Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪,

বঙ্গবন্ধুর দেশে কেউ ঠিকানা বিহীন থাকবে না

সফিউল আলম, কক্সবাজার

সফিউল আলম, কক্সবাজার

ডিসেম্বর ৭, ২০২২, ০৭:০০ পিএম


বঙ্গবন্ধুর দেশে কেউ ঠিকানা বিহীন থাকবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে কোন মানুষ ঠিকানাহীন থাকবে না। প্রতিটি এলাকায়; ভূমিহীন‚ গৃহহীন মানুষের তথ্য পেলে নাম ঠিকানা দেবেন। তাদের জমি সহ ঘর দেয়া হবে। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধশীল দেশে রূপান্তরের কাজ চলছে। ২০৪১ সালে আমরা সে লক্ষ্যে পৌঁছাব ইনশা আল্লাহ।

কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টা ৫২ মিনিটের সময় তিনি সভাস্থলে এসে পৌঁছেন। এরপর তিনি সারাসরি উদ্বোধন মঞ্চে যান। ওখানে ২৯ টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

এর পর মঞ্চে গিয়ে বিকাল ৪ টা ২৫ মিনিটে তিনি বক্তব্য রাখা শুরু করেন। ৪ টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ৩০ মিনিটের বক্তব্যে কক্সবাজারের উন্নয়নের মেগা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে আরো উন্নয়নের ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে আমরা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে ছিলাম। তাদের যত দ্রæত সম্ভব স্বদেশের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সোনালী সৈকত কক্সবাজার পর্যটনের জন্য সবচেয়ে উন্নত জায়গা মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীর পিতাকে হত্যা করার পর এরশাদ সরকার এসেছে, খালেদা জিয়ার সরকার এসেছে, কেউ এই কক্সবাজারের মানুষের দিকে ফিরে তাকায় নাই। এখানে কোনো উন্নয়ন করে নাই। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই কক্সবাজারের উন্নয়ন হয়েছে। আমি আপনাদের এলাকায় ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি, চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছি। এবার বিজয়ের মাসের এ সব উপহার বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কক্সবাজার আপনারা জানেন যেখানে এক সময় লবনচাষীরা খুব কষ্ট পেত। আমরা বিরোধী দলে থাকতে সেই বদরখালীতে লবনচাষী এবং চিংড়ী চাষী সম্মেলন করেছি। ক্ষমতায় আসার পর লবনচাষীদের  সার্বিক উন্নতির জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। এবং লবনচাষীরা যেন আরও আধুনিক পদ্ধতিকে লবন চাষ করতে পারে আমরা পদকক্ষেপ নিয়েছি। নিজের দেশের চাহিদা মিঠিয়ে বাইরে রপতানি করতে পারি সেই ব্যবস্থাও আমরা নেব।

মহেশখারীতে গভীর সমুদ্র বন্দর, সোনাদিয়াতে ইকো পার্ক নির্মাণ, টেকনাফ সাবরাং সহ কক্সবাজারে ৬টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কথা উল্লেখ্য করে প্রধানমন্ত্রী ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের জাতীয় নির্বাচনের জন্য নৌকায় ভোট প্রার্থনা করেছেন।

তিনি বলেছেন, ২০০১ সালে এই বাংলাদেশে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা করেছে। খালেদা-তারেক মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, গুম ছাড়া কিছু করতে পারে না। অস্ত্র চোরাকারবারের মামলায় অভিযুক্ত তারেক জিয়া চক্র জঙ্গীবাদের মদদদাতা। তারা ধ্বংস ছাড়া কিছুই পারে না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমি বাবা, মা ও ভাই সকলকে হারিয়েছি। নতুন করে হারানোর কিছু নেই। হারানোর কষ্ট কি আমার চেয়ে কেউ ভাল বুঝবে না। আপনাদের মাঝে বাবা, মায়ের স্নেহ, ভাই-বোনের ভালবাসা পাওয়ার আশা করি। আপনারা আমার পরিবার। আপনরা আমাকে আগলে রেখেছেন। আমার একমাত্র চাওয়া আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকব দেশের মানুষের আহার সংস্থান করা আমার কাজ। টিসিবির মাধ্যমে সস্তায় চাল, ডাল, তেল, চিনি পাওয়ার সু-ব্যবস্থা করেছি। এদের একজন মানুষও অভূক্ত থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী সবশেষে কক্সবাজারে চলমান উন্নয়ন বিবেচনা করে নৌকায় ভোট দেয়ার ওয়াদা করিয়ে বলেন, আবার আসিব ফিরে, এই সৈকতের তীরে।

এ সময় পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে জনারণ্যে ঠাঁইহীন পরিস্থিতি তৈরী হয়। মানুষে মানুষে ভারপুর জনসভাস্থলের আশে-পাশে বিজয় সরণীর হলিডে মোড় থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত এলাকায় মানুষের ভীড় দেখা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার পর কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রধানন্ত্রীকে নৌকা উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য প্রদানের আগে পরিবেশন করা হয় কক্সবাজারের একটি জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান।

সভা মঞ্চে বক্তব্য রেখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতা, ওবায়দুল কাদের, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, সিরাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুবুল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছির, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ড, হাসান মাহমুদ, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, আমিনুল হক আমিন, আশিকুর রহমান, ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, মাহবুব মোর্শেদ, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, আলমগীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ শহীদ, সিরাজুল ইসলাম বাবলা, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, তারেক বিন ওসমান, শামশুল আলম মন্ডল।

দুপুর বারোটার পরপর কোরআান, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় জনসভার আনুষ্ঠানিকতা। এর পর কক্সবাজারের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা একে একে বক্তব্য রাখছেন। ১১ টা থেকে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এর আগে বুধবার সাড়ে ১১ টার পর পর প্রধানমন্ত্রী উখিয়া উপজেলার সমুদ্র তীরবর্তী ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও উপকূলীয় সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ-২০২২ এর উদ্বোধন করেছেন।

কেএস 

Link copied!