Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫,

ফেনীতে কোরবানির পশুর সংকট নেই

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, ফেনী 

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, ফেনী 

মে ২৫, ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম


ফেনীতে কোরবানির পশুর সংকট নেই

ফেনীতে এবার কোরবানির পশুর সংকট নেই। জেলার পশু মজুত চাহিদার তুলনায় বেশি। তবে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ এবং গোখাদ্যের অতিরিক্ত দামের কারণে ঈদে গবাদি পশুর ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা।

পবিত্র ঈদুল আজহা আর মাত্র ১২-১৩ দিন দূরে। ইতোমধ্যে কোরবানির পশু বেচাকেনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খামারি, ব্যাপারী ও ক্রেতারা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফেনীতে গত কয়েক বছরের মতো এবারও বিপুলসংখ্যক পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ফলে পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। চলতি বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৮২ হাজার ৩৩৬টি, আর মজুদ রয়েছে ৮৭ হাজার ২২৭টি। এর মধ্যে ৬৯ হাজার ৩৬০টি গরু, ১ হাজার ৬৬৭টি মহিষ, ১৩ হাজার ২৪৩টি ছাগল ও ৩ হাজার ১৪৭টি ভেড়া।

ক্রেতারা জানান, গত কয়েক বছর ধরে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী গরুর দাম বাড়িয়ে থাকেন। 

তারা বলেন, বৈধ পথে বিদেশি গরু আমদানি হলে বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ক্রেতারাও উপকৃত হবেন।

পাঠানবাড়ি এলাকার হাসিনা এগ্রোর মালিক আরাফাত খান বলেন, “সখের বসে ৮ বছর ধরে গবাদি পশু পালন করছি। আমাদের খামারে প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত পশু—সবুজ ঘাস, খড়, ভুষি ও খৈল খাওয়ানো হয়। এতে ক্রেতারা ভেজালমুক্ত পশু কোরবানি দিতে পারবেন।”

তিনি আরও বলেন, খামারিদের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক গরু চুরি। “গত বছর এক রাখালকে হত্যা করে ৩টি গরু এবং অস্ত্রের মুখে আরেক খামার থেকে ১৩টি গরু ডাকাতি হয়। নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সোনাগাজীর খামারি জসিম উদ্দিন জানান, তার খামারে এ বছর প্রায় ২০০টি গরু রয়েছে। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর মূল্য কিছুটা বেশি হবে। তবে সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ বন্ধ থাকলে খামারিরা লাভবান হবেন।

পরশুরামের খামারি আবদুল মতিন বলেন, “২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় আমাদের বড় ক্ষতি হয়েছিল। এবার সব অনুকূলে থাকলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। তবে কোরবানির শেষ সময়ে বাইরের গরু এলে আবার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।”

ফেনী বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, “অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু না আসার বিষয়ে বিজিবি সতর্ক রয়েছে। গত তিন মাসে ফেনীর বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে ১৭৬টি ভারতীয় গরু আটক করা হয়েছে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “জেলায় এবার কোরবানির পশুর কোনো সংকট নেই। প্রায় পাঁচ হাজার তালিকাভুক্ত খামারির বাইরে আরও অনেকে ব্যক্তিগতভাবে পশু পালন করছেন। পশুর সরবরাহ বেশি থাকায় বাজার খামারি ও ক্রেতা উভয়ের অনুকূলে থাকবে বলে আশা করছি।”

পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “কোরবানির ঈদকে ঘিরে গরু চুরি ও ডাকাতির মতো অপরাধ ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রতিটি থানায় অতিরিক্ত টহল ও নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “বিজিবি ও পুলিশকে সহায়তা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

ইএইচ

Link copied!