Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪,

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি

রাবি প্রতিনিধি

রাবি প্রতিনিধি

মার্চ ৭, ২০২৪, ০৩:২৭ পিএম


ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বসা বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে। দোকানীদের অভিযোগ, ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সহায়তার নামে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এসে চাঁদা আদায় করেছেন।

তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা বিষয়টি অস্বীকার করে বলছেন, এ ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নন। উল্টো দোকানীদের বলে এসেছেন, তাদের নামে কেউ চাঁদা দাবি করলে আটকে রেখে জানাতে।

দোকানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ অ্যাকাডেমিক ভবন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবন, পুরাতন শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বসা অন্তত ১৫টি ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে তারা চাঁদা আদায় করেছেন। দোকানভেদে ১০০ থেকে এক হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়েছে। তবে কেউ কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ চার নেতা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদিক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবণ, নবাব আবদুল লতিফ হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তাশফিক আল তৌহিদ এবং মাদার বখ্শ হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তামিম খান।

এদের মধ্যে লাবণ ও তৌহিদ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। অন্যদিকে সাদিক এবং তামিম শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ডাব বিক্রেতা বলেন, চার-পাঁচজন লোক এসে তার কাছে ১ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন ছাত্রলীগ নেতারা এখানে ব্যবসা করতে হলে টাকা দিতে হবে বলে হুমকি দেন। পরে তিনি বাধ্য হয়ে তাঁদেরকে ১ হাজার টাকা দিয়ে দেন।

এক ফুচকা বিক্রেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে টাকা দাবি করে। তাদের সবাই আমার পরিচিত। লাবণ ভাই, সাদিক ভাই, তৌহিদ ও তামিম গতকাল এসেছিল। আমার থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছে। গতকাল এসেছে আজকেও মনে হয় আসবে। ব্যবসা করতে হলে এদের টাকা দিতে হবে। খুব চাপ।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদেকুল ইসলাম সাদিক বলেন, ‘এই রকম কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। বরং আমি আর লাবন দোকানে দোকানে গিয়ে বলে এসেছি, আমার নামে কেউ চাঁদাবাজি করতে আসলে যেন আমাকে কল দেয়।’

ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তামিম বলেন, ‘গতকাল সারাদিন আমি জয় বাংলা বাইক সার্ভিস নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আজকেও সকাল থেকে কাজ করেছি। আমার নাম করে অন্য কেউ এ কাজ করতে পারে। এজন্য আমি দোকানীদেরকে সতর্ক করে এসেছিলাম। কেউ আমার নাম করে টাকা চাইতে আসে তাকে বেধে রেখে আমাকে কল দিবেন।’

সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ আল হাসান লাবণ বলেন, ‘আমি কয়েকদিন ধরে সারাদিন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছিলাম। এর আগেও শুনেছি আমার নাম করে কেউ কেউ টাকা আদায় করেছে। তাই কয়েকজন দোকানীকে বলেছি, যারা আমার নাম করে চাঁদা নিতে আসে তাদের আটকে রেখে আমাকে কল দিতে।’

আরেক ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি গতকাল সারাদিন সভাপতির সঙ্গে ছিলাম। জীবনেও আমি চাঁদাবাজি করি নাই। কেয়ামতের দিন হলেও প্রমাণ হবে আমি এক পয়সাও কোথাও থেকে চাঁদা নিইনি।’

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, সাদিক, লাবণ ও তৌহিদের মধ্যে কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে তামিম গেছে কিনা আমি জানি না। যদি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কালকের মধ্যে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ইএইচ

Link copied!