Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫,

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করবেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

জুন ১৮, ২০২৫, ১১:৪৩ এএম


পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করবেন ট্রাম্প

ইরান-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নিচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘রোল কল’-এর বরাতে জানা গেছে, বুধবার (স্থানীয় সময়) দুপুর ১টায় যুক্তরাষ্ট্রে এই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হবে। এটি হবে সম্পূর্ণ ‘ক্লোজ-ডোর’ বা গণমাধ্যমবিহীন আয়োজন। 

এতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার থাকবে না এবং পরবর্তীতেও এ নিয়ে উভয় পক্ষ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন না।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মধ্যাহ্নভোজে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সংকট নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কারণ, পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে জড়াতে পারে—সে প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন হতে পারে ওয়াশিংটনের।

অন্যদিকে, বিভিন্ন সামরিক ও কূটনৈতিক ইস্যুতে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। ফলে দুই দেশের সামরিক নেতৃত্বের এমন ঘনিষ্ঠ বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাকিস্তানঘনিষ্ঠতা বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। সম্প্রতি ফক্স নিউজ–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পাকিস্তানিদের “অত্যন্ত মেধাবী” বলে মন্তব্য করেন।

এছাড়া, তার নতুন অভিবাসন নীতিতে পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের নাগরিকদের ব্যাপারে কঠোরতা দেখা গেলেও পাকিস্তানিদের ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যায়নি। ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৮ জন পাকিস্তানিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হলেও পরে আর উল্লেখযোগ্য কোনো ডিপোর্টেশন হয়নি।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক পাকিস্তানি নাগরিক আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এমনকি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে যে ভিসা বাতিল ও আটক অভিযান চালানো হয়েছে, তার মধ্যেও পাকিস্তানি শিক্ষার্থীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

এদিকে সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, “সব উপায়ে ভ্রাতৃপ্রতিম ইরানের স্বার্থ রক্ষা করবে পাকিস্তান।” তবে এরপরই পাকিস্তান ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়, যা পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্ট করে দেয়—এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই আসে, রাজনৈতিক সরকারের নয়।

এর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কার্যত রাশিয়াকে সমর্থন করেন এবং মস্কো সফরেও যান। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অসন্তোষ প্রকাশ করে। পরে ইমরান খানের দাবি অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপেই তাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

এসব প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প ও আসিম মুনিরের বৈঠক কেবল সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং একটি কৌশলগত সামরিক আলোচনার অংশ বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!