ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
নাটের গুরু কালীকান্ত ঘোষ

রেলওয়ে ক্যাটারিং সেলের রাজস্ব ফাঁকির যত ফন্দি

মামুনুর রশিদ চট্টগ্রাম ব্যুরো

মামুনুর রশিদ চট্টগ্রাম ব্যুরো

ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ০১:১৪ এএম

রেলওয়ে ক্যাটারিং সেলের রাজস্ব ফাঁকির যত ফন্দি

বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যাটারিং সেল সরকারকে রাজস্ব যথাযথ না দিতে যত ফন্দি আছে সব করে যাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রেলের সাবেক উপপরিচালক (মার্কেটিং) কালীকান্ত ঘোষের নেতৃত্বে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সরকারকে রাজস্ব না দেয়ার অংক ভাগবাটোয়ারা করে শান্তিতে হজম করে যাচ্ছেন। সরকারের পক্ষে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সোনার বাংলা বনলতা পঞ্চগড় কুড়িগ্রাম ও বেনাপোল এক্সপ্রেস এই পাঁচটি ট্রেনে যাত্রীদের খাবার বিক্রি করে উপার্জিত অর্থ সরকার পাবে। সরকার পাচ্ছেও বটে। 

তবে সরকার কী পাচ্ছে দেখুন, সোনার বাংলা থেকে চার লাখ, বনলতা থেকে তিন লাখ, পঞ্চগড় থেকে দুই লাখ, কুড়িগ্রাম থেকে দুই লাখ ও বেনাপোল এক্সপ্রেস থেকে দুই লাখ— এই পাঁচটি ট্রেন থেকে মাসে ১৩ লাখ টাকা যা বছরে এক কোটি ৫৬ লাখ টাকা আয় হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

এই কোটি ৫৬ লাখ টাকার মধ্যে সরকার পাচ্ছে মাত্র ১০ লাখ টাকা। হয়তো এর এদিক-ওদিক হতে পারে। কালীকান্ত ঘোষ ও রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কলমের খোঁচায় হিসাব নয়কে ছয় করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন। বাকি প্রায় এক কোটি ৪৬ লাখ টাকার মধ্যে। ডিজিডি এন মজুমদারকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন মিয়া জাহানকে তিন থেকে চার লাখ টাকা দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া একাধিক কর্মকর্তা কালীকান্ত ঘোষ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ার পর অবশিষ্ট অর্থ কালীকান্ত ঘোষ ভোগ করেন।

আরো মজার সংবাদ হচ্ছে, ক্যাটারিং সেল করতে হলে খাবার তৈরির নিজস্ব ব্যবস্থাপনা মানসম্পন্ন খাবার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই থাকতে হবে। যেমনটি বিমানে আছে। এখন তারা বাইরে থেকে কম দামে নিম্নমানের খাবার ক্রয় করে চড়া দামে বিক্রি করে থাকেন। 

রমজান মাস ছাড়া বাকি সময়ে ট্রেনে ভাত-বিরানি বিক্রি করার নিয়ম না থাকলেও তা করে থাকেন। খাবার নিয়ে অহরহ যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। সুতরাং নিজস্ব ব্যবস্থাপনা যখন নেই এবং মানসম্পন্ন খাবার যখন দিতে পারছেন না তাহলে এটি উল্লেখ করে ক্যাটারিং টেন্ডার দেয়া উচিত এবং দিতে হবে বলে মনে করেন বোদ্ধারা। এতে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ক্যাটারিং সেল নিয়ে যখন বিভিন্ন স্থানে সমালোচনা হচ্ছে তখন কালীকান্ত ঘোষসহ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণকারীরা একসাথে মিলেমিশে ফন্দি করছেন কোম্পানি গঠনের জন্য- যাতে টেন্ডারের আওতায় না আসে। এতে ট্রেনে ১০ টাকা বিক্রি হলে এক টাকা দেখানো সম্ভব হবে। আর এই কোম্পানির চেয়ারম্যান হবেন কালীকান্ত ঘোষ বলে জানা গেছে। 

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একসময় অভিযোগে গিয়েছিল। ফের কালীকান্ত ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে তদন্ত করলে থলের বিড়াল। বেরিয়ে আসবে। অভিযোগের সত্যতা জানতে কথা হয়েছে, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনের ম্যানেজারের কাছ থেকে জানতে চাই, তাদের কাছ থেকে টাকা কালীকান্ত ঘোষ নিয়ে যায় কি-না, প্রথমে স্বীকার করলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এড়িয়ে যান। 

একইভাবে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের ম্যানেজার জনি ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের ম্যানেজার ইমন কালীকান্ত ঘোষের কথা স্বীকার করে পরবর্তীতে অস্বীকার করেন। 

তারা বলেন, নিজস্ব ব্যবস্থাপনা কারো আছে কারো নেই। তাদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে যাতে কোনো গণমাধ্যম তথ্য জানতে চাইলে না দেয়। তারাসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একাধিক জনের সাথে কথা হলে তারাও অস্বীকার করেন এবং ট্যুরিজম সেল ও মার্কেটিং বিভাগের মাধ্যমে রেলওয়ে ক্যাটারিং সেল পরিচালিত হয় বলে জানান। ডিডি মার্কেটিংয়ের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। 

এর জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ডিডি মার্কেটিংয়ের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কালীকান্ত ঘোষের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য এবং তিনি অনেক কিছু জানেন বা জানেন না। তবে বলতে পারবেন না। কালীকান্ত ঘোষের ব্যাপারে ভালো-মন্দ কিছুই জানাননি তিনি। তার কাছ থেকে আরো জানতে চাওয়া হয়, তাকে কালীকান্ত ঘোষ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটি অ্যামাউন্ট দিয়ে থাকেন এ প্রশ্ন শুনে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ডিজিডি এন মজুমদার ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন মিয়া জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

রেলের মহাপরিচালক কামরুল আহসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নতুন যোগদান করাতে কিছু বলতে পারছেন না, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। যত অভিযোগ কালীকান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে। তার বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া তার বিভিন্ন শুভাকাঙ্ক্ষীর সাথে যোগাযোগ করেও তার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। কালীকান্ত ঘোষ এই পাঁচটি ট্রেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে, ক্যাটারিংয়ের গাড়িগুলোতে বেয়ারা নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রতি বেয়ারা থেকে এক লাখ টাকা করে আদায় করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। নিয়োগের সময় সরকারি চাকরি বলে জানানো হয়। 

ক্যাটারিং সেলের পাঁচটি ট্রেনে ১২০ জন কর্মরত। প্রত্যেক বেয়ারাকে সরকারি চাকরির কথা বলে এক থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়া হয় এবং ম্যানেজারদের কাছ থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেয়া হয় বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জানতে চাইলে টাকা নেয়ার কথা তারা অস্বীকার করেন। রেলের সচেতন যাত্রীদের দাবি খাবার মানসম্মত করা এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।

Link copied!