Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫,

ইবিতে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচি এবং প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক সেমিনার 

ইবি প্রতিনিধি

ইবি প্রতিনিধি

মে ২৭, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম


ইবিতে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচি এবং প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক সেমিনার 

শহীদ জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে 'শহীদ জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচি এবং প্রাসঙ্গিকতা' শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৭ মে) বেলা ১১ টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে জিয়া পরিষদ এবং ইউট্যাবের আয়োজনে এ সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত ও বেগম জিয়ার দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি পন্থী শিক্ষক সংগঠন ইউট্যাব এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহা. তোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া মূখ্য আলোচক হিসেবে জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন, আলোচক হিসেবে ইবি জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ফারুকজ্জামান খান, প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে ইউট্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস- প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. একে এম মতিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এসময় জাতীয়তাবাদী বিভিন্ন সংগঠন, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন বলেন,"শহিদ জিয়াউর রহমান যখন চট্টগ্রামে  সার্কিট হাউসে ছিলেন তখন তাকে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয় নাই। তখন গভীর ষড়যন্ত্র চলছিল। বিগত শাসনামলে ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা জিয়াউর রহমানের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। বর্তমান প্রজন্ম বিএনপির শাসন দেখে নাই, তারা শহীদ জিয়ার শাসন দেখে নাই, তারা আওয়ামী দুঃশাসন দেখেছে। সুতরাং তাদেরকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ আছে। তারা মনে করতে পারে বিএনপিও আওয়ামী লীগের মতো। এজন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। জিয়ার রাজনীতি ছিলো ধুমকেতুর মতো। যখন একাত্তরে সবাই মুজিবকে নিয়ে রমরমা ছিলো তখন বাংলাদেশের কেউ আঁচ করতে পারেন নাই যে পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশি নিধন করতে চলেছে। কিন্তু জিয়া বুঝতে পেরেছিলেন কারণ তিনি একটি রেজিমেন্টের প্রধান ছিলেন। রাতের অন্ধকারে যখন বাঙালি জোয়ানদের নিরস্ত্র করার চেষ্টা করেছে তখন তিনি বিপ্লব করে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেজন্য তিনি বাংলাদেশে এক নাম্বার মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধকালীন বেগম জিয়া এবং শিশু তারেক রহমান পুরান ঢাকায় আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তখন পাকিস্তান বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে এবং দীর্ঘ ৯ মাস ক্যান্টনমেন্টে আটক রাখে। সেই হিসেবে বেগম জিয়া ছিলেন প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং তারেক জিয়া ছিলেন প্রথম শিশু মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধু নাকি মধ্য রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলো কিন্তু আসলে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন এবং নিরাপদ আশ্রয়ের অভিপ্রায়ে পাক সেনার হাতে ধরা দেন। কারণ নিরস্ত্র বাঙালি মরুক আর নাই বাঁচুক তিনি তাদের কথা ভাবেন নাই। এতদিনে ভুল ইতিহাস আমাদের জানানো হয়েছে, এখন সময় এসেছে সত্যি ইতিহাস জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া।"

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, "নৃতাত্ত্বিকগোষ্ঠী, উপজাতি সংখ্যায় ক্ষুদ্র হলেও তিনি সকলকে এক কাতারে আনতে জাতীয়তাবাদের রাজনীতি চালু করেন। তার রাজনৈতিক দর্শন, চিন্তাধারা, আদর্শ ছিলো বাংলাদেশি জাতীয়া তা বাদ। তার এই আদর্শ নিয়ে সমকালীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেননি। তিনি ছিলেন ঐক্যের প্রতীক। এমডিজি, এসডিজি চিন্তা করলে জিয়াউর রহমানে ১৯ দফাই ছিলো টেকসই উন্নয়নের মূলমন্ত্র।"

এসময় তিনি ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন,"বিশ্ব উন্নয়ন প্রকল্পে জাতিসংঘ যে উন্নয়নের জন্য বদ্ধপরিকর সেটা দেখো এবং সে অনুযায়ী কাজ করো। জিয়ার দর্শন ১৯ দফায় মৌলিক প্রয়োজন, নারীর ক্ষমতায়ন, টেকসই উন্নয়ন সবই অন্তর্ভুক্ত আছে। আমি শহীদ জিয়াকে চিন্তায় ধারণ করি। আপনারা তাকে বুদ্ধিভিত্তিক দৃষ্টিতে দেখবেন। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি চর্চা করে আর যারা গ্রামে রাজনীতি করে তাদের চিন্তার মধ্যে পার্থক্য থাকা উচিত। কারণ আপনাদেরই তাদেরকে চিন্তার খোরাক দিতে হবে।"

তিনি আরও বলেন,"বাকশালের মাধ্যমে মুজিব একটি গণতন্ত্রকে যেভাবে ধ্বংস করেছিলেন, জিয়াউর রহমান ধ্বংসস্তূপে থাকা গণতন্ত্রকে অংশগ্রহণ মূলক সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন করেছিলেন। জিয়াউর রহমান আমাদের বিশ্বাসের সাথে, চিন্তাধারার সাথে, আদর্শের সাথে এবং রাজনীতি সাথে অনন্ত কাল বেচে থাকবেন। আপনারা যারা শিক্ষক তারা জাতীয়তাবাদ চিন্তা ধারার জ্ঞান চর্চা এবং গবেষণা করার চেষ্টা করুন, এই সম্পর্কে লিখুন এবং জনসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেন।"

আরএস

Link copied!