ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
ছয় মাসে বিদেশে গেছেন ৫২ হাজার নতুন কর্মী

রেমিট্যান্স যাচ্ছে কোথায়!

রেদওয়ানুল হক

রেদওয়ানুল হক

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ১২:৩১ এএম

রেমিট্যান্স যাচ্ছে কোথায়!
  • জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় ২১ হাজার কোটি টাকা
  • ডিসেম্বরের তুলনায় বেশি দুই হাজার ৭০০ কোটি
  • জুলাইয়ের তুলনায় কম এক হাজার ৪০০ কোটি

চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম দুই মাসে দেশে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসে। এরপর থেকে প্রবাসী আয়ে ধস নামে। টানা চার মাস নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকলেও জানুয়ারি মাসে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে প্রবাসী আয়। নতুন বছরের প্রথম মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে আসায় উচ্ছ্বসিত সংশ্লিষ্টরা।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জানুয়ারিতে আগের মাসগুলোর তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স এলেও তা অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ের চেয়ে কম। অথচ গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) অর্ধলক্ষাধিক জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। সে বিবেচনায় জানুয়ারিতে সোয়া দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স আসার কথা। কিন্তু যে পরিমাণে কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন সে অনুযায়ী প্রবাসী আয় দেশে আসছে না। বিপুল এ অর্থ অবৈধ চ্যানেলে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

গতকাল বুধবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুসারে বছরের শুরুতে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। চলতি বছরের (২০২৩ সাল) জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। 

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জানুয়ারিতে ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার বা দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। ডিসেম্বরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, গত জুনে বিপুল জনশক্তি রপ্তানি হয়েছিল। ওই মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়া কর্মীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ১১ হাজার ৫৩৯ জন। যা আগের মাসের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি। ফলশ্রুতিতে চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাস জুলাইয়ে ২০১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। এটি আগের মাস জুনের তুলনায় প্রায় ২৬ কোটি ডলার বেশি। এরপর জনশক্তি রপ্তানির ধারা অব্যাহত থাকলেও প্রবাসী আয়ে ধস নামে। অবৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স চলে যাওয়ায় জনশক্তি রপ্তানির সাথে তাল মিলিয়ে দেশে প্রবাসী আয় আসছে না বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা। 

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত বছর (২০২২ সালে) ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন কর্মী বিদেশে গিয়েছেন। গত ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) গিয়েছেন পাঁচ লাখ ২০ হাজার ৩৫৫ জন। করোনার কারণে ২০২১ সালে অনেক কর্মী পাঠানো বন্ধ ছিল। বিপরীতে বিপুল সংখ্যক কর্মী দেশে ফিরে আসে। কিন্তু গতবছর আবার বিদেশে যাওয়া শুরু হয়। 

তথ্যমতে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যাওয়া কর্মীদের বড় একটি অংশ গেছে ইউরোপ- আমোরিকায়। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া ও কুয়েতসহ কয়েকটি দেশ যাদের মুদ্রার মান বেশি এমন কয়েকটি দেশেও দীর্ঘদিন পর জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। এসব দেশ থেকে সৌদি আরব মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর তুলনায় বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স আসার কথা। কিন্তু আশানুরূপ রেমিট্যান্স আসছে না। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, একমাসে রেমিট্যান্স কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় তৃপ্তির ঢেকুর তোলার কিছু নেই। বরং জনশক্তি রপ্তানির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে বৈধপথে রেমিট্যান্স আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত) ৭ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ২৪৫ কোটি ২১ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ১৯৪ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। 

আলোচ্য সময়ে ৫০ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। জানুয়ারিতে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে চার কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৫ কোটি ৩৬ লাখ। ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭০ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। 

অন্যান্য সময়ের মতো এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। জানুয়ারিতে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এরপরই রয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ১২ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। 

এছাড়া আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ৭১ লাখ ডলার, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৪২ লাখ ডলার, পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, এনসিসি ব্যাংকের মাধ্যমে সাত কোটি ৫১ লাখ ডলার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে সাত কোটি ২৫ লাখ ডলার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ছয় কোটি ৭৫ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ছয় কোটি ৬২ লাখ ডলার, প্রিমিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে ছয় কোটি ২২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। 

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থপাচার ও কালো টাকা না কমলে বৈধপথে রেমিট্যান্সও বাড়বে না। বিভিন্ন মহলের এমন বার্তার পর হুন্ডি প্রতিরোধে নতুন কৌশল নিয়েছে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ। 

সম্প্রতি হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত রেমিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে বিএফআইইউ। বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেয়া হবে। 

এ ছাড়া রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। বর্তমানে ১০৭ টাকায় রেমিট্যান্স ও ১০০ টাকায় রপ্তানি বিলের মাধ্যমে আসা ডলার সংগ্রহ করছে ব্যাংক। এর সাথে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। 

সবশেষ চার্জ মওকুফ ও ছুটির দিনে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ দেয়ার পর থেকে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

Link copied!