ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের উপর দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের তারাইল হাজী ইরফান উদ্দিন পেট্রোল পাম্পের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক আধা ঘন্টা বন্ধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানবাহন আটকা পড়ে। প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারাইল ঈশ্বরদী গ্রামের মোখলেসুর রহমান সুমন মাতুব্বরের সাথে একই গ্রামের ফারুক তালুকদার ও সাইদুল শিকদারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দুই গ্রুপের সাথে এর আগেও কয়েক দফা হামলা, মামলা ও সংঘর্ষ হয়েছে। 

এর সূত্র ধরে সোমবার সকালে তারা ঈশ্বরদী গ্রামের আতাহার চৌধুরীর স্ত্রীর মৃত্যুবরণ করলে সেখানে সুমনের লোকজন জানাযার জন্য সেখানে উপস্থিত হয়। তখন ফারুক তালুকদার ও সাইদুল শিকদারের লোকজন সুমন মাতুব্বরের দলের রাজিব মাতুব্বরকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে ।

এই সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার দুই গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ডাল, শরকি, রামদা ও ইটপাটকেল নিয়ে হাইওয়ে এক্সপ্রেস সড়কের উপর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন লোক আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সুমন মাতুব্বরের হাজী ইরফান উদ্দিন ফিলিং স্টেশন নামের ১টি পেট্রোল পাম্প, ৫টি মোটরসাইকেল, ২টি দোকানে হামলা ও ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। 

এসময় হামলাকারীরা পেট্রোল পাম্প থেকে কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে। খবর পেয়ে ভাঙার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ঘটনা স্থল থেকে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে পেট্রোল পাম্পের মালিক মোকলেসুর রহমান সুমন জানান, আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজী জাফরউল্লার নৌকা মার্কার নির্বাচন করেছি এবং আগামী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করব। আমাদের তারাইল ঈশ্বরদী গ্রামের ফারুক তালুকদার ও সাইদুল শিকদারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। 

আমার সম্মান নষ্ট ও ক্ষতি করার জন্য আমার লোকজনকে ধরে নিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে। কয়েকজনকে মারধর করেছে। আমার পেট্রোল পাম্পটি ব্যাপক ভাঙচুর করেছে, ৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। পেট্রোল পাম্প থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ফারুক তালুকদারের লোকজন নিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে ফারুক তালুকদার বলেন, সুমনের সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। আমাদের লোকজন পেলেই সুমনের লোকজন মারধর করে। আজকে আমার একজন লোককে মারার কারণে মারামারি সংঘর্ষ হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক(এস আই) মনির হোসেন জানান, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন লোক আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল-রশিদ বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশের ফোর্স  নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এইচআর