্রতিটি ট্রেনের সক্ষমতার চেয়ে কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলবে, পরে ধীরে ধীরে তা বাড়ানো হবে।

তিনি আরও জানান, শ্যাওড়াপাড়া ও কাজিপাড়া স্টেশনে যে জটিলতা দেখা দিয়েছিল তা মিটে গেছে। উদ্বোধনের আগেই বাকি কাজও শেষ করা যাবে।

সূত্র মতে, মেট্রোরেল ব্যবস্থাপনার জন্য থাকবে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ডিসেম্বরের মধ্যেই মেট্রো পুলিশ এবং এক বছরের জন্য পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এক হাজার কোটি টাকা চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেল চালুর আগেই সাড়ে তিনশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানান, পুলিশ ফোর্সের প্রস্তাবটা কেবিনেট কমিটি অন অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ অ্যাফেয়ার্স সেখানে দাখিল করা আছে। এখন সিদ্ধান্তের অপেক্ষা। প্রথম মেট্রো চালাতে হলে একটা সিড মানির প্রয়োজন হয়। যেহেতু আমরা এখন আয় করছি না। পরিচালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও অপচয় এই তিন ব্যয়ের জন্য এক হাজার কোটি টাকা দরকার হবে। সেটার জন্য অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় মেট্রোরেলে চলাচলের ভাড়াও প্রাথমিকভাবে ঠিক করেছে।

প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে চলাচল করলে ভাড়া বাবদ একজন যাত্রীকে গুণতে হবে ৯০ টাকা। মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ২০ টাকা অর্থাৎ এক স্টেশন পর নেমে গেলেও ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে সর্বোচ্চ দুই স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে। এরপর প্রতি স্টেশনে যেতে ১০ টাকা যোগ হবে।

জানা গেছে, ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি প্রাথমিক এ ভাড়ার হার ঠিক করেছে। সর্বশেষ গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রস্তাবিত ভাড়ার হার চূড়ান্ত হয়।

কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুৎ খরচ, জনবলের বেতন-ভাতা এবং কোচ ও অন্যান্য স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কথা বিবেচনা করেই এটা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া মানুষের ক্রয়-ক্ষমতাসহ সার্বিক বিষয় চিন্তা করে এটা করা হচ্ছে। সামগ্রিক বিষয় মিলিয়ে এটা করা হয়েছে। একটা সাধারণ বাসে অনেক টাকা ভাড়া লাগে। মানুষের সামর্থ্য, পরিচালন ব্যয় ও আর্থিক সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করেই এ ভাড়া ঠিক করা হয়েছে।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা যায়, ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে মোটাদাগে তিনটি বড় ব্যয়ের খাত বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে বিদ্যুৎ খরচ, জনবলের বেতন-ভাতা এবং কোচ ও অন্যান্য স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ।

প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে। একটা স্থায়ী কার্ড আর অন্যটি সাময়িক। স্থায়ী কার্ড রিচার্জ করে পুরো বছর বা মাসে যাতায়াত করা যাবে। এ কার্ড কিনতে ২০০ টাকা দিতে হবে। এরপর ২০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে। অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে কার্ড রিচার্জ করা যাবে।

অন্যদিকে, স্মার্ট কার্ডের অনুরূপ সাময়িক কার্ড দেয়া হবে প্রতি যাত্রায়ই। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এ কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। ভাড়ার অতিরিক্ত যাতায়াত করলে ওই কার্ড দিয়ে দরজা খুলতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করেই বের হতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিনেও কার্ড রিচার্জ করা যাবে। প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় যাত্রীদের কার্ড পাঞ্চ করতে হবে। নতুবা দরজা খুলবে না।

এরপর নেমে যাওয়ার সময় আবার কার্ড পাঞ্চ করতে হবে। নতুবা যাত্রী বের হতে পারবেন না। লিফট, এস্কেলেটর ও সিঁড়ি দিয়ে মেট্রোরেলের স্টেশনে ওঠা যাবে। তিনতলা স্টেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় কনকোর্স হল। এখানে টিকিট কাটার ব্যবস্থা, অফিস ও নানা যন্ত্রপাতি থাকবে। তিনতলায় রেললাইন ও প্ল্যাটফর্ম। একমাত্র টিকিটধারীরাই ওই তলায় যেতে পারবেন। দুর্ঘটনা এড়াতে রেললাইনের পাশে বেড়া থাকবে। স্টেশনে ট্রেন থামার পর বেড়া ও ট্রেনের দরজা একসঙ্গে খুলে যাবে। আবার নির্দিষ্ট সময় পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যাত্রীসহ চলাচল শুরু হলে মেট্রোরেল ভোর থেকে দুদিক থেকে যাত্রা করবে। প্রাথমিকভাবে রাত সাড়ে ১১টায় সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে। শুরুতে দৈনিক চার লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। একটি ট্রেনের কোচ থাকবে ছয়টি। সাড়ে ৯ ফুট চওড়া প্রতিটি কোচের মধ্যে দুই প্রান্তের দুটি কোচ অর্থাৎ ট্রেইলর কারে চালক থাকবেন। এসব কোচে ৪৮ জনের জনের বসার ব্যবস্থা আছে। মাঝখানের চারটি কোচে (মোটরকার) ৫৪ জন যাত্রী বসতে পারবেন। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে ৩০৬ জন বসে যেতে পারবেন। মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করবেন। মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সমপ্রসারণ, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধি, বাড়তি জমি অধিগ্রহণসহ কিছু নতুন বিষয় যোগ হওয়ায় আরও প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে।

উল্লেখ্য, দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে কিছুদিন আগে উদ্বোধন করা হয়েছে পদ্মা সেতু। এবার রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও যানজটমুক্ত করতে চালু হতে যাচ্ছে মেট্রোরেল। বর্তমান সরকার ২০১২ সালে ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত করার কথা থাকলেও পরে তা সংশোধন করে কমলাপুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। যা পরের ধাপে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পের একটি ছিল মেট্রোরেল।

Link copied!