নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২৮, ২০২৫, ১২:০৭ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ২৮, ২০২৫, ১২:০৭ এএম
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পেলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার সকালে এই রায় দেন। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এটাই মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রথম কোনো মামলা, যেটি রিভিউ পর্যায়ে আসার পর ফের আপিল শুনানির অনুমতি পায় এবং আসামি খালাস পেলেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেছেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা ছাড়াই এটিএম আজহারকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। বিচারের নামে অবিচার করা হয়েছিল। এই রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
তার আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এই রায়ের ফলে সত্য বিজয় হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে। এটিএম আজহারের ওপর এটি ছিল নজিরবিহীন নির্যাতনের সামিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ, আশা করি আজ সকালে এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পাবেন। এদিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া ইসলাম বলেন, আপিল মঞ্জুরের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছালেই মুক্তি পাবেন তিনি। বর্তমানে তিনি পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আদালত থেকে আসা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে পিজি হাসপাতাল থেকেই মুক্তি পাবেন তিনি।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন থেকেই তিনি কারাগারে আছেন। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে জামায়াত নেতা আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়। গত ৮ মে এই মামলায় এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষ হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেন। যদিও এটি প্রহসনের রায় বলে আখ্যায়িত করে আসছিল জামায়াতে ইসলামী।