ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষিত

রাজস্বের নামে চাঁদা আদায়

আবু সালেহ আতিফ

আবু সালেহ আতিফ

মে ৯, ২০২৩, ১০:০৬ এএম

রাজস্বের নামে চাঁদা আদায়

ধরিয়ে দিন, আমরা ব্যবস্থা নেব

—হায়দর আলী, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) ডিএসসিসি

সদরঘাট থেকে রিকশায় কিছু ভারী মালামাল নিয়ে পুরান ঢাকার মালিটোলা যাচ্ছিলেন আব্দুল গনি হাওলাদার। ভিক্টোরিয়া পার্কের কাছে ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এলেই দৌড়ে এসে তার রিকশা থামান দু’জন লোক। এরপর রশিদ ধরিয়ে দিয়ে টাকা দাবি করেন তারা। কিসের টাকা জানতে চাইলে সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আদায়ের কথা বলে দু’জন ক্রুব্ধ স্বরে তাড়াতাড়ি টাকা দিতে বললেন। তবে ঘটনার সময় উপস্থিত এ প্রতিবেদক সাংবাদিক পরিচয় দেয়ায় তখন তাকে ছেড়ে দেয় তারা। পরবর্তীতে তাদেরকে প্রশ্ন করলে তারা বলেন, আমরা শুধু চাকরি করি এ রশিদ দিয়ে। বিভিন্ন শিফট অনুযায়ী আমাদেরকে রাখা হয়। এ বিষয়ে আমাদেরকে যে এখানে রাখছে লাইনম্যান হূদয় জানে। পরবর্তীতে হূদয়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি তো শুধু চাকরি করি। এ ব্যাপারে সব জানে ইজারাদার আলাউদ্দীন ভাই। এরপর আলাউদ্দীনের সাথে কথা বললে বেরিয়ে আসে অনেক ফাঁকফোকর। প্রথমে কিছুই স্পষ্ট বলতে না চাইলেও পরবর্তীতে তার কথা থেকে বোঝা যায় সিটি কর্পোরেশনের নাম দিয়ে কোনোরকম ধামাচাপা দেয়া বিভাগীয় ব্যবস্থায় টোল আদায়ের নামে রশিদ কেটে বেআইনিভাবে উঠাচ্ছেন টোল। আর বেপরোয়া এমন টোল আদায়ের কারণে সাধারণ যাত্রী এবং চালকদের মধ্যে বিরক্তি দেখা যাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের দাবি অবিলম্বে বন্ধ করা হোক এমন অনিয়ম, টোলের নামে চাঁদা আদায়।

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মহামান্য হাইকোর্টে বিভাগে দায়েরকৃত ৪৬৪০/২০২২ নম্বর রিট পিটিশনের আদেশের আলোকে টার্মিনাল ব্যতিরেকে সড়ক বা মহাসড়ক থেকে কোনো প্রকার টোল উত্তোলন না করার জন্য সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ঢাকা সিটির বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বেপরোয়া টোল আদায়ের অবস্থা দেখলে মনে হয় হাইকোর্টের এ রায়ের কোনো বাস্থবায়ন নেই। সিটি কর্পোরেশনের নাম দিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম রাজধানীতে নতুন কিছু নয়। অন্যান্য অনিয়মের মতো এটিও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে নিম্ন আয়ের চালক ও মালবাহী যাত্রীদের ওপর। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা থেকে শুরু করে পিকআপ ও ট্রাক থামিয়ে এ চাদাবাজি এখনকার নিত্যদিনের চিত্র। এমনকি এটি বর্তমানে খুব হয়রানির আকার ধারণ করেছে যে, কেউ যদি রিকশাতে করে একটু বেশি মালামাল নিয়ে যায় তখনো দিতে হয় নির্ধারিত পরিমাণের চাঁদা। বিশেষ করে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে যানবাহন একটু ধীর পেলেই দৌড়ে আসে কথিত এসব সিটি কর্পোরেশনের কর্মী। অনেক সময় তাদের গায়ে থাকে সিটি কর্পোরেশনের পোশাক। যদিও এমন ইজারা দেয়ার কোনো আইনি আদেশ নেই সিটি কর্পোরেশনের। তবুও কোনো এমন বেপরোয়া চাঁদাবাজির লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না প্রশ্ন রিকশাওয়ালা, সিএনজিওয়ালা থেকে শুরু করে সব ভুক্তভোগী চালকের। যাওয়া-আসাসহ প্রতি ট্রিপেই গুনতে হয় ১০-২০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর থেকেও বেশি। তবে এ কথিত সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদেরকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা শুধু চাকরি করে, মূল মালিক/ইজারাদার অন্য কেউ বলে কথার কোনো  ভ্রক্ষেপ না করে চাঁদা উঠাতে ব্যস্ত হয়ে পরে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিভাগীয় ব্যবস্থায় রাজস্ব আদায়ের নাম দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে যেমন— সদরঘাট থেকে শুরু করে গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, পোস্তগোলা ব্রিজের আশপাশসহ বিভিন্ন সুবিধাজনক এরিয়ায় সুযোগ বুঝে আদায় করা হয় নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা। এমনকি টাকা না দিতে চাইলে ভুক্তভোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করাসহ দেয়া হয় গাড়ি আটকিয়ে রাখার হুমকি। এ জন্য টাকা গেলেও ভুক্তভোগী চালকরা নিরূপায় হয়ে দিয়ে দেন চাঁদা। বর্তমানে ঢাকায় এ চাঁদাবাজি নিত্যদিনের ব্যাপার। আশেপাশে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, আমরা নিষেধ করলেও তারা শুনে না। লুকিয়ে লুকিয়ে টাকা উঠায়। সিটি কর্পোরেশনের নাম ভাঙিয়ে টাকা উঠানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভিক্টোরিয়া পার্ক সংলগ্ন সড়ক থেকে টাকা উঠানোর ইজারদার হিসেবে পরিচিত আলাউদ্দীন আমার সংবাদকে বলেন, আগে সিটি কর্পোরেশন থেকে একটি টেন্ডার হয়েছিল। বর্তমানে সেই টেন্ডারের অধীনে চলছে এবং এ নিয়ে পরবর্তী টেন্ডার না হওয়া পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন দপ্তরের মহাব্যবস্থাপক হায়দর আলীর একটি লিখিত আদেশনামার মাধ্যমে আমরা বিভাগীয় রাজস্ব আদায়ের নাম দিয়ে এ টোল উঠিয়ে থাকি। প্রতিটি থানায় এ আদেশ সংক্রান্ত অর্ডারনামা জমা দেয়া আছে বলছেন এ ইজারদার। যদিও এ নিয়ে হায়দর আলীর বক্তব্য সিটি কর্পোরেশনের নামে এমন কেউ টাকা উঠালে তাকে ধরিয়ে দিতে এবং পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবেও জানান তিনি। তবে সংশ্লিষ্ট এ বিভাগকে জানানোর পরও এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না কোথাও এবং ইজারাদার আলাউদদ্দীনের মতো সবাই সিটি কর্পোরেশনের পরিবহন দপ্তরের অনুমতি আছে বলে হাইকোর্টের রায়বিরোধী এ টোল আদায় করে যাচ্ছেন। তাহলে কি সিটি কর্পোরেশনের প্রশ্রয়ে চলছে এ প্রকাশ্য চাঁদাবাজি— প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের। বিভাগীয় ব্যবস্থায় রাজস্ব আদায়ের অনুমতি দিয়ে সিটি কর্পোরেশন থেকে আসলেই কোনো আদেশপত্র থানায় জমা দেয়া হয়েছে কি-না জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ওসি শাহীনুর রহমান ও সূত্রাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (অসি) মইনুল ইসলামের থেকে কোনো কিছু জানা যায়নি।

Link copied!