Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ৩ দাবি

জাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাওয়ের হুমকি

জাবি প্রতিনিধি

জাবি প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ০৭:৪৪ পিএম


জাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাওয়ের হুমকি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ওঠা নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, তার পরীক্ষার পরীক্ষক হওয়া, একাডেমিক অনিয়ম, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা, প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানোসহ নানা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বর্তমান তদন্ত কমিটির পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। 

এসময়ে তারা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন, তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত শিক্ষককে সকল ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং ভূক্তোভূগীকে দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে দায়মুক্তিপত্র লেখানোয় প্রোক্টর ও সহকারী প্রোক্টরের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখে প্রমাণিত হলে অব্যাহতি প্রদান করা হোক। এসময় সঠিক তদন্ত না হলে সিন্ডিকেট সভার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাওয়ের হুমকি দেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা অনুষদের একটি কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন। এতে বলা হয়, পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির কর্মকাণ্ডের তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সেখানে অভিযুক্তের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শিক্ষকদের নামও ছিল। তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীদের সশরীরে আহবান না করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনের বক্তব্য আমলে না নিয়ে, সংবাদপত্র ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসংখ্য প্রমাণ আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে তদন্ত সম্পন্ন করেছে। 

তদন্ত চলাকালে অভিযুক্তের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও শিক্ষক লাউঞ্জে আড্ডা দেয়ার মধ্য দিয়ে তারা পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট করেছে। এছাড়া গত ২৪ নভেম্বর প্রোক্টর অফিসে একজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি দায়মুক্তিপত্র লিখিয়ে নেয়া হয়েছে। এই প্রহসনমূলক তদন্ত কমিটি গঠন ও তদন্ত চলাকালে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই।

এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, শিক্ষক জনির কর্মকাণ্ডের প্রভাব ছড়িয়েছে দেশব্যাপী। তার কর্মকাণ্ডের ঘটনা জেনে অনেক অভিভাবক তার সন্তানদের ক্যাম্পাসে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এই কর্মকাণ্ডের সঠিক বিচার না হলে ক্যাম্পাসে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া হবে। আশংকা করছি, এতে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। অবিলম্বে তার উপযুক্ত বিচার চাই। নয়তো আবার বিচারের দাবিতে মাঠে নামতে বাধ্য হবো আমরা।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, আমরা সবসময় আন্দোলনে নামতে চাই না। কিন্তু কমিটির পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমাদের নামতে বাধ্য করছে। আমরা চেয়েছিলাম নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার হোক। যা সকল অন্যায়কারীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। অভিযুক্ত যেই কাজ করেছেন তা কখনই মেনে নেওয়ার নয়। আমাদের দাবি না মানলে আমরা অচিরেই বড় আন্দোলনে নামবো।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন বলেন, আমাদের কাছে থাকা তথ্য প্রমাণাদি তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করার জন্য আমরা একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কমিটি আমাদের সেই আহবানে সাড়া দেয়নি। তদন্ত কমিটির এই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমদেরকে বারবার হতাশ করে যাচ্ছে। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ না হওয়ায় সঠিক বিচারের আশংকা দৃশ্যমান হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবাদপত্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত প্রমাণাদি থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের অবহেলায় দিনের আলোয় প্রকাশ্য এক অপরাধকে ঢাকার অপচেষ্টা   চালছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে সঠিক বিচার না হলে আমরা রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাও করবো।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক মো. সোহেল রানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আরএস

Link copied!