Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪,

আমাদের একটি রাস্তা করে দেন, আর কিছু চাই না

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুর প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২, ০৬:০৯ পিএম


আমাদের একটি রাস্তা করে দেন, আর কিছু চাই না

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পৌরসভার খালের উপর জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে গুয়াতলার বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

পৌরসভার জমি থাকায় ও রাস্তা থেকে  বঞ্চিত হয়েছেন পৌরসভার বাসিন্দারা। বিকল্প যাতায়াতের একমাত্র  মাধ্যম তাদের বাঁশের সাকো। আর সেই সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়েছে পৌরসভার জমি খালের উপরে। এখন সাঁকোটির বিভিন্ন অংশের বাঁশের বাতা ও কাঠের খুঁটি ভেঙে গেছে। পরে আবারও বাঁশের খুঁটি জোড়াতালি দিয়ে পার হতে হয় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। সাঁকোতো নয় যেন এক মরণ ফাঁদ।

মাদারীপুরে শিবচর  উপজেলার ১নং ওয়ার্ডের গুয়াতলা এলাকায় রাস্তা না থাকায় দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করছে বাসিন্দারা। ওয়ার্ডবাসী এখন ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের পরিত্রাণ চায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের গুয়াতলার মৌজায় পৌরসভা শহরের বাঁশের সাঁকোটি নড়বড়ে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ ওই সাঁকোর ওপর দিয়ে চালের বস্তুা, রান্না করার লাকড়িসহ সকল প্রকার পণ্যদ্রব্য নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। যেকোনো সময় যে কেউ পড়ে গিয়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ১নং ওয়ার্ডের কয়েকশত লোকজন। আর ওই পথটুকু পার হতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোটি ব্যবহার করতে হয় তাদের। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত যেন তাদের এই রাস্তাটুকু করে দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাহলে প্রতিদিন ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা থেকে রেহাই মেলবে ওয়ার্ড বাসিরা।

পৌরশহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিলীপ দাস বলেন, চাল-ডাল অন্য কোন কিছু চাই না। আমরা শুধু চাই আমাদের চলাচলের জন্য একটি রাস্তা। পৌরসভার মেয়রের কাছে আমাদের একটাই দাবি। সে যেন আমাদের চলাচলের জন্য এ রাস্তাটি দ্রুত করে দেয়।

বাবুল মোল্ল্যা বলেন, ভাইজান আমরা যেমন কষ্ট করি ভাঙা সাঁকো দিয়া চলাচল করছি। আমার বাপ-দাদারাও এমন কষ্ট করে মোরে গেইছে। কিন্তু এতে কোনো রাস্তা হচ্ছে না। রাস্তা না থাকায়  ভ্যান-মোটরগাড়ি চলে না। কোন বাজার সদায় নিয়ে আসতে বড় কষ্ট হয়। ভাঙ্গা সাকো দিয়ে উঠলে মনে হয় যে ভেঙে পড়ে যায়। আর অন্যের বাড়ি দিয়ে যে আমাদের বাড়ি যাবো, তাও তারা আমাদের ঘরের আশপাশে  টিনের বেড়া দিয়ে আটকে রাখছে। যাতে আমরা তাদের বাড়িতে না যেতে পারি। আমাদের যাতায়াতের একমাত্র এই উপকরণ হয়েছে সাঁকো।

প্রবাসী আলমগীরের স্ত্রী খুকুমণি বলেন, আমার স্বামী বিদেশি থাকে। আমি দেশে থাকি মাঝে মাঝে আমার বাজার করতে হয়। তখন কোন রিকশাওয়ালা আমার বাড়িতে পণ্য সামগ্রী নিয়ে আসতে চায় না। এই সাকোর জন্য, তখন আমার নিজের কষ্ট করে বয়ে আনতে হয়। প্রতিদিনই এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময় এখানে এসে একটি রাস্তা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যত দ্রুত সম্ভব এখানে একটি রাস্তা দরকার।

চতুর্থ ও দ্বিতীয়  শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বলেন, আমি আমার ছোট বোনকে নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে পার হতে গেলে আমার ছোট বোন কয়েকবারই সাকো থেকে পড়ে গেছে। তাকে নিয়ে ঠিকভাবে স্কুলে যেতে পারি না। তাই সরকার ও মেয়রের কাছে আমার দাবি যাতে এই সাকোটি পরিবর্তন করে এখানে একটি রাস্তা করে দেয় তাহলে আমি আমার বোনকে নিয়ে স্কুলে যেতে পারবো ঠিকমত।

পৌর কাউন্সিলর আখতার হোসেন খান বলেন,  আমাদের কাছে তারা যদি অভিযোগ করে আমরা বিষয়টি দেখব। কিন্তু ওখানকার জমিতে একাধিক মালিকানা রয়েছে। তাই কেউ রাস্তার জন্য জমি দিতে চায়, আবার কেহ চায় না। তাই আমি তাদেরকে বলে দিয়েছি আপনারা সবাই মিলে মেয়র মহোদয়ের কাছে এসে বলেন তাহলে মেয়র মহোদয় একটা ব্যবস্থা করে দিবে।

শিবচর পৌরসভার মেয়র মো‌. আওলাদ হোসেন খান বলেন, রাস্তার কাজ চলমান। তারপরও যদি ভুক্তভোগী পরিবার আমাদের কাছে অভিযোগ করে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে রাস্তা করার ব্যবস্থা নিবো।

এসএম

Link copied!