ববি প্রতিনিধি:
মে ২৮, ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
পর্যাপ্ত বাজেট, আধুনিক ল্যাব ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে গবেষণায় পিছিয়ে পড়ছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। বিশেষ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো গবেষণা বরাদ্দ না থাকায় মাস্টার্স পর্যায়ের গবেষণা কার্যক্রমে দেখা দিচ্ছে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রেগুলার শিক্ষকদের জন্য গবেষণা বাজেট থাকলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়নি। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে শিক্ষকদের গবেষণার জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য তা ছিল শূন্য। এমনকি পিএইচডি পর্যায়ের জন্যও ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল, যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি কার্যক্রমই নেই, ফলে সেই বরাদ্দ রয়ে গেছে অব্যবহৃত।
এর ফলে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা প্রজেক্ট বা থিসিসের কাজের সময় প্রায়ই আর্থিক সংকটে পড়েন। কেউ কেউ গবেষণা শুরু করলেও অর্থের অভাবে মাঝপথে তা বন্ধ করতে বাধ্য হন। অনেক সময় জরিপ পরিচালনা, তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ কিংবা উপকরণ কেনার ব্যয়ভার বহন করতে হয় নিজস্ব অর্থায়নে—যা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পক্ষেই সম্ভব নয়।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গবেষণা করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়ি। কোনো সহায়তা না থাকায় অনেকেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।’
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে হলে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় প্রেষণা দিতে হবে। শুধু শিক্ষকদের বরাদ্দ দিয়ে গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয়।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য বাজেট বরাদ্দ না থাকায় শিক্ষকেরাও দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখে পড়েন। অনেক সময় নিজেরা অর্থ জোগাড় করে কাজ চালাতে হয়।
বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. ধীমান কুমার রয় বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা এনএসটি ফান্ড থেকে সামান্য কিছু পায়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাজেট বরাদ্দ পেলে তারা আরও অনেক বেশি উপকৃত হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, ‘গবেষণার মান বাড়াতে একটি কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাইরের উৎস থেকে কীভাবে বাজেট আনা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবে অকেজো যন্ত্রপাতিগুলো সচল করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগের আশ্বাস সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে, যাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ও একটি মানসম্পন্ন গবেষণা-ভিত্তিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে।
বিআরইউ
