ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

প্রজ্ঞাপন ছাড়াই বেড়েছে ভোক্তা ঋণের সুদহার

রেদওয়ানুল হক

ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ১২:২১ এএম

প্রজ্ঞাপন ছাড়াই বেড়েছে ভোক্তা ঋণের সুদহার
  • মুদ্রানীতিতে ঘোষণা হলেও প্রজ্ঞাপন দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক
  • দাপ্তরিক ঘোষণা থাকা উচিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে সর্বোচ্চ সুদহার আরোপ করা হয়েছে ভোক্তা ঋণে সেটি ৩ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির অনুমতি দেয়া হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন মুদ্রানীতি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংক এখন চাইলে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ভোক্তা ঋণ দিতে পারবে। এতদিন এ ক্ষেত্রে সুদের সর্বোচ্চ হার ছিল ৯ শতাংশ। তবে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ মুদ্রানীতিতে ঘোষণা হলেও এ সংক্রান্ত কোনো সার্কুলার জারি করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও নীতি সুদহার বাড়ানোর পরপরই সার্কুলার জারি হয়েছিল। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, শিগগিরই এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা দরকার। এটি নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ এর আগেই কিছু ব্যাংক মৌখিক অনুমতি নিয়ে ভোক্তা ঋণে সুদ বৃদ্ধি করেছিল। তখন এটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল। যেহেতু সার্কুলার জারি হয়নি তাই এখনো এটি মৌখিক অনুমতির পর্যায়েই রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। যদিও মুদ্রানীতিতে ঘোষণা হয়েছে। তবুও দাপ্তরিকভাবে পরিপত্র প্রয়োজন। যেটি নীতি সুদহারের ক্ষেত্রে করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যেও এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। 

কেউ বলছেন, তারা সার্কুলারের জন্য অপেক্ষা করছেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন মুদ্রানীতিতে ঘোষণার পর এটি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই। তবে একটি সার্কুলার হলে এটি দাপ্তরিকভাবে প্রশ্নাতীত হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি নিয়ে কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে কথা হয় আমার সংবাদের। 

সোনালী ব্যাংকের এমডি মো. আফজাল করিম বলেন, মুদ্রানীতিতে ঘোষণার পর আর নতুন করে সার্কুলারের দরকার নেই। ব্যাংকগুলো চাইলে এখন নির্দ্বিধায় এটি কার্যকর করতে পারে। তবে সোনালী ব্যাংক এখনো এটি কার্যকর করেনি। শিগগিরই ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে নতুন সুদহার বাস্তবায়ন করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণার পরও অনেক ব্যাংক এটি করেনি। এর অর্থ ব্যাংকগুলোর হাতে প্রয়োজনীয় তারল্য রয়েছে। ব্যাংক খাতে তারল্য কমে যাওয়ার যে প্রচারণা আছে এ ক্ষেত্রে সেটি বুঝা যাচ্ছে না। একই মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। 

তিনি বলেন, সার্কুলার না হলেও ১২ শতাংশ সুদহার আরোপে বাধা নেই। তার ব্যাংক এখনো এটি বাস্তবায়ন করেনি, তবে শিগগিরই করবে। নতুন সুদহার কার্যকরে সার্কুলারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন বেসরকারি সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন। তিনি বলেন, যদিও মুদ্রা নীতিতে ঘোষণার পর এটি কার্যকরে তেমন বাধা নেই তবুও আমরা সার্কুলারের অপেক্ষা করছি। দাপ্তরিক পরিপত্র হলে ভালো হয় বলে মনে করেন এ ব্যাংকার। 

ব্যাংক এশিয়ার এমডি আরিফ বিল্লাহ আদিল চৌধুরী বলেন, এটি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সার্কুলার জারির প্রয়োজনীয়তা কতটুকু বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট নয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক এ বিষয়ে বলেন, মুদ্রানীতিতে বিষয়টি স্পষ্ট করার পর ব্যাংকগুলোর জন্য এটি বাস্তবায়নে কোনো বাধা নেই। তবে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি হবে কি-না সেটি পরে জানানো হবে। দেশে চলমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিনিয়োগে আরোপিত সুদহার তুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে সুদহার তুলে দেয়ার এখনো সময় আসেনি। সুবিধাজনক সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে গত ১৫ জানুয়ারি ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার তুলে না দিয়ে ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। আর আমানতের আরোপিত ৬ শতাংশ সুদহার তুলে নিয়ে এটি ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। 

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোক্তা ঋণের সুদহার বাড়ানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। এই সিদ্ধান্তে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়বে। সুবিধা ভোগ করবে বড় গ্রাহক। 

তারা বলছেন, ব্যাংক খাতের সব ঋণের সুদহার বাড়ানো হলেও এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন। এটি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন এবং সরবরাহ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, বর্তমানে ব্যাংক খাতের মোট ঋণ ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভোক্তা ঋণ রয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাত্র ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোক্তা ঋণের সুদহার বাড়িয়ে শতভাগের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ১২ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা ভোক্তা ঋণের ৪৮১ কোটি টাকার মধ্যে চিকিৎসাঋণ দেয়া হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। ফ্ল্যাট কিনতে ঋণ দেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ব্যক্তিগত গাড়ি কিনতে ঋণ দেয়া হয়েছে তিন হাজার ২২৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ। টিভি-ফ্রিজসহ বিলাসী পণ্য কিনতে ৩০ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে, যা মোট ঋণের ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সাত হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। 

শিক্ষাঋণ দেয়া হয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এ ছাড়া চিকিৎসা ঋণ ৮০ কোটি, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। বিবাহঋণ ৫৪ কোটি, ভ্রমণঋণ ১১ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে; যা মোট ঋণের তুলনায় অতি নগণ্য। এ ছাড়াও জমি কিনতে তিন হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। বেতনের বিপরীতে ঋণ দেয়া হয়েছে ১৭ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১ দশমিক ২৯ শতাংশ। প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিপরীতে ঋণ এক হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ। 

ডিপিএস, এমএসএস ইত্যাদির বিপরীতে ঋণ দেয়া হয়েছে ছয় হাজার ২৩৯ কোটি টাকা, যা শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ। এফডিআরসহ স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ঋণ ২০ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে, যা মোট ঋণের ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যান্য ক্ষুদ্র ভোক্তা ঋণ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ।
 

Link copied!