Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪,

উপকৃত হবেন বাংলাদেশিরাও

নিউইয়র্কে ভূগর্ভস্থ কক্ষে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ

ইমা এলিস, নিউইয়র্ক

ইমা এলিস, নিউইয়র্ক

জানুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০১:৫৩ পিএম


নিউইয়র্কে ভূগর্ভস্থ কক্ষে বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ

নিউইয়র্ক শহরের প্রায় ২০ লাখ বাড়ির ভূগর্ভস্থ কক্ষে এখন থেকে মানুষ বসবাস করতে পারবে।

নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অধিকাংশ বাড়ির ভূগর্ভস্থ কক্ষে বসবাসের অনুমতি মিলত না বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসীরা লুকোচুরি করেই ভূগর্ভস্থ কক্ষে বসবাস করতেন। 

গত বুধবার আলবেনিতে গর্ভনর ক্যাথি হোকুল ‘স্টেট অফ দ্যা স্টেট’ ভাষনে শহরের ২০ লাখ বাড়ির ভূগর্ভস্থ ঘরে মানুষের বসবাসের বৈধতা ঘোষণা করেন। গর্ভনরের এ ঘোষণায় বিদেশিদের পাশাপাশি উপকৃত হবেন হাজার হাজার বাংলাদেশি।
গর্ভনর ক্যাথি হো্কুল বলেন, নিউইয়র্ক সিটির বাড়িগুলোর ভূগর্ভস্থ ঘরে এখন বসবাসের জন্য অবৈধ। এ সব বাড়িগুলোকে অন্ধকার থেকে বের করে আনতে হবে। যাতে বাড়িওয়ালা লাভবান হবে এবং সিটিরও নিয়ন্ত্রন থাকবে। ভূগর্ভস্থ কক্ষে বসবাসের বৈধতা প্রদানের প্রস্তাবকে তিনি ‘স্টেট অফ দ্য বুক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাসাবাড়ির ভূগর্ভস্থ কক্ষগুলোকে সিটির হেলথ এন্ড সেফটির অর্ন্তভূক্ত হতে হবে। স্থানীয় আইননের আওতায় ভূগর্ভস্থ ঘরগুলোকে এমনেস্টি দেয়া হবে।

এ লক্ষ্যে স্টেট ৮৫ মিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ রেখেছে। বাড়ির মালিকরা তাদের ভূগর্ভস্থ কক্ষগুলোকে আধুনিক ও নিরাপদ করতে এ অর্থ থেকে সহায়তা পাবেন।
গর্ভনর ক্যাথি হোকুল ভাষণে আরও বলেছেন, সিটি ও স্টেটের হাউজিং ডেভেলপমেন্টকে প্রাধান্য দিয়ে গ্রাউন্ডব্রেকিং নীতিমালা গ্রহন করা হয়েছে। বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য সংস্থার লাল ফিতার দৌরাত্ম দূর করা হবে। আগামী ১০ বছরে ৮ লাখ নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে।
নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসের যোগ্য বাড়ি রয়েছে ৩৫ লাখ। এরমধ্যে ১৩ লাখ ডিটাচড, ৮ লাখ এটাচড ও ৪ লাখের মতো ২ ইউনিটের বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে মাল্টি স্টোরেজ এপার্টমেন্ট, মোবাইল ও বোট হোম। এসব অধিকাংশ বাড়িতেই রয়েছে বেজমেন্ট। তার সংখ্যা ২০ লাখের কাছাকাছি।
এদিকে এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের তথ্যানুযায়ী নিউইয়র্কে শহরে প্রায় ৭০ হাজার বাংলাদেশি বসবাদ করেছেন। এদের মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশি অর্থাৎ ৩২ হাজার বাড়ির মালিক রয়েছেন।

এদের অধিকাংশই বাড়ির ভূগর্ভস্থ ঘর অবৈধভাবে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ ডলার উপার্জন করেছেন অথচ সিটি কর্তৃপক্ষকে ভূগর্ভস্থ কক্ষে থেকে আয়ের কোনো ট্যাক্স প্রদান করেননি।

শুধু বাংলাদেশিরাই নয়,  নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের চোখে আঙ্গুল দিয়ে এ ব্যবসা করেছেন বিদেশিরাও। এসব বিষয় বিবেচনা করেই সিটি কর্তৃপক্ষ  ভূগর্ভস্থ ঘরে বসবাসের বৈধতার ঘোষণা দেন।      
এদিকে সিটির বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টেরও হিসেব নেই কি পরিমাণ ভূগর্ভস্থ কক্ষ বা এপার্টমেন্ট রয়েছে নিউইয়র্ক সিটিতে। বাড়ির মালিকরা প্রশাসনের অগোচরে বছরের পর বছর এ সব ভূগর্ভস্থ ঘরগুলো ভাড়া দিয়ে আসছেন।

অবৈধ হওযায় ভাড়াটিয়ারাও তুলনামূলকভাবে কম ভাড়ায় থাকতে পারেন। যাদের কাগজপত্র নেই তারা সহজেই এ ধরনের এপার্টমেন্ট ভাড়া পান। কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। পক্ষান্তরে বাড়ির মালিকরা ক্যাশ/নগদ ডলারে ভাড়া পান। এ ধরনের আয়ের জন্য ট্যাক্স প্রদানও করতে হয় না।

তবে মাঝেমধ্যেই বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের হানা আসে বেজমেন্টে। এতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। সিটিতে অপেনসিক্রেট বেজমেন্ট ভাড়া দেবার বিষয়টি। প্রশাসন জেনেও না দেখার ভান করতেন। তবে কোনো অভিযোগ পেলে ঝামেলায় পড়ে যান বাড়িওয়ালা।
ভূগর্ভস্থ কক্ষগুলো এপার্টমেন্ট লিগালাইজেশন পেলে সিটি ও স্টেট মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ট্যাক্স পাবে। অন্যদিকে বাড়ির মালিকরাও বৈধভাবে ভাড়া দিয়ে ঝামেলামুক্ত জীবনযাপন করতে পারবেন। ভাড়াটিয়ারাও থাকবেন শংকামুক্ত। এপার্টমেন্টগুলোও সিটির সেফটি নীতিমালার আলোকে উন্নীতকরণ বা আপগ্রেডেট হবে।

এআরএস

Link copied!