Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে তাড়াশের কামারপল্লী

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

জুলাই ৪, ২০২২, ০২:৩৬ পিএম


টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে তাড়াশের কামারপল্লী

পবিত্র ঈদুল আজহা আসতে আর কয়েকটা দিন বাকী। এজন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাড়াশের বিভিন্ন কামার পল্লীর কারিগররা। ঈদে চাহিদার কথা বিবেচনা করে চাপাতি, চাকু, বটি সহ লোহার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। বছরের এসময় চাহিদা বেশি থাকায় কামাররা ভালো উপার্জন করে থাকেন। 

যেহেতু কোরবানির পশু কাটাকুটিতে চাই ধারালো দা, বটি, চাপাতি ও ছুরি। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে তাড়াশ উপজেলার কামারশালাগুলো। এই ঈদে গরু, ছাগল কোরবানির পশু হিসেবে জবাই করা হয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোরবানির পশু জবাই ও কাটাকুটির কাজ চলে।                 
                                                                             
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি লোহা, স্টীলের যন্ত্রপাতির সামনে এমনিতেই নাস্তানাবুদ এই শিল্প সংশ্লিষ্টরা। বছরে একটি মৌসুম ঈদ উল আযহারে ঘিরে ফিরে আসে তাদের কর্মচ লতা। 

হাট বাজার আর গলি মুখে তাদের হাতুড়ি-হেমারের টুং টাং শব্দ জানান, দিচ্ছে ক’দিন পরেই ঈদ। আর সেই ঈদকে ঘিরে আশার আলো দেখছেন কামার শিল্প।                                                                  

স্থানীয় কামাকারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সারা বছর দা, বটি, চাকু, ছুরি, চাপাতি সহ কৃষি উপকরন তৈরীর কাজ থাকে তাদের। হালে যোগ হয়েছে রিকসা ভ্যানগাড়ির যন্ত্রাংশ বানানোর কাজ। চায়নার তৈরী ষ্টীলের জিনিষ বাজার দখলে নেয়ার কারণে প্রাচীন শিল্পের কারিগররা আদি পেশা পরিবর্তন শুরু করেছেন। 

তবু এই পেশা যেনো অন্য রকম নেশা তাদের। এ কারণে কোরবানির ঈদ এলে আশায় বুক বাধেন তারা। কারণ এ সময়ে পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াজাত করতে লোহার তৈরী দা, বটি, চাপাতি, ছুরির প্রয়োজন হয়। এসব জিনিসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কামারদের দম ফেলার সময় থাকে না। 
                                                
পৌর সদরের হাসানের কামারের কামারশালায় গিয়ে দেখা যায় মধ্যরাত পর্যন্ত দা, বটি, ছুরি, চাপাতি বানাতে হাত চালাচ্ছেন তারা। আর এসব জিনিষ কিনতে কামারের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে ক্রেতারা। 

এরকম ব্যস্ততা সকল কামারশালায় দামও হাতের নাগালে। চাপাতি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকায়, বটি ৩’শ থেকে ৪’শ টাকায়, ছোট ছুড়ি ১’শ থেকে ২’শ টাকায়, বড় ছুরি ৩’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কেউ পুরনো জিনিষ শাঁণ দিতে কামারদের শরণাপন্ন হচ্ছেন। এসব দোকানে সারা বছরই লোহার তৈরী দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কোদাঁল, কুড়াল, কাঁচি পাওয়া যায়।                      

তাড়াশ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে রয়েছে একাধিক কামার পল্লী। এসব জায়গায় কাজ করেন অন্তত শতাধিক কামার। বছরের অন্যান্য সময় বাজার মন্দা হলেও কোরবানির ঈদে তা পুষিয়ে নিতে পারবেন। এমন আশায় বুক বাধেন এসব কার্মকারেরা।

Link copied!