Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সন্তানকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে ইউএনও’র পরামর্শ

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২, ০৩:৪৭ পিএম


সন্তানকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে ইউএনও’র পরামর্শ

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় কর্মরত কর্মোদ্যম, সৎ ও দায়িত্বশীল জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদুজ্জামান "সন্তানকে আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পিতা মাতার ভূমিকা" শীর্ষক লেখনী দ্বারা সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের দায়িত্ব সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। তার এই সৃজনশীল লেখনীতে আবেগ নিয়ন্ত্রণ, ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা সহ অভিভাবকদের মোট ১৩ টি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিচে তার লেখা সম্পূর্ণ তুলে ধরা হলো -

" আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটি নির্ভর করে আপনি আপনার সন্তানের জন্য কেমন ভূমিকা রেখেছেন। কারণ একটি শিশুর মানসিক বিকাশে যাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি তারা হলেন মা বাবা। কেননা সন্তানের জন্য প্রথম ও প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে তার পরিবার, মা-বাবা। কাজেই পিতা মাতা যা কিছু শেখাবেন তাই সন্তানেরা শিখবে এবং সে অনুযায়ী সুনাম বা সফলতা বয়ে আনবে। তাই প্রত্যেক পিতা মাতা তাদের সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে পারেন। যেমন-

১. আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা মা-বাবা সন্তানকে খুব বেশি ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। অতিরিক্ত আদরে সে যেন অন্যায় কোনো আবদার না করে বসে। তাই ছোটবেলা থেকেই তার এবং আপনার নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন।

২. ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করুন। কারণ ধর্মীয় শিক্ষা আপনার শিশুকে সামাজিক, নৈতিক, ভদ্র, শান্ত ও অনুগত হতে সাহায্য করে।

৩. নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে শিশুকে ধর্মীয় মূল্যবোধ শেখানোর কোন বিকল্প নেই। বড়দের সম্মান করা, ছোটদের স্নেহ করা, সৎ পথে চলা, ন্যায়ের প্রতি ভালোবাসা, অন্যায়ের প্রতি ঘৃণাবোধ ইত্যাদি বিষয়গুলো একটি শিশুর জীবনকে সুন্দর করে তুলে।

৪. অধিক শাসন করা থেকে বিরত থাকুন কখনোই সন্তানকে অতিরিক্ত শাসন করা উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত শাসন তাকে আপনার থেকে দূরে ঠেলে দেবে।

৫. সন্তানকে সময় দিন আজকাল মা-বাবা বিভিন্ন কাজে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকেন। ফলে সন্তানকে উপযুক্ত সময় না দেওয়ার কারণে সন্তান বিপথে চলে যায়। তাই সন্তানকে কার্যকর সময় দিন। তাদের ধারণা ও মতামত প্রকাশ করতে দিন।

৬. বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন আপনিই হতে পারেন আপনার সন্তানের সবচেয়ে প্রিয় আর বিশ্বস্ত বন্ধু। অবসর সময়ে তার সঙ্গে আড্ডা দিন। তাহলে সে আপনার সঙ্গে সহজ হতে পারবে আর সব কিছু শেয়ার করতে পারবে।

৭. সহপাঠী নির্বাচনে গুরুত্ব দিন আপনার সন্তানের খোঁজ খবর রাখুন, সৎ সঙ্গ ও সুস্থ পরিবেশে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। ইতিবাচক শিক্ষায় গড়ে তুলুন। শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।

৮. শৃঙ্খলা মেনে চলতে শেখান সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই উৎসাহ দিন নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে। অনেকেই এটাকে পরাধীনতা মনে করে। আসলে নিয়ম মেনে চলা পরাধীনতা নয়। শৃঙ্খলা মানে হচ্ছে জীবনকে গুছিয়ে চলা, যা জীবনকে আরও সুন্দর ও পরিপাটি করে তুলে।

৯. খেলাধুলায় গুরুত্ব দিন আপনার সন্তানকে খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ প্রদান করুন। কেননা খেলাধুলা মানসিক বিকাশে অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া শারীরিক গঠনের জন্য খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

১০. বই পড়তে উৎসাহ দিন আপনার সন্তানকে বই পড়তে উৎসাহ প্রদান করুন। বই মানুষকে উদার হতে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি মনোযোগী করুন।

১১. প্রযুক্তিগত শিক্ষা দিন সচেতনতার সঙ্গে বর্তমান সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা খুব জরুরি। কিন্তু আমাদের তরুণ সমাজ বেশিরভাগ সময়েই তার অপব্যবহার করে থাকে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে আপনার সন্তানকে সচেতন করে তুলুন।

১২. মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা আপনার সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করে সুখী সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ভূমিকা রাখুন।

১৩. পরিশ্রমী হতে উৎসাহিত করুন নিজের কাজ নিজেকে করতে উৎসাহ দিন। শারীরিক পরিশ্রমে মনে প্রশান্তি ও জীবনে সফলতা আসে। তাই নিজের কাজ নিজে করার মাধ্যমে শ্রমের মর্যাদা উপলব্ধি ও আত্মমর্যাদা বিকাশে সন্তানকে সহায়তা করুন।

এসএম

Link copied!