জাহিদ খন্দকার, গাইবান্ধা
আগস্ট ২০, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার থেকে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সাথে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ মাওলানা ভাসানী সেতুর ফলক ও ম্যুরাল উন্মোচন করে শুভ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার দুপুরে সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে চৌরাস্তার মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেতু উদ্বোধনোত্তর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সভায় উপস্থিত ছিলেন— স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ মিয়া, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহামদ, গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস, স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা পর্যায়ের বিভাগীয় কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ আনন্দে মেতে উঠেছে। গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের চিলমারিবাসী এলাকায় লাখাধিক মানুষ সেতু উদ্বোধনের উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রকল্পের তথ্য
মাওলানা ভাসানী সেতুটি এলজিইডির একটি বৃহৎ প্রকল্প।
সৌদি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করেছে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রায় ৯৮৫ কোটি টাকা।
সেতুতে রয়েছে ২৯০টি পাইল, ১৫৫টি গার্ডার, ৩০টি পিলার ও ২৮টি স্প্যান।
সেতুর দুই পাশে নদী শাসনের জন্য দেড় কিলোমিটার করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংযোগ সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি ব্রিজ-কালভার্ট।
অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১৩৩ একর জমি।
সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। যদিও ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুর ফলক উন্মোচন করা হয়েছিল, প্রকল্পের বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে ২০২৪ সালের জুনে অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়। সম্প্রতি সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
সেতু উদ্বোধনের ফলে দুই জেলার সরাসরি সংযোগ এবং সড়কপথে যাতায়াতের সময় প্রায় ৪ ঘণ্টা কমবে। ঢাকার দূরত্বও ১৩০ কিলোমিটার হ্রাস পাবে। স্থানীয়রা আশা করছেন, এটি ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত এবং কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ করবে, ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া অঞ্চলটির সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইএইচ