ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

ঝিনাইদহের সাব্বির ও প্রকৌশলী রাকিবের মায়েদের কান্না যেন থামছেই না

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

জুলাই ২৯, ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম

ঝিনাইদহের সাব্বির ও প্রকৌশলী রাকিবের মায়েদের কান্না যেন থামছেই না

সাব্বির হোসেন (২৩) ও প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান (২৯) কোটা আন্দোলনে নিহত। এদের পরিবারের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমারতো হয়েই তার পরেও মায়েদের কান্না যেন থামছেই না। ছেলে হারানোর শোকে তাদের চোখে নিদ্রা নেই। প্রতিটা রাত যেন দুই পরিবারের কাছে অবসানহীন অপেক্ষার প্রতিচ্ছবি। সারাক্ষণ তারা নিহত ছেলেদের স্মৃতি নিয়ে আহাজারি করছেন। 

ঝিনাইদহের সন্তান পেশায় দুজনেই বেসরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। কোটা আন্দোলনের সময় ঢাকায় পৃথক স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তারা। এরমধ্যে শৈলকূপা উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের আমোদ আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন গত ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় ওষুধ কিনতে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন ১৯ জুলাই সাব্বিরের লাশ সকাল ১০টার দিকে মীর্জাপুর গ্রামে দাফন করা হয়। 

সাব্বিরের চাচাতো ভাই তরিকুল জানান, উত্তরার ১৩ নং সেক্টরে অর্গান লিমিটেড কেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন সাব্বির। ঘটনার সময় তিনি ওষুধ কিনতে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। 

তিনি আরো জানান, সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ২৩ বছরের যুবক সাব্বিরকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তাদের পরিবার। একমাত্র বোন সুমাইয়া খাতুন জানান, তার ভাই তো কোন দল করতেন না। তিনি চাকরি করে তাদের সংসার চালাতেন। তাহলে কেন এই নিরীহ ছেলেটিকে মারা হল? এখন কে তাদের সংসার চালাবেন? কার কাছে বিচার চাইবেন তারা? 

মা রাশিদা খাতুন জানান, সাব্বিরের পিতা অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারে না। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সাব্বির সংসারের হাল ধরেছিলেন। সাব্বিরের মৃত্যুতে গোটা পরিবার এখন অসহায়। তিনি সন্তান হত্যার বিচার চান। 

পিতা আমোদ আলী বলেন, তাঁর ছেলে কোনো রাজনীতি করতেন না। বাঁচার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন চাকরি করতে। সেখানে সাব্বির কোনো মিছিল-মিটিংয়ে যায়নি। জ্বর হওয়ায় অসুস্থ শরীরে ওষুধ কিনতে বাইরে যান। তিনি তো আন্দোলনে ছিলেন না। তাকে কেন গুলি করে মারা হলো? 

এদিকে ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার সাবেক বিমান বাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিকীর ছেলে বুয়েট থেকে পাশ করা প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ১৯ জুল্ইা শুক্রবার রাতে গুলিতে নিহত হন। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুর ১০ নং সেক্টর এলাকায় পথচারি এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। মিরপুর-৬ এলাকায় ডা. আজমল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাকিব লন্ডন ভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি টাইগার রিস্ক ম্যানেজমেন্টে চাকরি করতেন। শনিবার ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ায় প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনশান নীরবতা। রাকিবুলের ব্যবহারিক জিনিসপত্র নিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত মা হাফিজা খাতুন ক্রন্দন করছেন। পিতা আবু বকর বিমান বাহিনীর সাবেক মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিক বাকরুদ্ধ। বড় ভাইয়ের ছেলে ছোট্র শিশু রাফসান “ছোট বাবা” “ছোট বাবা” বলে সারা ঘর খুঁজে বেড়াচ্ছেন চাচাকে। মৃত্যুর কিছুক্ষন আগে রাকিবের সঙ্গে ছোট্ট ভাজিতা রাফসানেরও কথা হয়েছিল।

নিহত হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের সঙ্গে কথা হয় মা হাফিজার। বলেছিলেন তিনি একটি গ্যারেজের মধ্যে বসে আছেন। রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তার ছেলে চিরঘুমে শায়িত হন। শুক্রবার এশার নামাজ পড়ে ফোন দেন পিতা আবু বকর। কিন্তু ফোন বাজলেও আর কেউ ধরেনি। রাত ১১টার দিকে ছেলের ফোন থেকে কেউ একজন মৃত্যুর খবর জানান। ভোর রাতে রাকিবের বন্ধু ফয়সাল ও পিয়াস লাশ ঝিনাইদহ শহরের পৌঁছে দেন। 

মা হাফিজা বেগম জানান, তার ছোট ছেলেকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল। মা বাবাকে কাছে রাখার জন্য ঢাকায় বড় ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। 

প্রতিবেশি তাছলিম উদ্দীন জানান, নিহত রাকিব এলাকায় খুবই ভদ্র হিসেবে পরিচিত। তিনি জীবনে কোন সংগঠন করেছেন কিনা তা মহল্লাবাসির জানা নেই। একটি ভদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবে সবাই রাকিবকে চিনতেন। রাকিবের মৃত্যুতে শহরের চাকলাপাড়া ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার বাসিদেবপুর গ্রামের মানুষ শোকে স্তদ্ধ হয়ে আছেন। মৃত্যুর ৮দিন পরও সরকারি ভাবে পরিবারটির কেউ খোঁজ নেননি বলে জানান রাকিবের পিতা আবু বকর।

আরএস


 

Link copied!