ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আতঙ্ক

নিখুঁতভাবে নকল হচ্ছে ভিডিও

মো. মাসুম বিল্লাহ

মো. মাসুম বিল্লাহ

ডিসেম্বর ৫, ২০২৩, ১২:৫১ এএম

নিখুঁতভাবে নকল হচ্ছে ভিডিও
  • ডিপফেক প্রযুক্তিতে ৯৬ শতাংশই পর্নোগ্রাফি 
  • নগ্ন শরীরে সূক্ষ্মভাবে ভিডিও প্রতিস্থাপন 
  • সাইবার অপরাধ বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে

সাইবার অপরাধ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর। অপরাধী যে-ই হোক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে 
—ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি

দেশে ও বাইরের বেশকিছু মানুষ এই ডিপফেকের শিকার। সবাই সচেতন হলে 
এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব 
—আবুল হাসান, সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ

প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমপ্রতি সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা স্বয়ংক্রিয় বুদ্ধিমত্তা নামক এমন এক প্রযুক্তির সাহায্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে ডিপফেক (সূক্ষ্ম নকল) ভিডিও। ডিপফেক বলতে এমন কিছু বোঝায় যা খুবই গভীরভাবে নকল করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির হুবহু মুখ, কণ্ঠ ও শরীরকে পরিবর্তন করে ভিডিও বানানোর নাম ডিপফেক। এক ধরনের অসাধু চক্র মিথ্যা তথ্য ছড়ানো বা কাউকে খারাপভাবে উপস্থান করার জন্য ব্যবহার করছে এআই প্রযুক্তি। এআইয়ের অপব্যবহারের কারণে সাইবার সিকিউরিটি আরও হুমকির মুখে পড়েছে। অনেক নারীর ডিপফেক ও নগ্ন ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে এআইয়ের মাধ্যমে। একটি অসাধু চক্র ও বিকৃত রুচির মানুষ এ ব্যাধিতে আক্রান্ত। তরুণ-তরুণীরা না বুঝে এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। এ ছাড়া অনলাইনে নানা ক্ষেত্রে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। সম্প্রতি কিছু ভাইরাল হওয়া ভিডিও সাড়া ফেলে দিয়েছে নেট দুনিয়ায়। এই ভিডিওগুলো শুধু সমালোচনাই জন্ম দিচ্ছে না এতে হুমকির মুখে পড়ছে মানুষের নিরাপত্তাও। সারা বিশ্বে ডিপফেকের শিকার হচ্ছেন তারকা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারাও। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী একটি সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

সাইবার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডিপফেকের প্রযুক্তি ব্যবহারে জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিতে এমন নিখুঁত কিছু ভিডিও দেখা যায় এতটাই বাস্তব, যা দেখে যে কেউই বিশ্বাস করতে বাধ্য। একটি খবর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। তাই বিভ্রান্তি ছড়নোর জন্য এটি একটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়া। মনে করেন একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তির একটি নেতিবাচক নির্দেশনা ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেমনভাবে সমাজে প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে কোনো অরাজকতা সৃষ্টিতে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এই ডিপফেক প্রযুক্তি। নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে ডিপফেক প্রযুক্তির কিছু অপব্যবহারের মধ্যে অন্যতম এটি। তারকাদের পর্নোভিডিও পর্নোগ্রাফি সাইটগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু বলিউডের তারকারাই নন, বিশ্বজুড়ে অনেক তারকাই এর শিকার। ভুয়া এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় বিব্রত ও সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হন সেসব তারকা। কোনটি আসল কোনটি নকল তা বোঝার আগেই ছড়িয়ে পড়ে এসব ভিডিও। বিষয়টি নেট দুনিয়ায় একটি অন্ধকার জগতে পরিণত হয়েছে। ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ হয়েছে তার ৯৬ শতাংশই পর্নোগ্রাফি। যেকোনো মানুষের একটি ছবি ব্যবহার করে অন্য কোনো নগ্ন মানুষের মুখের সাথে একেবারে নিখুঁতভাবে প্রতিস্থাপন করতে পারবে এই প্রযুক্তি। ধারণা করা হয়, এর আগে ফটোশপের মাধ্যমে নিখুঁত নকল ছবি বানানো সম্ভব হলেও ভিডিও বানানো এত সহজ ছিল না। যা সহজ করেছে এই ভঙ্কর প্রযুক্তি। সাইবার অপরাধে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করার প্রযুক্তি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রযুক্তিতে সাইবার অপরাধীরা ভয়ঙ্কর রূপে আত্মপ্রকাশ করবে। মানুষকে ফাঁদে ফেলা এবং ফাঁসানোর জন্য খুবই সহজ এই প্রযুক্তি। এ ধরনের কৃত্রিম কণ্ঠ ব্যবহারের ব্যাপক নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। ভিডিওর সাথে কণ্ঠ যখন মিলে যায় মানুষ তা বিশ্বাস করতে বাধ্য। একজন মানুষের হুবহু আরেক কপি হচ্ছে কোলন। এদেরকে ডিজিটাল টুইনও বলা হয়। অন্য দিকে, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ হলে মানুষের গোপনিয়তা নিঃসন্দেহে হুমকির মুখে পড়বে। মানুষের ব্যাংক তথ্য ঋণের তথ্য ডেবিড ও ক্রেডিট কার্ডের গোপন পিন নম্বর থেকে শুরু করে সমস্ত গোপনীয়তা মুহূর্তেই প্রকাশ হয়ে যেতে পারে। এমনকি তার বিভিন্ন আইডি পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়ে যেতে পারে মুহূর্তেই। 

ডিপফেক সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবুল হাসান আমার সংবাদকে বলেন, ‘সম্প্রতি সময়ে ডিপফেক ভিডিও সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। এটি শুধু জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নয়, যেকোনো সময়ই বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বেশ কিছু মানুষ এই ডিপফেকের শিকার হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই সাইবার বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই ভিডিও প্রথম দেখলে সবার কাছে আসল মনে হবে। তবে ভালোভাবে কয়েকটি বিষয় খেয়াল করলে ডিপফেক বোঝা যায়। যেমন ঠোঁট এবং চোখের ব্লেন্ডিং বা ফিনিশিং রিয়েল হবে না। ভয়েসের সাথে বডির বিভিন্ন অঙ্গের মুভমেন্ট অমিল দেখা যাবে। যদি সবাই সচেতন হয় তাহলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।’

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ ও অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন আমার সংবাদকে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তারা সবসময়ই অপরাধ নির্মূলে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে।’ বাংলাদেশে ডিপফেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আছে কি-না, ‘এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, যদি কেউ এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে তার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সব সময়ই সাইবার অপরাধেদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানান  ড. খ. মহিদ উদ্দিন।

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার প্রধান দুটি উপায় হলো ব্যবহারকারীদের সচেতন থাকা ও সাইবার অপরাধ দমন করা। ব্যবহারকারীদের সচেতন করার জন্য যেমন ক্যাম্পেইন, সামাজিক আন্দোলন পরিচালনা করতে হবে, ঠিক তেমনি সরকারকেও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
 

Link copied!