পূর্বাচল (গাজীপুর) প্রতিনিধি
জুন ১১, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
পূর্বাচল (গাজীপুর) প্রতিনিধি
জুন ১১, ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (জিসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের পলাগাছা এলাকায় পড়ে রয়েছে অত্যাধুনিক একটি উদ্ধারযান ‘ল্যাডার মরিতা’, যার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। দুর্যোগকালীন অগ্নি নির্বাপন ও উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য আনা হলেও, আনার পর থেকে একবারের জন্যও এটি ব্যবহার হয়নি।
জাপানি প্রযুক্তিতে নির্মিত এই উদ্ধারযানটি ১৪ তলা ভবন পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। অথচ বর্তমানে এটি রোদ-বৃষ্টি ও ধুলাবালিতে পড়ে থেকে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। নেই কোনো রক্ষণাবেক্ষণ, নেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরও নেই এদিকে।
ব্যক্তিগত অর্থায়নে আনা, এখন ব্যবহারের বাইরে
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও অর্থায়নে বিদেশ থেকে উদ্ধারযানটি আমদানি করেন। কিন্তু তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই এই যানটির কোনো খোঁজখবর রাখা হয়নি। ফলে বছরের পর বছর পড়ে থেকে এটি এখন কার্যকারিতা হারাতে বসেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজীপুর একটি ঘনবসতিপূর্ণ ও শিল্পপ্রধান নগরী হওয়ায় এ ধরনের উদ্ধারযান অগ্নিকাণ্ড, ভবনধস বা অন্যান্য দুর্যোগে প্রাণ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারত। অথচ তা আজ অবহেলা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে ধ্বংসের পথে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বললে তিনি এটিকে সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। অন্যদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক শরিফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এ ধরনের উচ্চমূল্যের যন্ত্র বাংলাদেশে হাতে গোনা কয়েকটি রয়েছে। এটি পড়ে থেকে নষ্ট হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি।”
দুই প্রশাসনের এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—এই অবহেলার দায় আসলে কে নেবে?
নগরবাসী বলছেন, “এই যন্ত্রটি কেবল গাজীপুরের জন্য নয়, আশপাশের অঞ্চলগুলোতেও দুর্যোগের সময় ব্যবহৃত হতে পারত। অথচ তা আজ পড়ে রয়েছে অচল হয়ে। দ্রুত উদ্যোগ না নিলে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যাবে।”
তাদের দাবি, বিষয়টি কেবল স্থানীয় সরকারের নয়—কেন্দ্রীয় সরকারেরও নজরে আনা প্রয়োজন। তারা চান, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চমহলে বিষয়টি উপস্থাপন করে উদ্ধারযানটির দ্রুত মেরামত ও সচল ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হোক।
ইএইচ