মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা
জুন ১২, ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম
মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা
জুন ১২, ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকেরা সারের জন্য ছুটছেন শহরে। অথচ ডিলারদের থাকার কথা ইউনিয়নেই। ডিলাররা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ইউনিয়নে বৈধতার প্রমাণ রাখলেও সারের বস্তা তুলে নিয়েছেন পৌর এলাকায়। ফলে সরকার নির্ধারিত দামে ও সময়মতো সার পাচ্ছেন না কৃষকেরা—বাধ্য হয়ে পড়ছেন ভোগান্তিতে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বিসিআইসি ও বিএডিসির মাধ্যমে ইউনিয়নভিত্তিক ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। উদ্দেশ্য ছিল, প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকেরা যেন নিজ এলাকায় সহজে, নির্ধারিত দামে সার পান। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ ডিলারের কার্যক্রম কেন্দ্রীভূত হয়ে গেছে শহরে। ইউনিয়নে কেবল একটি সাইনবোর্ড, সামনে কয়েক বস্তা সার—আর কিছুই নেই।
কৃষকেরা জানান, মৌসুমে ইউরিয়া, ডিএপি, টিএসপি ও এমওপি সারের ব্যাপক চাহিদা থাকে। সরকার নির্ধারিত দামে এসব সার বিক্রির কথা—ইউরিয়া ১,৩৫০ টাকা, ডিএপি ১,০৫০, টিএসপি ১,৩৫০ এবং এমওপি ১,০০০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে অতিরিক্ত ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাম গুনতে হচ্ছে। তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে পরিবহন খরচ।
হারদি ইউনিয়নের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ইউনিয়নে ডিলার আছেন, কিন্তু সার নেই। পৌর এলাকায় গিয়ে কিনি, তাও আবার অতিরিক্ত টাকা দিয়ে।
উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৯৬ হাজার তালিকাভুক্ত কৃষক রয়েছেন। তাঁরা ২৯ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেন। চাহিদা অনুযায়ী ফসল উৎপাদন হলেও সময়মতো সার না পেলে ফলন ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষকদের অভিযোগ, কিছু ডিলার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। ইউনিয়নের কৃষকদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে শহরে গিয়ে সার কিনতে, যেখানে পরিবহন খরচও আলাদা। অনেকে ফিরে আসছেন খালি হাতে।
এক ডিলার বলেন, আমরা ইউনিয়নে কার্যক্রম শুরু করতে চাই, কিন্তু গুদাম না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কেউ যদি নিয়ম ভেঙে বেশি দামে বিক্রি করে, তার দায় সে-ই নেবে।
আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, ‘ডিলারদের নিজ নিজ ইউনিয়নে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, কৃষকের অধিকার রক্ষা করতে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। সময়সীমা পেরিয়ে গেলে নিয়ম না মানা ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রয়োজনে ডিলারশিপও বাতিল করা হবে।
বিআরইউ