Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

নানা অজুহাতে স্কুল ফাঁকি দেন প্রধান শিক্ষক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

আগস্ট ১০, ২০২২, ০১:৪৫ পিএম


নানা অজুহাতে স্কুল ফাঁকি দেন প্রধান শিক্ষক

নানা অজুহাতে মাসের অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন প্রধান শিক্ষক। অনেক সময় বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে  ঘুরে বেড়ান এদিক সেদিক।

তবে স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় উপস্থিতির স্বাক্ষর ঠিকই আছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের পড়াশোনার কোন খবর রাখেন না তিনি। ফলে দিন দিন কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

এমন অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার কুমারপাড়া হিলোচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়ার বিরুদ্ধে।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোমবার (৮ আগস্ট) ৬৪ জন অভিভাবক ও এলাকাবাসী মিলে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া নানা অজুহাতে অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন। যদিও কোনদিন আসেন তবে ২ টার পর পরই চলে যান। পুরো সময় বিদ্যালয়ে থাকেন না।

এমনকি বিভিন্ন জাতীয় দিবসেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না। মহামারী করোনার কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে  অভিভাবক ও স্থানীয়দের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেন না। কখনো কোনো ধরনের অভিভাবক সমাবেশ, মা সমাবেশ করেননি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কাউন্সিল হলেও এই বিদ্যালয়ে কোনো স্টুডেন্ট কাউন্সিল করেননি।

দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছা অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনা করেন প্রধান শিক্ষক। ম্যানেজিং কমিটি গঠনের কথা বললে তিনি উদাসীনতা দেখান। এমনকি শিক্ষার্থী অভিভাবক বিদ্যালয়ে গেলে অথবা ফোন করলে তিনি বিরক্তবোধ করেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের হিলোচিয়া গ্রামে ২০১৩ সালে ‌‍‍`কুমারপাড়া হিলোচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি‍‍` প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২৫ জন। এর বিপরীতে তাদের পাঠদানে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে  অনগ্রসর এবং নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায়  সরকার ২০১৩ সালে সারাদেশে ১৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। এটি এরই একটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক প্রায় দিনই বিদ্যালয়ে না এসে শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান। করোনার পর চলতি বছরের মার্চের ২ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে ক্লাশ শুরু হয়। আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত মোট ৯৪ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান শিক্ষক ২৪ দিন নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করেন।

১৪ দিন চিকিৎসা ছুটি ভোগ করেন। বন্যার সময় বিদ্যালয়ে পানি না উঠলেও তিনি শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখেন। বন্যাকালীন সময়ে অন্যান্য শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসলেও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেননি। অথচ তিনি হাজিরা খাতায় ঠিকই স্বাক্ষর করেন।

অভিযোগকারী কয়েকজন জানিয়েছেন, অভিযোগের পর থেকে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে তাদেরকে নানামুখী চাপ দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে জানতে  অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মামুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা। এটি একটি চক্রান্ত। তদন্তে সত্যিটা বের হয়ে আসবে  বলে আশা করছি।

 বারহাট্টার ভারপ্রাপ্ত  উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অভিযোগটি আমাদের কাছে পৌছেছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বারহাট্টার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে  বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট উপজেলার কর্মকর্তাদের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলবো।

আমারসংবাদ/এআই 

Link copied!