ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫
Amar Sangbad

ডাব ব্যবসায়ীদের চোর-পুলিশ খেলা

আব্দুল কাইয়ুম

আব্দুল কাইয়ুম

আগস্ট ৩১, ২০২৩, ১২:৪২ এএম

ডাব ব্যবসায়ীদের চোর-পুলিশ খেলা

১০০ টাকার বেশি দামে ডাব বিক্রির অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে

—এ এইচ এম সফিকুজ্জামান
মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা 
অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর

  • ডেঙ্গুকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা অর্জনের সুযোগ নিচ্ছে
  • মূল্যতালিকা প্রদর্শনের জন্য বলা হলেও এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই ব্যবসায়ীদের
  • ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ পিস ডাব আসে
  • ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ডাবের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ
  • ডাক্তার ডাবের পানি খাওয়াকে ভালো বলেছেন, তবে ওষুধ বলছেন না

ডাব বিক্রির জন্য মূল্য তালিকা থাকা বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অন্যথায় জরমািনা গুনতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। তবে ভোক্তা অধিদপ্তরের কোনো কঠোরতাই যেন প্রভাব পড়ছে না ডাব ব্যবসায়ীদের ওপর। কোনো ভ্রুক্ষেপই করছে না ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা মেডিকেল ও ধানমন্ডির কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ডাব বিক্রেতাদের কোনো দোকানেই মূল্য তালিকা টানানো ছিল না। নিজেদের খুশিমতো ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায় ডাব বিক্রি করছে। তাছাড়া ডাব বিক্রিতে ব্যবসায়ীদের কাছে পাকা রশিদ থাকার কথা থাকলেও তা অধিকাংশ ব্যবসায়ীর কাছে পাওয়া যায়নি। কোন নিয়মকেই তোয়াক্কা করছে না তারা। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোথাও কোথাও ডাবের দাম রাখা হয় সর্বোচ্চ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাবের পানি খাওয়াতে ডেঙ্গু ভালো হয় এর সঠিক কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। কিছু ডাক্তার ডাবের পানি খাওয়াকে ভালো বলেছেন তবে এটা ওষুধ হিসেবে বলেননি। সাধারণ মানুষ এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে ডাব খাচ্ছেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডাব ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা হাঁকিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিদিনই ভোক্তা-অধিকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন। দেখা যায় কর্মকর্তাদের দেখলেই মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হয়। তখন ডাবের মূল্য আকার ভেদে আগের তুলনায় ৮০ থেকে ১২০ টাকা কমে যায়। যতক্ষণ অভিযান চলে ততক্ষণই নিয়ম অনুযায়ী ডাব বিক্রি হয়। অভিযান শেষ হতেই চলে নিজেদের মতো মূল্যে বিক্রি। বিভিন্ন এলাকায় ডাবের মূল্য তালিকা প্রদর্শন হলেও ডাব বেচাকেনায় পাকা রশিদ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না এবং মূল্য তালিকায় প্রদর্শনকৃত মূল্য অপেক্ষা বেশি মূল্যে ডাব বিক্রি করা হয়েছে। এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করা হয়।

ডেঙ্গুকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ডাব ব্যবসায়ী বেশি মূল্যে ডাব বিক্রি করছে। অনেকে মনে করছেন, ডেঙ্গুজ্বরের সাথে ডাবের সম্পর্ক রয়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট। ডেঙ্গুর ভয়াবহতার কারণে ডাবের চাহিদা আকাশচুম্বী। আর এই ডেঙ্গুর ঘাড়ে ভর করে ডাবের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন গুণ।  

সরেজমিন গিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ও হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, অস্থায়ী ডাবের দোকানগুলোতে ছোট সাইজের ডাব বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ ও মাঝারি সাইজের ডাব ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় সাইজের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। তবে কিছু কিছু স্থানে ভোক্তা-অধিকারের এমন সিদ্ধান্তে পাইকারি দোকানগুলোতে ডাবপ্রতি প্রায় ২০ থেকে টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে তার প্রভাব দেখা যায়নি। এটা শুধু ভোক্তা অধিকারকে দেখানোর জন্যই। 

ঢাকা মেডিকেলের সামনের ডাব ব্যবসায়ী রাকিব (ছদ্দনাম) আমার সংবাদকে বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুজ্বর ব্যাপক হারে বাড়ায় ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ না থাকায় বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছি। মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে ব্যবসা করলে আমাদের লাভ হয় না। তাই তালিকা নামিয়ে রাখি। অন্য এক ক্রেতা জানান, মূলত ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করার পর থেকেই  ডাবের চাহিদা বেড়েছে। বিক্রেতারা যে দামই হাঁকছেন ডেঙ্গুরোগীর জন্য সে দামেই ডাব কিনতে বাধ্য হচ্ছেন স্বজনরা। 

বিক্রেতাদের অভিযোগ, সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ পিস ডাব আসে। ক্রয়মূল্য ও পরিবহন খরচসহ ডাব আড়তদারের ঘরে পৌঁছাতে প্রতি পিসে অন্তত ৮০ থেকে ৮৫ টাকা গুনতে হয়। পরবর্তীতে তারা খরচ ও লাভ রেখে সাইজ ভেদে পিস ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি করেন। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন প্রতি পিস ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে গাছে উঠে ডাব নামানো যাচ্ছেন না। এসব কারণে বর্তমান বাজারে চাহিদার তুলনায় ডাবের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ডাবের চাহিদা অন্য সময়ের চেয়ে আরও কয়েকগুণ বেড়েছে।  

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আমার সংবাদকে বলেন, ডাবের বিষয়টি নিয়ে আমরা কিছু দিন আগে প্রেস মিটিং করেছি। ১০০ টাকার বেশি দামে ডাব বিক্রির কোনো অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ভোক্তা অধিকার। এখন থেকে ডাব ব্যবসায়ীদের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের অবশ্যই ভাউচার রাখতে হবে। যাদের ভাউচার নেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত মঙ্গলবার সারা রাত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। সব কিছু স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছি।
 

Link copied!