ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad
চালের বাজার

ফের সিন্ডিকেটের কব্জায়

রেদওয়ানুল হক

জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১১:৪৩ পিএম

ফের সিন্ডিকেটের কব্জায়
  • ভরা মৌসুমেও দাম বৃদ্ধিতে হতবাক ক্রেতা-বিক্রেতা-কৃষক
  • ধান কিনে নিচ্ছে মজুতদাররা, বাজারে সরবরাহ ঘাটতি
  • কর্পোরেট গ্রুপগুলো প্যাকেটজাত করার উদ্দেশ্যে দালাল দিয়ে চাল কেনাচ্ছে
  • অভিযান জোরদারের পাশাপাশি সরকারি গুদাম থেকে সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ 

চালের বাজারে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। নতুন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব রদবদলের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে ক্রেতাদের পকেট কাটতে শুরু করেছে চক্রটি। ভরা মৌসুমেও চালের দাম অস্বাভাবিক বাড়তে শুরু করায় হতবাক ক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা ও কৃষক। দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান জোরদার ও সরকারি গুদাম থেকে চাল সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। 

বাজারে খোঁজ নিয়ে সিন্ডিকেটের তথ্য মিলেছে। পরে বেশি দামে বিক্রির জন্য মজুতদাররা ধান কিনে জমা করছে। এছাড়া কর্পোরেট গ্রুপগুলো বাহারি মোড়কে প্যাকেটজাত করে বেশি দামে বিক্রির লক্ষ্যে দালালদের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করছে। তাছাড়া বড় কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ সিন্ডিকেট করে পাইকারি পর্যায়ে অহেতুক দাম বাড়াচ্ছে। 

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জাতীয় নির্বাচনের পর অনেকটা হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। মোকামগুলোয় চালের দাম বাড়ার পর রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এখন চালের দাম বাড়তি। এ দফায় মোটা, মাঝারি ও সরু সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বছরের শুরুতে মিলমালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। তবে মিলমালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে ধানের সরবরাহ কমায় বেড়েছে চালের দাম। 

ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও দেশের প্রধান চালের মোকামগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মান ও ধরনভেদে চালের দাম কেজিতে তিন থেকে সাত টাকা বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কারণ ছাড়াই চালের দাম হঠাৎ বেড়েছে। এটাকে স্বাভাবিক বলার সুযোগ নেই। সরবরাহ কমিয়ে বাজারে চালের সংকট তৈরি করার চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন এই বাজারের বিক্রেতারা। 

রাজধানীর পলাশী বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে যে মোটা চালের (স্বর্ণা ও চায়না ইরি) কেজি ৫০-৫২ টাকা ছিল, তা এখন কিনতে হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়। মাঝারি মানের চালের (পাইজাম ও বিআর ২৮) কেজি ৫৫-৫৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০-৬২ টাকা। আর মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৬২-৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। কিছু সরু চাল অবশ্য বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের শুরুতে বাজারে চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছিল। তবে দাম বেশি বেড়েছে নির্বাচনের ঠিক পরপর। বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান বলেন, আমনের উৎপাদন ভালো হলেও রেকর্ড দামে ধান কিনতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি আগে দেখা যায়নি। বছরের শুরুতে ধানের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এই ব্যবসায়ী মনে করেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সরকারকে দ্রুত বাজার তদারকিতে নামতে হবে। এই তদারকি হতে হবে সরবরাহ ব্যবস্থার একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে সব পর্যায়ে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে ধান উৎপাদন ভালো হয়েছে এবং খাদ্যের মজুত পরিস্থিতিও ভালো। দ্বিতীয় মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে গত রোববার তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি বলেন, মিলাররা প্রতিযোগিতা করে ধান কেনায় প্রতিনিয়ত চালের দাম বাড়ছে। বাজারে ধান-চালের অবৈধ মজুতবিরোধী অভিযান জোরদার করা হবে এ কথা জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এ অশুভ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে খাদ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। তিনি আরও বলেন, মজুতবিরোধী আইন ইতোমধ্যে পাস হয়েছে। দ্রুত বিধি প্রণয়ন করে তা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

চালের অন্যতম উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত বগুড়া, নওগাঁ, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া এলাকার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে চালের দাম। স্থানীয় বাজারগুলোতে সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সব ধরনের আমন চালের দাম কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা বেড়েছে। গতকাল খুচরা পর্যায়ে চিকন চাল বিক্রি হয়েছে ৭৫-৭৬ টাকা কেজি। আর মোটা চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৫৪-৫৫ টাকায়।

এদিকে ধানের দাম কিছুটা বাড়ায় প্রান্তিক কৃষকরা খুশি। তবে তারা মনে করেন, বেশির ভাগ মোটা ধান মিলমালিক এবং মজুত ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে চলে গেছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, ‘এখন বাজারে মোটা ধান কম। কৃষক আগেই তাদের ধান বিক্রি করেছেন। বর্তমানে বাজারে কেনাবেচায় যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই মজুত ব্যবসায়ী। কিছু মিলমালিকের এজেন্টও আছেন। তারা এখন কিনে রাখবেন। পরে বেশি দামে বিক্রি করবেন।’ নাম প্রকাশ না করে একাধিক চাল ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ‘মিলে ও বাজারে চালের ঘাটতি নেই। অথচ দাম বাড়ছে। উৎপাদন খরচ বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে বর্তমান বাজারে কিছুটা অস্বাভাবিক হারে চালের দাম বাড়িয়েছেন মিলমালিকরা।’

চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি গুদামে থাকা চাল দ্রুত বাজারে ছেড়ে সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক বাণিজ্যসচিব ও কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, চালের বাজারের অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কিছু দিন সংযত ছিল। এখন তারা আবার সক্রিয় হয়েছে। এদের থামাতে হলে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় বাজার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
 

Link copied!