ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
নতুন শিক্ষাক্রম

সহসাই কাটছে না দ্বিধা

মো. নাঈমুল হক

নভেম্বর ৬, ২০২৩, ১১:৩৮ পিএম

সহসাই কাটছে না দ্বিধা
  • মন্ত্রীর কথায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা, বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি
  • সামাজিক মাধ্যমে শিক্ষাক্রমবিরোধী প্রচারণা
  • বড় আন্দোলনের পরিকল্পনায় অভিভাবকরা

এ শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্ষতি করবে 
—ড. কামরুল হাসান মামুন 
অধ্যাপক, ঢাবি

একটু ধৈর্য ধরলে ভালো কিছু পাওয়া যাবে
—রাশেদা কে চৌধুরী
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ

নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বছরের প্রথম থেকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন অভিভাবকরা। ছয় মাস পার হওয়ার পর তাদের সন্দেহ বাস্তবে পরিণত হয়। এ নিয়ে আন্দোলনে নামেন ভুক্তভোগীরা। বিগত দুই মাস ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্কুলগুলোতে প্রচারণার মাধ্যমে শিক্ষাক্রমবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলেন অভিভাবকরা। তাদের আন্দোলনে নতুন করে ঘি ঠেলে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপুমণি। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আন্দোলনকারীদের ‘কোচিং ব্যবসায়ী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এরই প্রতিবাদে বড় ধরনের আন্দোলনের চেষ্টা করছেন অভিভাবকরা। নিজেদের যৌক্তিক আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যই মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। এক লিখিত বক্তব্যে অভিভাবকরা এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। এর ফলে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অভিভাবকদের দ্বিধা বা সন্দেহ সহসাই কাটছে না। এ নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে শিক্ষাবিদরাও একমত নন। কেউ ধৈর্য ধরার কথা বললেও কারো কারো মতে এ শিক্ষাক্রম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতি করবে। 

জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা নেই, পরীক্ষা নেই, শিক্ষার্থীরা কিছু শিখছে না বলে যেসব কথা বলা হচ্ছে, সেটি ‘ভুল তথ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি ১৫ ধরনের ভুল তথ্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। তবে বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা দেখছি, যারা ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেসব আইডি থেকে এ প্রচারণা শুরু করেছেন এবং বিষয়টিকে এখন একটি আন্দোলনে রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন, তারা মূলত কোচিং ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নোট ও গাইড বই ব্যবসায়ীরা। কারণ, তারা মনে করছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হলে ব্যবসায় মার খাবেন। সে কারণে তারা নামছেন।’ নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে শিক্ষা আন্দোলন সম্মিলিত অভিভাবক ফোরাম। 

শিক্ষামন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন ও জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তারা এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবিতে সারা দেশব্যাপী আন্দোলন চলমান। এ নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দেয়া বক্তব্যে আন্দোলনকারীদের (শিক্ষক, অভিভাবকসহ শিক্ষা অনুরাগীদের) হেয় করেছেন। আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে শিক্ষাক্রম বাতিলের আন্দোলনকে কোচিং-গাইড ব্যবসায়ীদের ইন্ধন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রী পারতেন আমাদের বক্তব্যের যৌক্তিকতা বিচার করে তার মতামত রাখতে। কিন্তু তিনি তা না করে আন্দোলন সম্পর্কে যে কুরুচিপূর্ণ এবং বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করলেন, তা অগণতান্ত্রিক আচরণেরই পরিচায়ক। আমরা অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি এবং সেই সাথে ভবিষ্যৎ প্রজম্মকে রক্ষায় বর্তমান শিক্ষাক্রম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এ অভিভাবকরা। 

এ ছাড়া লিখিত বক্তব্যে তারা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল দিকগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন। বৃহৎ  আন্দোলনে নামানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত অভিভাবকদের যুক্ত করছেন তারা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে নতুন শিক্ষাক্রম। নতুন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এই শিক্ষাক্রম দরকার আছে। কারণ, নানা ধরনের বিভাজন ছিল আমাদের শিক্ষায়। যেমন বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা। আমরা জানি যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মানবিকের অনেক কিছুই জানে না। মানবিকের শিক্ষার্থীরা জানে না, পৃথিবী এখন রকেট সায়েন্স ও রোবটিকস নিয়ে কাজ করছে। যেকোনো নতুন বিষয় বুঝতে একটু সময় লাগে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে প্রথম থেকে কিছু বিষয়ে সমস্যা হয়েছে। তবে এর মানে এটা না এই শিক্ষাক্রম অচল। এ শিক্ষাক্রম আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো কিছু হবে। সে জন্য কর্তৃপক্ষকে কিছু সময় দিতে হবে। নতুন হওয়ায় কিছু ভুল ত্রুটি হবে, এটাই স্বাভাবিক। একটু ধৈর্য ধরলে ভালো কিছু পাওয়ার কথা বলছেন এ শিক্ষাবিদ।   নতুন কারিকুলামের ক্ষতির কথা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, এই কারিকুলামে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তেমন ক্ষতি করতে পারবে না। দুই কারণে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। 

প্রথমত, নবম শ্রেণিতে সবাইকে একই সিলেবাস পড়ানো হচ্ছে। এর ফলে বিজ্ঞানের গভীরের জিনিস বাদ যাচ্ছে। যে সব দেশে নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ থাকে না সে সব দেশে বিভাগ থাকা দেশের চেয়েও বেটার সিস্টেম আছে। সেটা হলো তাদেরকে ১০টা বিষয়ই পড়তে বাধ্য না করে কিছু অপশনাল বিষয় অর্থাৎ যার যা পড়তে আগ্রহ আছে সে সব বিষয় নিয়ে পড়তে হয়। যেমন ব্রিটিশ কারিকুলামে কেউ ট্রিপল বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে সে পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়কে একেকটা আলাদা বিষয় হিসেবে পড়বে এবং তাতে সে এসব বিষয়ের গভীরে যেতে পারবে। যারা  ট্রিপল বিজ্ঞান নিয়ে পড়বে সঙ্গত কারণেই সেই সম্মিলিত বিজ্ঞান পড়বে না। কেউ ইচ্ছে করলে উচ্চতর গণিতও নিতে পারবে। অর্থাৎ ব্রিটিশ কারিকুলামে বিভাগ নাই কিন্তু তার চেয়েও বেশি ভালো সিস্টেম আছে। নবম-দশম শ্রেণিতে দুই বা তিনটা বিষয় বাধ্যতামূলক রেখে বাকি অনেকগুলো অপশনাল সাবজেক্ট যেমন উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, সম্মিলিত বিজ্ঞান, অর্থনীতি, অ্যাকাউন্টিং ইত্যাদি রাখা যেতে পারে। 

দ্বিতীয়ত, ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি বাদ দেয়া। আমাদের দেশের সামাজিক ব্যবস্থা, শিক্ষকদের আর্থসামাজিক অবস্থান ইত্যাদি ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতি সাপোর্ট করে না। ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়েতে সম্ভব। কারণ সে সব দেশে শিক্ষকদের বেতন ও সামাজিক সম্মান অনেক উঁচুতে। সেখানে হেডম দেখানোওয়ালা মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি, সরকারি কর্মকর্তা নাই। আর পরিবর্তন যদি আনতেই হয় ধীরে ধীরে আনতে হবে। পৃথিবীতে এমন একটি দেশও পাবেন না যেই দেশের শিক্ষাক্রমের সবকিছু একদম শতভাগ পরিবর্তন করে ফেলে।
 

Link copied!