Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

বারোমাসি তরমুজ চাষে সাফল্য

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

জুন ৯, ২০২৩, ০২:২৮ পিএম


বারোমাসি তরমুজ চাষে সাফল্য

প্রথমবারের মতো বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন এক শিক্ষিত বেকার যুবক। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের ভালো ফলনে খুশি তিনি। কৃষি বিভাগ বলছে তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকে এবং তাদেরকে সহায়তা করা হচ্ছে।

কৃষক, স্থানীয় এলাকাবাসী ও কৃষি অফিস জানায়, বারোমাসি কারিশমা জাতের তরমুজ জামালপুরের সরিষবাড়ী উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ করেছেন সাতপোয়া গ্রামের এক শিক্ষার্থীর । ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজে রাষ্ট্র বিজ্ঞান নিয়ে মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী আব্দুল আলীম সবুজ সরকার। বেকারত্ব দূর করতে সরিষাবাড়ী কৃষি অফিসের সহযোগীতায় নিজ গ্রামে ১০ শতাংশ জমিতে বারোমাসি কারিশমা তরমুজ চাষ করেছেন। মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে অর্ধলক্ষাধিক টাকা বিক্রিও করেছেন। আরো দেড় লক্ষাধিক টাকার তরমুজ বিক্রি করার আশা করছেন। এরআগে কৃষি অফিসের সহযোগীতায় বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষও করেছেন সবুজ।

কৃষি উপসহকারী শরীফুল ইসলাম লিটনের পরামর্শে বেশি লাভের আশায় প্রথমবারের মতো আবাদ করেছেন তরমুজ। ভালো ফলনের কথা জানান কৃষক সবুজ সরকার। চারা তৈরি থেকে ফল বিক্রি পযর্ন্ত সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে কুষি বিভাগ।

উপজেলায় প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষে তার সাফল্যের খবরে মানুষ দেখতে আসছেন তরমুজের ক্ষেত থেকে টাটকা তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে আগতরা। এদের মধ্যে অনেকেই কৃষি অফিস ও সবুজের কাছ থেকে সহযোগীতার চেয়ে তরমুজ চাষ করার কথাও জানান।

স্থানীয় মাসুম মিয়া জানান, এই তরমুজ চাষটি প্রথমবারের মতো দেখার জন্য করা হয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো ভালো ফলন হবে না। তবে এই মাটিতে আশানুরুপের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হয়েছে। আমাদের এলাকায় তরমুজ চাষ হওয়ায় আমরা গর্ভবোধ করছি, কারণ হাতের নাগালে যেকোন সময় নিজের হাত দিয়ে টাটকা তরমুজ খেতে ও বিক্রি করতে দেখছি।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখছি ভালো ফলন হয়েছে সেইসঙ্গে ফলের মিষ্টতাও বেশি। আমরাও কৃষি অফিসের সহযোগীতায় তরমুজ চাষ করবো।

আরেক কৃষক জানান, তরমুজ চাষ করার জন্য যদি কৃষি অফিস থেকে বীজ, চারা এবং সারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে সহযোগীতা করলে আমরা অনেক কৃষক সহজেই তরমুজ চাষে আগ্রহ করতো।

কৃষক সবুজ সরকার জানান, আমি কৃষি অফিসের সহযোগীতায় এই প্রথম তরমুজ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বেশি পরিমাণে ফলন পাবো। যেহেতু আমি নতুন তারপরও আল্লাহ্  তা’আলার রহমতে অনেকটা ভালো হয়েছে। কৃষি অফিস আমাকে অনেক সহযোগীতা করায় ভালো ফলনের মুখ দেখছি। আমার দেখাদেখি এলাকাবাসী, পাশ্ববর্তী কৃষকরা তরমুজ চাষ করার জন্য জমি তৈরি করা শুরু করছে। আমার ৩৫ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। এ থেকে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবো।

সার্বক্ষণিক পর্যলোচনাকারী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী শরীফুল ইসলাম লিটন জানান, সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের সবুজ তরুণ উদ্যোক্তা,সবজি চাষে খুব আগ্রহী ছিল। তাকে তরমুজ চাষে পরামর্শ দিলে সবুজ তরমুজ চাষ শুরু করে। চারা তৈরি থেকেই কৃষি অফিস থেকে আমরা নিবিড় পরিচর্যা করছি, আশা যা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। আশে পাশের কৃষকরাও আবাদ বৃদ্ধি করার আগ্রহ দেখাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপ সিংহ জানান, এটা উচ্চ মূল্যের অর্থকরী ফসল। আমরা কৃষকদের কারিগরি, উপকরণ সহায়তা দিচ্ছি, সেইসাথে কৃষকদের উৎসাহিত করছি তরমুজ চাষের জন্য। তরমুজ চাষের ফলে অন্য এলাকার তরমুজের উপর নিভর্রশীলতাও কমে যাবে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগীতা করা হবে ।

রাইসুল/এআরএস

Link copied!