Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫,

ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস-ধোঁয়ায় পুড়ল ১৫ একর জমির ধান

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

মে ৩, ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম


ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস-ধোঁয়ায় পুড়ল ১৫ একর জমির ধান

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চারটি ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ার কারণে ১৫ একর জমির ধান পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বহুরিয়া ও পাথালিয়াপাড়া এলাকায়।

জানা গেছে, উপজেলার বহুরিয়া ও গোড়াই ইউনিয়নের তিন ফসলি জমিতে আরবিসি, বাটা, এমএসবি, এইচইউবি, বিএন্ডবি, রান ও সান নামে ৭টি ইটভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব নতুন ইটভাটার কোনো অনুমোদন না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিকবার মোটা অঙ্কের জরিমানা করেছে, চিমনি গুড়িয়ে দিয়েছে এবং বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে।

সর্বশেষ, পরিবেশ অধিদপ্তর ছয়টি ইটভাটার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তবুও, মালিকরা অস্থায়ী চিমনি তৈরি করে অবৈধভাবে ইট প্রস্তুত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী শিরিন সুলতানা, জুয়েল মিয়া, রাজিয়া, খোরশেদ সিকদার ও তাসলিমা বেগম জানান, এমএসবি, আরবিসি, বাটা ও এইচইউবি ইটভাটাগুলোর আগুন নেভানোর সময় নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ায় তাদের ১৫ একর জমির ধান পুড়ে গেছে। কয়েকদিন পরেই এসব ধান ঘরে তোলার কথা ছিল। 
তারা আরও জানান, ধানের ক্ষতি হলেও ইটভাটা মালিকরা যে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিষাক্ত ধোঁয়ায় শুধু ধানই নয়, এলাকার বিভিন্ন গাছের ফলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রজেক্টগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল, বদু, আনন্দ রাজবংশী, বাছেদ ও শরিফদের প্রকল্প।

বাটা ইটভাটার মালিক আকবর জানান, তার ভাটার গ্যাসে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, তবে তিনি কত টাকা শতাংশে দিয়েছেন তা উল্লেখ করেননি।

এমএসবি ইটভাটার মালিক ফরিদ জানান, তিনি এখন পর্যন্ত ১২ একর জমির ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। এর মধ্যে ৫৩৯ শতাংশ জমির জন্য শতাংশপ্রতি ৫০০ টাকা এবং কিছু ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া বলেন, “বিষয়টি শুনেছি, তবে আমার এখতিয়ার নেই। প্রশাসন যা প্রয়োজন মনে করবে, সেই ব্যবস্থা নেবে।”

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন জানান, কৃষি বিভাগের অনুমতি ছাড়াই এসব ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। বিষাক্ত গ্যাসে ধান পুড়ে যাওয়ার তথ্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে পেয়েছেন। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের সভায় ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে ওই জমিতে কৃষি আবাদ কঠিন হয়ে পড়তে পারে। কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।

ইএইচ

Link copied!