Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪,

কালীহাতিতে শঙ্কায় দিন কাটে গ্রামবাসীর, নীরব ভুমিকায় থানা পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

এপ্রিল ২৯, ২০২৪, ১২:৫২ পিএম


কালীহাতিতে শঙ্কায় দিন কাটে গ্রামবাসীর, নীরব ভুমিকায় থানা পুলিশ

টাঙ্গাইলের কালীহাতি উপজেলার সল্লা ইউনিয়নের ভাওয়াল গ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় দিন কাটছে গ্রামবাসীর। গ্রামটিতে গড়ে ওঠা একটি ক্লাবকে কেন্দ্র করেই এমন আশঙ্কা করছেন তারা। 

ওই ক্লাবের সদস্যদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন থেকে শুরু করে চুরি-ডাকাতি, প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি কিংবা দ্বন্দ্বে জড়ানোর অভিযোগও করছেন কেউ কেউ। তাদের এসব কার্যক্রমে বাঁধা দিয়ে পরবর্তীতে সংঘবদ্ধ হামলারও শিকার হচ্ছেন বাঁধা প্রদানকারী ব্যক্তি। যদিও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভূমিকা নীরব বলছেন বাসিন্দারা।

জানা গেছে, ওই ক্লাবটির নাম ‘ভাওয়াল পশ্চিমবঙ্গ ফাইট ক্লাব’। ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪০-৪৫ জন। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্যরাও এই ক্লাবের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। ক্লাবের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধেই রয়েছে চুরি-ডাকাতি, মাদক সেবন ও বিক্রিতে জড়িত থাকার অভিযোগ। এসবে বাঁধা দিলেও হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। যখন তখন যে কারোর সঙ্গেই জড়িয়ে পড়ছে সংঘর্ষেও।

গেল ঈদুল ফিতরের দিন রাত আনুমানিক আটটার দিকে চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় মোশারফ হোসেন (৪৫) নামের এক ব্যক্তির ওপরও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ক্লাবটির সদস্যরা। হামলার কারণ হিসেবে জানা গেছে, আমজাদ হোসেন চেয়ারম্যান নামক পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে মাদকের আসর বসায় ফাইট ক্লাবের সদস্যরা। এতে বাঁধা প্রদান করাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মোশারফ হোসেনের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা চালায় তারা। তবে এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটানোর পরও থানা পুলিশের নীরব ভুমিকায় দিনকে দিন কোনঠাঁসা হয়ে পড়ছে গ্রামটির সাধারণ বাসিন্দারা। একইসাথে বাড়ছে তাদের শঙ্কাও। এদিকে মোশারফ হোসেনের ওপর হামলার ঘটনার পরদিন সকালেই লিমন নামের এক কিশোর রামদাসহ ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হলেও রহস্যজনক কারণে নীরব ভুমিকায় রয়েছে থানা পুলিশ।

এসব বিষয়ে সল্লা  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীমের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে একাধিকবার তার মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তাতে সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল খালেকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ওরা সংখ্যায় বেশী। সরেজমিনে এলাকায় আসলেই কেবল দেখতে পারবেন; তারা কি করে। আমাদের এখানে একটা চেয়ারম্যান বাড়ি আছে, এমন কোনো অপকর্ম নেই তারা সেখানে করে না। ঈদুল ফিতরের দিনও একটা লোককে তারা হাতুড়ি-রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে। তিনি বলেন, এখনও তারা রাস্তায় পাশে বসে ৫-৬ জন করে বসে মাদক সেবন করছে। বাইকে করে বেপরোয়া ঘুরাফেরা করে রাতের বেলায়। এসব নিয়ে বহুবার বসেছি, কোনো কাজ হয় না।

জানতে চাইলে কালীহাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক পালটা প্রশ্ন রেখে বলেন, কিশোর গ্যাং কি? কিশোর গ্যাং কাকে বলে? তিনি বলেন, সাংবাদিকরা লিখতে লিখতেই কিশোর গ্যাং ... করে। কিশোর গ্যাং সাংবাদিকরা বানায়। একটা লোক কি কিশোর বয়স পার করবে না। কিন্তু ১৮ বছর বয়সী কেউ যদি রামদা হাতে নিয়ে ফেসবুকে ছবি দিয়ে কাউকে হুমকি দেয় তাকে কি বলবেন এমন প্রশ্নে তিনি জানতে চান কাকে হুমকি দেয়া হয়। হুমকির বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, তাহলে আপনি রিপোর্ট করেন। সমাধান কি এটাই- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লোকাল চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এটা দু-একদিনের মধ্যে সমাধান হবে। প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আপনাকে যে জানিয়েছে তাকে বলেন তুমি যে মাদবরি করো, এটা এলাকায় মিউচুয়ালের চেষ্টা চলতেছে। তুমি ঝামেলার সৃষ্টি করতেছো কেন?

আরএস

Link copied!