সিংগাইরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ: দুই নবজাতকের মৃত্যু

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করার ফলে পরপর দুই নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শুক্রবার ও শনিবার সিংগাইর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত সিংগাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। 

নবজাতকদের শরীরে ‘টেজিড’ নামে মেয়াদোত্তীর্ণ ২৫০ মিলি ইনজেকশন দেয়ার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার সিংগাইরের মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী এবং শায়েস্তা ইউনিয়নের চর লক্ষীপুর এলাকার মো. ফিরোজের স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। বিকেলে অপারেশনের মাধ্যমে তারা দুজন পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরে দুই নবজাতকের শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ ‘টেজিড’ ইনজেকশন পুশ করা হয়। ইনজেকশন দেয়ার পর তাদের হার্টবিট কমে যায়। এক নবজাতক ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে এবং অপরজন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

মো. ফিরোজ বলেন, “ডাক্তার শামিমা রহমান আমার স্ত্রীর অপারেশন করেন। আমি পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছি। আজ সকালে নার্স মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন, যা পুশের এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছেলের মৃত্যু হয়।”

মাজেদুল ইসলাম বলেন, “জন্মের পর আমার ছেলে খুব সুস্থ ছিল। আমরা দেখেছি নার্সরা মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর আমার ছেলের হার্টবিট কমে যায় এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। পরপর দুই নবজাতকের মৃত্যুতে আমরা হতবাক। এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটি হত্যা। আমরা হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

সিংগাইর ক্লিনিক হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার বিষয়ে বিশেষ কিছু জানাতে রাজি হননি। 

স্থানীয়রা জানান, এই হাসপাতালে আগে এমন ঘটনার ঘটনা ঘটলেও টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। স্থানীয়রা হাসপাতালটির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

সিংগাইর ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মিজানুর রহমান লিটন বলেন, “এটি একটি দুর্ঘটনা, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাফছান রেজা বলেন, “এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। দ্রুত ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম বলেন, “মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশনে নবজাতকের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

ইএইচ