ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

উচ্ছ্বাসে অভিজ্ঞতার স্বাদ

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

ডিসেম্বর ৩০, ২০২২, ০৪:০৫ এএম

উচ্ছ্বাসে অভিজ্ঞতার স্বাদ
  • যাত্রীসেবায় তৎপর রোভার স্কাউট
  • শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াত
  • ১২ মিনিটের যাত্রায় অপেক্ষা দুই ঘণ্টা!
  • ভেন্ডিং মেশিনে ছিল না খুচরা, ভোগান্তি

লম্বা লাইনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা। নেই কোনো বিরক্তি। মেট্রোরেলে চড়ার ইতিহাস হতে চলেছেন তারা। কেউ এসেছেন প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বরিশাল থেকে, কেউ বা খুলনা থেকে। শীতকে উপেক্ষা করে মোটা চাদরে শরীর মুড়িয়ে উপস্থিত। সেই সাথে অপেক্ষায় স্থানীয় মানুষও। সবারই উদ্দেশ্য— মেট্রোর প্রথম যাত্রার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখা। তুলেছেন স্বজন-বন্ধুদের সাথে সেলফি। আর সেই আবদার মেটাতে গিয়েই বিগড়ে গেল টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। টিকিট কাটতে না পেরে হতাশ অনেকে।

তবে দিনভর আনন্দ-উচ্ছ্বাসের প্রথম দিনে অভিজ্ঞতায় আহ্লাদিত প্রায় তিন লাখ মানুষ। এমনকি মেট্রোরেলে উঠতে পেরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় ট্রেনে চড়তে পারেননি হাজারো যাত্রী, হতাশ হয়ে ফিরেছেন অনেকে, পরেরবার উঠার প্রত্যাশা কারো কারো। উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে সকাল ৮টায় যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেন আগারগাঁওয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আর আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ির উদ্দেশে প্রথম ট্রেনটি ছাড়ে সকাল সোয়া ৮টায়।

এদিকে টিকিট কাটা নিয়ে ছিল সাময়িক বিড়ম্বনা। ভেন্ডিং মেশিনে খুচরা টাকা না রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছিলেন যাত্রীরা। কেউ কার্ড হারিয়ে গুনেছেন জরিমানাও। যাত্রীদের অভিযোগ, মেট্রো স্টেশনে যাত্রীদের প্রবেশ করাতে ধীরগতিতে কাজ করেছে কর্তৃপক্ষ। আর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, যাত্রীদের পুরো ব্যবস্থার সাথে অভ্যস্ত করাতে কিছুটা ধীরে কাজ করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর কেটেছে মেট্রোরেলের প্রথম দিন— এমনটাই জানিয়েছেন সবাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এমআরটি লাইন-৬ বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে। মেট্রো স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, দেশের প্রথম বাণিজ্যিক মেট্রোরেলে চড়তে খুব ভোরেই লাইনে দাঁড়ায় সাধারণ মানুষ। ৮টা বাজার আগেই অপেক্ষমাণ যাত্রীদের লাইন দীর্ঘ হতে থাকে। বেলা পৌনে ১২টায় পাসপোর্ট অফিস ছাড়িয়ে যায়। এদিকে ৮টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও ৩০ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে যায় প্রথম ট্রেনটি। নিয়ম অনুযায়ী আপাতত ট্রেন চলবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। গতকাল সময় যত গড়াচ্ছিল, লাইনে থাকা মানুষদের ট্রেনে চড়ার সুযোগ ততটাই ক্ষীণ হয়ে আসছিল। ফলে হাজার হাজার যাত্রী উঠতে পারেননি ট্রেনে।

তবে পরেরবার ট্রেনে উঠবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করে বাড়ি ফিরে যান অনেকে। তবে দীর্ঘসময় পর স্বপ্নের মেট্রোরেলে ওঠার সুযোগ পেয়েই মুহূর্তে স্মৃতিকে ক্যামেরাবন্দি করে রাখছেন সবাই। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন অনেকে।

আর স্বপ্নের মেট্রোরেলে চড়েছেন বাংলাদেশ হুইলচেয়ার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মহসিন। তিনিও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, একটি অন্যরকম অভিজ্ঞতা নিলাম। আমাদের মতো প্রতিবন্ধী মানুষদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। কিন্তু মেট্রোরেলে স্বাচ্ছন্দ্যেই ভ্রমণ করলাম। সব কিছু মিলিয়ে ভালো একটি দিন কাটল।

এদিকে প্রথম দিনই যাত্রীদের টিকিট কাটা নিয়ে দেখা দিয়েছিল সাময়িক বিড়ম্বনা। আগারগাঁও থেকে উত্তরা যাওয়ার জন্য মেট্রোরেলের সময়ের প্রয়োজন হয় ১২ মিনিটের কিছুটা কমবেশি। কিন্তু মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতা নিতে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে দুই ঘণ্টারও বেশি সময়। টিকিট বিক্রয় মেশিন বা ভেন্ডিং মেশিনে খুচরা টাকা না রাখায় ৫০০ বা হাজার টাকার নোট দিয়ে টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন যাত্রীরা। এ বিষয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভেন্ডিং মেশিনে কোনো সমস্যা নেই।

তবে যাত্রীরা বড় নোট দিলে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়ার জন্য মেশিনের ভেতর খুচরা টাকা রাখা ছিল না। এ কারণেই প্রথম দিন কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী দিন থেকে এ সমস্যা আর থাকবে না। এ ছাড়া কার্ড হারিয়ে ১০০ টাকা জরিমানা গুনেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন নোমান। তিনি মেট্রোরেলের উত্তরা স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশনে আসার সময় স্টেশন থেকে কেনা কার্ডটি হারিয়ে ফেলেন। এ কারণে তাকে ৬০ টাকার টিকিটের জন্য ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

তিনি বলেন, ট্রেন থেকে নামার সময় দেখি আমার টিকিটটি নেই। হঠাৎ কার্ডটি হারিয়ে ফেলেছি। এ জন্য স্টেশন কর্তৃপক্ষ আমার কাছ থেকে জরিমানা নিয়েছে ১০০ টাকা। তবে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মেট্রো স্টেশনে স্বেচ্ছাসেবীর দায়িত্বপালন করেছেন স্কাউটের সদস্যরাও।

ট্রেনে উঠতে না পারা কয়েকজন জানান, ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমাদের কেউ কেউ উঠতে পেরেছেন, আবার কেউ কেউ পারেননি। তবে পরেরবার উঠব। মেট্রোরেলে উঠতে পেরে আনন্দ উল্লাস করছেন রাজু ও তার বন্ধুরা। তারা বলেন, আমরা ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। জানতাম অনেক ভিড় হবে, তাই আগে ভাগেই চলে যায়। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর এ বৈদ্যুতিক ট্রেনে উঠতে খুবই ভালো লাগছে। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ।

মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহেশ চন্দ্র সিংহ গণমাধ্যমকে বলেন, মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলাচল করবে। তাই ভোর থেকেই যাত্রীরা লাইন ধরে। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেকে উঠতে পারেননি, তবে শুক্রবার তারা উঠবেন। দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক রেলের প্রথম দিন ছিল সত্যিই উৎসবমুখর।

আয় প্রায় তিন লাখ, যাত্রী তিন হাজার ৭০০ জন : সাধারণ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হওয়ার প্রথম দিনে তিন হাজার ৭৫৬ জন যাত্রী এতে ভ্রমণ করেছেন। এতে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৮৬০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়। দিয়াবাড়ি থেকে সকাল ৮টায় যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেন আগারগাঁওয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আর আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ির উদ্দেশে প্রথম ট্রেনটি ছাড়ে সকাল সোয়া ৮টায়। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে এই রুটে মেট্রোরেল সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলছে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ডেপুটি সেক্রেটারি (জনসংযোগ) নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, যাত্রী নিয়ে চলাচল করার প্রথম দিনে মেট্রোরেলে সিঙ্গেল জার্নি ও এমআরটি পাস নিয়ে ভ্রমণ করেছেন তিন হাজার ৮৫৫ জন। এর মধ্যে তিন হাজার ৭৫৬ জন সিঙ্গেল জার্নির টিকিট কিনেছেন। এ থেকে আয় হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩৬০ টাকা। আর এমআরটি পাস কেনেন ৯৯ জন, যেখান থেকে আয় হয়েছে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের আয় হয়েছে দুই লাখ ৭৪ হাজার ৮৬০ টাকা। তিনি জানান, প্রথম দিন র্যাপিড পাস নিয়েও দুজন ভ্রমণ করেছেন। তবে কারিগরি কারণে সেই দুজনের ভ্রমণের টাকা এখনো ডিএমটিসিএলের হিসাবে যুক্ত হয়নি।

Link copied!