সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩, ০৫:২৫ পিএম
ঢাকা, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, বৃহস্পতিবার: বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকায় পালিত হয়েছে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব শান্তি দিবস-২০২৩’। ঐক্যবদ্ধ শান্তি প্রতিষ্ঠায় “ACTIONS FOR PEACE - our ambition for the #Globalgoals” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেছে দেশের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ।
এ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে স্থাপিত “শান্তির স্তম্ভ”-এর সামনে বেলুন ও শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা উড়িয়ে বিশ্ব শান্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়েজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক। শোভাযাত্রাটি কার্জন হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রেস ক্লাব মোড়ে এসে শেষ হয়।
এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে একটি আলোচনা সভা আয়োজন করে জেএমআই গ্রুপ। এতে অংশ নিয়ে বক্তারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার সুখ শান্তি অর্জনে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সাম্য আর সম্প্রীতির বিশ্ব গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জেএমআই গ্রুপ বাংলাদেশে বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করে আসছে। উদার মানসিকতা নিয়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে প্রতিবছর ঐক্যবদ্ধ হই আমরা।”
তিনি আরও বলেন, “জেএমআই গ্রুপ যেহেতু সাড়ে আট হাজার কর্মীর পরিবার, সেহেতু আমরা চাইলেই অন্তত আমাদের নিজেদের মাঝে, নিজেদের পরিবারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। আমি নিজেও একদিনের জন্য হলেও শান্তি আর সম্প্রীতি চাই। আমরা চাই, এই একটি দিনের অনুশীলনকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি দিন তথা ৩৬৫ দিন-এর অনুশীলনে পরিণত করে পরিপূর্ণভাবে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, “জেএমআই পরিবারের প্রতিটি সদস্য জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শান্তি দিবসের প্রতিপাদ্যকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজের গ্রামে একটা ফাউন্ডেশন করেছেন। এই ফাউন্ডেশন থেকে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের পুষ্টি নিশ্চিতে সহযোগিতা করছেন। এভাবে আমরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে একে অন্যের পাশে দাঁড়ালে সুষম সমাজ গঠন হবে। সর্বস্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।”
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম, এবং তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর সহায়তায় গঠিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান স্বপ্নজয়ী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও রুপান্তরিত নারী রাখি শেখ।
জেএমআই গ্রুপের প্রশাসন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফারুকীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন নিপ্রো জেএমআই ফার্মা লিমিটেডের পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান পাটোয়ারী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডে জাপানের নিপ্রো কর্পোরেশন মনোনীত পরিচালক হিরোশি সাইতো, জেএমআই বিল্ডার্স অ্যান্ড কন্সট্রাকশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, জেএমআই গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, এবং জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অভিজিৎ পাল।
উল্লেখ্য, বিদেশিদের সাথে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা জেএমআই গ্রুপে বর্তমানে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরষ্ক ও থাইল্যান্ডের যৌথ বিনিয়োগ। জেএমআই গ্রুপের ৪২টি প্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে আট হাজার কর্মী কর্মরত আছেন। জাপানের নিপ্রো কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে বিশ্বমানের বিভিন্ন জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে জেএমআই গ্রুপ। পাশাপাশি দেশজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চাহিদা পূরণে তরল পেট্রলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করে বাজারজাত করছে জেএমআই।
অন্যদিকে, একটি যুদ্ধবিহীন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮১ সাল থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনটিকে ‘বিশ্ব শান্তি দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুসারে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ‘তৃতীয় মঙ্গলবার’ এই দিবসটি পালিত হয়ে আসলেও, ২০০২ সাল থেকে তা ২১ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে সারা বিশ্বে অতি গুরুত্বের সঙ্গে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে ‘বিশ্ব শান্তি দিবস’।