ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ফাইলবন্দি খেলাপির হাজার কোটি টাকা

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

নভেম্বর ৬, ২০২৪, ১১:৪৫ পিএম

ফাইলবন্দি খেলাপির হাজার কোটি টাকা
  • পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলছে ৩ হাজার ২৬৯ মামলা
  • তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা
  • উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত করা হয় ৪২ মামলা

খেলাপি ঋণের মামলা নিষ্পত্তি হলে আদায় হতো বিপুল অঙ্কের টাকা। কিন্তু বছরের পর বছর মামলা জটিলতায় আদালতের কক্ষে ফাইল বন্দি হয়ে ধূলায় মলিন হয়ে আছে হাজার হাজার কোটি টাকা উদ্ধারের মামলার নথিপত্র। অর্থঋণ আদালতগুলোতে ঝুলে থাকা এমন মামলার সংখ্যা ইতোমধ্যে ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের জুন শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা; যা বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এটি গত ১৬ বছরের মধ্যে বিতরণ করা ঋণ ও খেলাপি ঋণের সর্বোচ্চ অনুপাত। 

গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। আর গত তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা, যা ৩০ মার্চ পর্যন্ত ছিল এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। আদালত ও ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, খেলাপি আদায়ে অর্থঋণ আদালতে গত ৩০ জুন পর্যন্ত ২০ হাজার ৫৯৩টি মামলা বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলছে এমন তিন হাজার ২৬৯টি মামলা। আর ৪২টি মামলা উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। ওসব মামলার মধ্যে শুধু ঢাকার চারটি অর্থঋণ আদালতেই আট হাজার ৫৭৮টি খেলাপি ঋণের মামলা বিচারাধীন। মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হওয়ায় বিপদে পড়ছেন ক্ষেত্র বিশেষে ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতারা। আবার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও শিল্প গোষ্ঠী থেকে ব্যাংকগুলো আদায় করতে পারছে না ঋণের টাকা। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে অর্থঋণ আদালতের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় কম। তাছাড়া আদালতগুলোর বিচারক সংখ্যাও যথেষ্ট নয়। নানা কারণে অর্থঋণ আদালতে মামলাজট তৈরি হচ্ছে। আর খেলাপি ঋণ আদায়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়রানিও বাড়ছে। মামলা ঝুলে থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গ্রাহকরাও। মূলত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষই অনীহা দেখায়। কোনো মামলায় বাদী আগ্রহী হলে বিবাদীর অনাগ্রহ থাকে। আবার কোনোটিতে বিবাদী মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চাইলে বাদী সময় আবেদন করে কালক্ষেপণ করেন। ফলে মামলা দীর্ঘদিন ঝুলে থাকছে।

সূত্র আরও জানায়, দেশে ঋণখেলাপির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ কমাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) দেশের অভ্যন্তরেও নানা চাপ রয়েছে। কিন্তু নানা চেষ্টা করেও তা কমানো যাচ্ছে না। আর অর্থঋণ আদালতে মামলার দীর্ঘসূত্রতার সুযোগ নিয়ে অনেক গ্রাহক ইচ্ছাকৃত খেলাপি বনে যাচ্ছে। ফলে লাগামছাড়া হয়ে পড়েছে খেলাপি। খেলাপি কমাতে আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা ছাড়া বিকল্প নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক তৃতীয় পক্ষ হিসেবে খেলাপি ঋণের প্রায় সব মামলাতেই যুক্ত থাকেন। সরাসরি তাদের দায় না থাকলেও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের অনেক দায়। খেলাপি ঋণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে গুরুত্ব সহকারে এগিয়ে আসা জরুরি। 

এদিকে ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মতে, যখন ব্যাংকগুলো বুঝতে পারে যে, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আর খেলাপি ঋণ আদায় করা যাবে না, চূড়ান্ত ব্যবস্থা হিসেবে তারা মামলায় যায়। দেশে এই মামলার একমাত্র আদালত হচ্ছে অর্থঋণ আদালত। ক্রেডিট কার্ড খেলাপি থেকে শুরু করে ছোট বড় চেক ডিজ-অনারের মামলা থেকে কোটি কোটি টাকার ঋণখেলাপির সব মামলায় সব ব্যাংককে এই একটা আদালতেই যেতে হয়। যখন ঋণ আদায়ের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়, আশা থাকে না, তখন সেটাকে রাইট-অফ করার জন্যও মামলা করতে হয়। ওই কারণে সেখানে মামলার সংখ্যা অনেক বেশি। 

মামলাজট কমাতে এ বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান আমার সংবাদকে বলেন, পর্যাপ্ত সংখ্যক আদালত ও বিচারক সংকটের কারণে অর্থঋণের মামলাগুলো দীর্ঘদিন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। মামলাজট কমাতে আমরা অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছি। পাশাপাশি ২০১১ সালে দুই শতাংশ শেয়ার ধারণের মাধ্যমে ব্যাংকের মালিকানা পাওয়ার আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছি। ঋণখেলাপি কমাতে ব্যাংকগুলোতে স্বতন্ত্র পরিচালক সংখ্যা বৃদ্ধি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের থেকে শেয়ার হোল্ডার সংখ্যা আরও বাড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছি। আইনি প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রভাবশালী, ঋণখেলাপিরা সব সময় সক্রিয়, তাদের একটা রিটের কারণে অনেক সময় মামলা ঝুলে যায়। মামলাজট ও দীর্ঘসূত্রতা কমাতে আইনের এই সমস্ত দুর্বলতা, ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে।
 

Link copied!