ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বুধবার, ০৬ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাবর্ত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর উদযাপন

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

ডিসেম্বর ২, ২০২৩, ১১:৫৪ এএম

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পাবর্ত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর উদযাপন
কাপ্তাইয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্তি উদযাপন। ছবি: আমার সংবাদ

ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর আজ। এই চুক্তির ফলে পার্বত্য তিন জেলায় শান্তি ফিরেছে, ছোঁয়া লেগেছে উন্নয়নের। তবে এখনো সংঘাত পুরোপুরি থামেনি। মাঝে মধ্যেই অস্থির হয়ে উঠে পার্বত্য অঞ্চল। বিরোধের স্থায়ী সমাধানের জন্য পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবি জানালেন পাহাড়ি সংগঠনের নেতারা। দিবসটি উদযাপনে আজ শনিবার (২ ডিসেম্বর) পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-

কাপ্তাই (রাঙামাটি): পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে কাপ্তাই ৫৬ বেঙ্গলের কাপ্তাই জোনের আয়োজনে সকালে বাদ্যযন্ত্র সহকারে বর্ণাঢ্য র‍্যালি এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নূর উল্লাহ জুয়েল পিএসসি  শান্তির দূত পায়রা অবমুক্ত ও বেলুন উড়িয়ে র‍্যালির উদ্বোধন করেন। এরপর বর্ণিল সাজে সজ্জিত হয়ে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতিতে র‍্যালিটি কাপ্তাই সড়ক প্রদক্ষিণ করে নতুনবাজার হয়ে কাপ্তাই জোন সদর শহীদ আফজল হক হল রুমে এসে শেষ হয়।

পরে আলোচনা সভায় জোন অধিনায়ক ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কাপ্তাই সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই উপজেলা হেডম্যান এসিসোয়েশনের সভাপতি থোয়াই অং মারমা।

এসময় বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী মানুষের জন্য এই শান্তি চুক্তি ছিল একটি যুগান্তরকারি এবং মহৎ উদ্যোগ। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে পাহাড়ি বাঙালি জনগোষ্ঠীরা আজ এর সুফল ভোগ করছে। পাহাড়ে অনেক অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে এবং চলমান রয়েছে। পাহাড়ে যারা অশান্তি করে, সন্ত্রাসি কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতিহত করতে হবে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী সকলকে শান্তি চুক্তির শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এইসময় কাপ্তাই জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. খাইরুল আমিন পিএসসি, কাপ্তাই উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দীন, চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং, কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাহীনুর রহমান, কর্ণফুলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুনুর রহমান সহ জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, কারবারি, স্কুল শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কাপ্তাই জোনের সকল পদবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাজস্থলী (রাঙ্গামাটি) : রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই জোনের উদ্যোগে বাঙ্গালহালিয়া আর্মি ক্যাম্পের আয়োজনে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকালে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠান সূচনা করে বাঙ্গালহালিয়া আর্মি ক্যাম্পের মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।

বাঙ্গালহালিয়াতে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শান্তি চুক্তি’র ২৬ বছর পূর্তি উদযাপন। ছবি: আমার সংবাদ

শোভাযাত্রাটি বাঙ্গালহালিয়া বাজারের উত্তর দক্ষিণ দিক প্রদিক্ষণ করে মাঠে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়। অনুষ্ঠানে  উপস্থিত ছিলেন বাঙ্গালহালিয়া আমি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন আহসানুল কবীর সাকিব, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার নুরে শাহি, বাঙ্গালহালিয়া ডাক বাংলা অনাথ আশ্রম অধ্যক্ষ শ্রীমৎ উ. ক্ষেমাচারা মহাথের, বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদোমং মারমা, হেডম্যান প্রতিনিধি ও সাংবাদিক চাথোয়াইমং মারমা, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হারাধন কর্মকার, বাঙ্গালহালিয়া বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী শামসুল আলম, ইউপি সদস্য শিমুল দাশ,  কাইয়ুম হোসেন মিরাজ, বাপ্পী দেব, ছালমা আক্তার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমন্ডলী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীরা।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের বিরাজমান সমস্যা স্থায়ী সমাধান হয়েছে। আজ এ দিনে শান্তি চুক্তি সম্পাদন হয়েছে বলেই পার্বত্য অঞ্চলে রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে।

দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) : খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬তম বছর উদযাপন করা হয়েছে। শনিবার (২ ডিসেম্বর) দীঘিনালা জোনের ৪ই বেংগলের আয়োজনে সকালে উপজেলা লারমা স্কয়ার থেকে সকল স¤প্রদায়ের অংশ গ্রহনে একটি শান্তির‌্যালি ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে দীঘিনালা সেনা জোনের প্রশান্তি ক্যান্টিন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। 

পরে সেনা জোন সদরে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সভা করেন জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল রুমন পারভেজ পিএসসি।

আলোচনায় তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। বিগত সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, স¤প্রীতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দীঘিনালা সেনা জোন সবসময় এ অঞ্চলের সকল স¤প্রদায়ের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা ও সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার কাজে এগিয়ে এসেছে। এবং আজও পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৬ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দীঘিনালা সেনা জোন নানা আয়োজন বাস্তবায়ন করেছে।

ভবিষ্যতেও সকলের সহযোগিতায় দীঘিনালা সেনা জোনের এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. কাশেম বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তি দিবস স্বাক্ষরিত হয়েছিলো। শান্তিচুক্তির পরবর্তীতে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি, স¤প্রীতির পাশাপাশি ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। যার দৃষ্টিনন্দন উদাহরণ দীঘিনালায় ব্যাপক উন্নয়ন দৃশ্যমান।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দীঘিনালা সেনা জোন কতৃক ১নং কবাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে এবং মানিকছড়ি হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গরীব ও দুস্থ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্পেইন, ওষুধ বিতরণ ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। পরিশেষে জোন সদরের স্থানীয় হেডম্যান-কার্বারীদের নিয়ে সম্মেলন করা হয়।

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি):  ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেডের গুইমারার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামাল মামুন, বিএএমএস, এনডিসি, পিএসসি, জি বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পাহাড়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠির শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ এ অঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠির জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

এক সময়ে পিছিয়ে থাকা এ অঞ্চল চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। পাহাড়ের পদদেশে বসবাসরত জনগোষ্ঠির দৌড় গোড়ায় মোবাইল নেটওয়ার্টসহ আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা পৌছে গিয়েছে। শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে পাহাড়ে এখন উন্নয়নের সুবাতাস বৈছে।

গুইমারা রিজিয়ন কর্তৃক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালিত্তর গুইমারা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শান্তি চুক্তির ফলে রামগড় স্থল বন্দর নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। বদলে গিয়েছে এখানকার দৃশ্যপট।

তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়নের ফলে এখানকার মানুষ জানতে পারছে দেশ ও দেশের বাইরের সব খবরাখবর। এসময় সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ব্যাটালিয়নসহ সকল নিরাপত্তাবাহিনী একসাথে এ পাবর্ত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

এর আগে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডারসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। এসময় রিজিয়নের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার সকালে গুইমারার শহীদ লেঃ মুশফিক হাই স্কুল মাঠ থেকে র‌্যালিত্তর গুইমারা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে গুইমারা বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল এস এম আবুল এহসান, পিবিজিএম, পিএসসি, যামিনীপাড়া জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল আলমগীর কবির, পিএসসি, সিন্দুকছড়ি জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল সৈয়দ পারভেজ মোস্তফা, পিএসসিজি, গুইমারা উপজেলা চেয়ারম্যান মেমং মারমা, রামগড় পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলম কামাল, মাটিরাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামাল হোসেন মজুমদার, কলেজ শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার ও মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায় কাচাক ত্রিপুরা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও চুক্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, গরীব ও দুস্থ্য জনসাধারণের মঝে শীতবস্ত্রসহ মানবিক সহায়তা হিসেবে গুইমারা রিজিয়নের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিকেলে ৩টায় মানিকছড়ি রানী নিহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গুইমারা (খাগড়াছড়ি): খাগড়াছড়ি’র গুইমারা রিজিয়নে প্রতি বারের ন্যায় এবারো বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতায় পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি’তথা ‘শান্তিচুক্তি’র ২৬তম বর্ষপূর্তি উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন গুইমারা রিজিয়ন নানাবিধ কর্মসুচীর আয়োজন করে।

ঐতিহাসিক এই দিবসে গুইমারা রিজিয়নের আয়োজিত কর্মসুচীর মধ্যে ছিল,সম্প্রীতি র‌্যালি, আলোচনা সভা, মানবিক সহায়তা, বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা এবং  প্রীতি ফুটবল খেলা। গুইমারা রিজিয়নের আওতাধীন সকল জনসাধারন ধর্ম, জাতি ও সংস্কৃতি নির্বিশেষে আয়োজিত কর্মসুচীতে স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। শহীদ লে: মুশফিক হাইস্কুল মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য একটি র‌্যালি বের করা হয়।

র‌্যালিতে কাধে কাধ মিলিয়ে সকল জনসাধারন অংশগ্রহণ করে। র‌্যালিটি গুইমারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালি সমাপনান্তে গুইমারা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। গুইমারা বিজিবি সেক্টর কমান্ডারসহ অতিথিদের সাথে নিয়ে শান্তির প্রতিক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে বর্ষপূর্তিও উদ্বোধন করেন,২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড গুইমারা রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামাল মামুন বিএএমএস,এনডিসি,পিএসসি,জি।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড গুইমারা রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামাল মামুন বিএএমএস, এনডিসি, পিএসসি, জি। অন্য অতিথিদের মধ্যে গুইমারা বিজিবি সেক্টর কমান্ডার, জোন কমান্ডার যামিনীপাড়া, জোন কমান্ডার সিন্দুকছড়ি, রামগড় পৌর মেয়র, গুইমারা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেমং মারমা, অধ্যক্ষ মাটিরাঙ্গা ডিগ্রী কলেজসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভায় রিজিয়ন কমান্ডার পার্বত্য শান্তি চুক্তির সাফল্য হিসেবে পার্বত্যাঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড এবং পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি,সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ধারা বাজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর অবদান বর্ণনা করে বলেন,গুইমারা রিজিয়নে নিয়োজিত সেনা, বিজিবি, আনসার, পুলিশসহ সকল নিরাপত্তা বাহিনী শান্তি সম্প্রীতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এধারা অব্যাহত থাকবে।

আলোচনা শেষে রিজিয়ন কমান্ডার,সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মানবিক সহায়তা,বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম এর উদ্বোধন করেন এবং গরীব ও দুস্থ জনসাধারণের মাঝে শীতবস্ত্রসহ বিভিন্ন মানবিক সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও, দিনব্যাপী দুস্থ জনসাধারণের মাঝে বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা হয়।

থানচি (বান্দরবান): সারাদেশের মত বান্দরবানের থানচিতে ৩৮, বিজিবি ব্যাটালিয়ন, বলিপাড়া জোন আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচি মাধ্যমে ২৬তম শান্তিচুক্তি বর্ষপূর্তি দিবস পালন করা হয়েছে। প্যারিজাত প্রাঙ্গনে ৩৮, বিজিবি ব্যাটালিয়ন, বলিপাড়া জোন আয়োজনে আনন্দ র্যালি, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, মশারী ও শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। 

২৬ বছর পূর্বে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় বহু প্রতিক্ষিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও দিবসটি উপলক্ষে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বলিপাড়া জোন (৩৮ বিজিবি) আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করা হয়।

বলিপাড়া ব্যাটালিয়ন (৩৮ বিজিবি) প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে বাংলাদেশের সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা, পাহাড়ী-বাঙ্গালী সম্প্রীতি ও সম্পর্ক উন্নয়নসহ অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাস দমন ও মাদক নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে এসেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের ২৬তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে বলিপাড়া ব্যাটালিয়ন (৩৮ বিজিবি) এর ব্যবস্থাপনায় অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ তৈমুর হাসান খাঁন, (পিএসসি, এসি) এর নেতৃত্বে স্থানীয় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের সমন্বয়ে আনন্দ র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়।

পরবর্তীতে মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে ১৫০ জন দুস্থদের মধ্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ বিনামূল্যে ঔষধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়া অধিনায়ক কর্তৃক ২৫০টি পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র ও মশারী বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে কর্মসূচীতে অংশগ্রহণকারী সকলের মাঝে প্যাকেট খাবার সরবরাহ করা হয়।

অনুষ্ঠানের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপ অধিনায়ক আদনান,  ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, থানচি প্রেসক্লাব সভাপতি, মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও কেঙ্গু মৌজা হেডম্যান, ক্যসাউ মারমা, থাইক্ষ্যং মৌজা হেডম্যান, মংপ্রু মারমা, সেকদু মৌজা হেডম্যান, বাথোয়াইচিং মারমা, মেম্বার অংসিংম্যা মারমা, মেম্বার সজল কর্মকার। এছাড়া কারবারীবৃন্দ, প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্যাঞ্চল, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তিচুক্তির ২৬ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ ও সেনা রিজিয়নের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও ক্ষদ্র্র নৃ-গোষ্ঠীর শিল্পীদের বর্ণিল ডিসপ্লে সবাইকে মুগ্ধ করে। 

খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী এর সভাপতিত্বে খাগাড়ছড়ি স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহতাশিম হায়দার চৌধুরী।

এসময় পার্বত্য চট্রগ্রামের  সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মুক্তা ধর, পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জোনায়েদ কবীর সোহাগ,খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শানে আলম,পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া,পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য  হিরনজয় ত্রিপুরা,পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য শতরূপা চাকমা প্রমুখ।

স্টেডিয়াম থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পরে ইনস্টিটিউট হল রুমে পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহতাশিম হায়দার চৌধুরী।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের মাইফলক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সরকারের আন্তরিক প্রয়াসের কারণে পার্বত্যাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

পাহাড়ে প্রায় দুই দশকের সংঘাত বন্ধে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি সই হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হাতে গেরিলা নেতা সন্তু লারমার অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।

আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলেদেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহতাশিম হায়দার চৌধুরী। 

বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট এলাকায় ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬তম স্বাক্ষর দিবস উপলক্ষে বাঘাইহাট জোন (মাইটি সিক্সার্স) ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে পাহাড়ি বাঙালিদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‍্যালী, আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। 

বাঘাইহাট জোন মাঠ হতে বর্ণাঢ্য শান্তি-পূর্ন র‍্যালী বের হয়ে বাঘাইহাট বাজার অতিক্রম করে ৩৬নং সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ ঘুরে র‍্যালিটি পূনরায় বাঘাইহাট জোনের মাঠে সমাপ্তি হয়। বাঘাইহাট জোন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল তৌহিদুর রহমানের নেতৃত্বে র‍্যালীতে সাজেক ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থরের পাহাড়ি বাঙালী সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী অংশগ্রহণ করে।

র‍্যালি শেষে জোন দপ্তরে এক শান্তি শৃঙ্খলা সভা অনুষ্ঠিত হয়ে, সভায় জোন অধিনায়ক বলেন অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামকে শান্ত করার লক্ষে ১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি করা হয় এর ফলে পাহাড়ে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে, পার্বত্য অঞ্চলে যারা শান্তি বিনষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে দমন করতে হবে। কারন আমাদের দেশে কোন সন্ত্রাসীর ঠাই নাই। একই সাথে তিনি বলেন পার্বত্য জনপদের অসহায় দুঃস্থ মানুষের কল্যাণে সর্বদা নিয়োজিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী৷ সভায় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি মেম্বার, হেডম্যান, কার্বারী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

জোন অধিনায়ক হেডম্যান, কারবারি ও এলাকার  গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ  থেকে তাদের নিজ নিজ এলাকার সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে  তারা  বলেন  পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর  শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে  বাংলাদেশ সেনাবাহিনী  শান্তি সম্প্রীতি, রাস্তা, স্কুল, কলেজ, পর্যটন নগরীসহ  উন্নয়নের লক্ষ্যে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছে। তারই  ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিক নির্দেশনায়  বাঘাইহাট সেনা জোনের  দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় শান্তি ও সম্প্রীতি  উন্নয়ন ঘটছে।

পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৬ তম সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বাঘাইহাট জোন কর্তৃক হতদরিদ্র ও দুস্থ পাহাড়ী বাঙ্গালী ২৭০ জন রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ করেন বাঘাইহাট জোনের আরএমও ক্যাপ্টেন মুহাইমেন উর রশীদ ,এএমসি। একই সাথে বাঘাইহাট জোন সদর প্রশিক্ষন মাঠে পাহাড়ি-বাঙ্গালী শতাধিক পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন জোন অধিনায়ক।

এআরএস

Link copied!