ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

শীতের পিঠায় সংসারের হাল

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

জানুয়ারি ৪, ২০২৩, ০২:১৭ পিএম

শীতের পিঠায় সংসারের হাল
  • দৈনিক আয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা
  • জমে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার ব্যবসা  

শীত মানেই বাহারি রকমের পিঠা। গরম ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা। শীত এলেই বাড়ে মুখরোচক এসব পিঠার চাহিদা। ফলে শহরের অলিগলি কিংবা ফুটপাতে জমে উঠেছে শীতের ভ্রাম্যমাণ পিঠার জমজমাট ব্যবসা। বিকাল থেকেই শুরু হয় পিঠা বানানো, সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চলে বিক্রি। দৈনিক বিক্রি তিন-চার হাজার টাকা, এতে আয় প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এসব মুখরোচক পিঠা বিক্রি করে সংসারের হাল ধরছেন ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা। শীতে থাকে না অভাব, যেন সুখ নিয়ে আসে শহুরের নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে।

সায়দাবাদ-দয়াগঞ্জ মোড়, শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ, মৌচাক, নর্দ্দা-কালাচাঁদপুর, রামপুরাসহ রাজধানীর প্রায় সব এলাকায়ই বসেছে ভ্রাম্যমাণ পিঠা দোকান। শীত এলেই এসব দোকান বসান নিম্ন আয়ের শহুরে মানুষ। এদের বেশিরভাগই নারী। দিনের বেলায় তাদের কেউ কেউ কাজ করছেন বাসা-বাড়িতে, কেউ আবার শুধু পিঠা বিক্রির আয়েই সংসার চালাচ্ছেন। শীত এলে যেন একটু বাড়তি আয়ের সুযোগ মেলে তাদের। এছাড়াও রাজধানীর কোথাও কোথাও সারাবছরই বসে পিঠার দোকান। 

সরেজমিন দেখা যায়, শীতে রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় বিকেল থেকেই শুরু হয় পিঠা বিক্রির আয়োজন। মাটির চুলায় লাকড়ির আগুনে পিঠা বানানো হয় সুস্বাধু পিঠা। দুই-তিনটি চুলা বসিয়ে ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা বানায় দোকানিরা। তেলের পিঠাসহ অন্যান্য পিঠা বাসা থেকে বানিয়ে দোকানে সাজিয়ে রাখেন তারা। পিঠার স্বাদ নিতে সন্ধ্যার পর থেকেই ভিড় জমায় বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বেচা-বিক্রি চলে রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। ১০ টাকা শুরু করে ৩০ টাকা দামের চিতই পিঠা পাওয়া যায় এসব দোকানে। 

আগে পাঁচ টাকায় চিতই পিঠা মিললেও দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে এখন আর এ দামে পাওয়া যায় না। পাশাপাশি অন্যান্য পিঠাও মেলে এসব দোকানে। তবে ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা সব দোকানে সহসাই পাওয়া যায়। তবে এলাকাভেদে বাহারি রকমের পিঠা পাওয়া যায়। চিতই পিঠার সাথে চার-পাঁচ রকমের ভর্তার স্বাদ নিতে পারেন পিঠাপ্রেমিরা। যেন শীত এলেই শহরে বসে পিঠার মহা আয়োজন। 

নর্দ্দা ফুটওভার ব্রিজের নিচে বসে চিতই পিঠা বানাচ্ছেন তাসলিমা বেগম। তিনি বলেন, শীতের মৌসুমে চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা বিক্রি করি। শীত চলে গেলে একই জায়গায় বসে পান-সিগারেট বিক্রি করেন তিনি। তবে পিঠা বিক্রিতে লাভ বেশি বলে জানান এ সংগ্রামী নারী। 

তিনি আরও বলেন, স্বামী আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন, দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, আর ছেলে এখনো ছোট। পিঠা বিক্রি করে কোনোদিন আয় হয় ৫০০ টাকা, আবার কোনোদিন ৭০০ টাকা। কুড়িল বিশ্বরোডে পিঠা বিক্রেতা শিল্পী বেগমও একই কথা জানান।

রামপুরা বনশ্রী এলাকায় পিঠা বিক্রি করেন হাফসা বানু। তিনি বলেন, অর্ডারের ওপর ভিত্তি করে কোনোদিন ১০ কেজি বা তার বেশি চালের গুঁড়া গোলানো হয়। সেদিন ১০ কেজিতে প্রায় ২০০টি পিঠা বানানো যায়। অর্ডার না থাকলে পরিমাণমতো চালের গুঁড়া গোলানো হয়। তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী একজন ভ্রাম্যমাণ হকার। সংসারের জন্য একটু বাড়তি আয় করতেই শীতে পিঠা বিক্রি করেন তিনি। স্বামীর আয়ে কোনোমতে দিন চলে, তাই শীত এলে এ বাড়তি আয় করার সুযোগ পান তিনি। এছাড়া অন্য সময় দিনের বেলায় বাসা-বাড়িতে কাজ করেন তিনি।

পিঠা খেতে আসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের একজন মিনহাজুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করি, থাকি কুড়িল বিশ্বরোডের কাজী বাড়ি এলাকায়। শীতে বাড়িতে যেতে পারিনি। তাই পিঠা খেতে প্রতিদিনই ফুটপাতে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকানে চলে আসি। এসব দোকানে নানা রকম ভর্তা মেলে। একই কথা জানান তার সাথে থাকা সহপাঠীরা।

বনশ্রী এলাকায় বেসরকারি চাকরিজীবী রিয়াদুর রহমান ও তামিমা রহমান। তারা বলেন, আমরা দুজনই চাকরি করি। দুধ চিতই খাওয়ার জন্য আগে থেকেই ৫০টি চিতই পিঠার অর্ডার দেয়া ছিল, সেগুলো নিতে এসেছি। এছাড়াও সময়ের অভাবে বাসায় বানানো সম্ভব না, তাই নানা রকম পিঠা খেতে বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে বের হই।

Link copied!