Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

কর্পোরেট কমিউনিকেশনে ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা কেমন হতে হয়?

মীর হাসিব মাহমুদ

মীর হাসিব মাহমুদ

এপ্রিল ২১, ২০২৩, ০৩:৩৬ পিএম


কর্পোরেট কমিউনিকেশনে ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা কেমন হতে হয়?
মীর হাসিব মাহমুদ

মার্কিন রাজনীতিবিদ, মানবাধিকার প্রচারক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি জন অ্যাডামসের সহধর্মণী অ্যাবিগেইল অ্যাডামস কমিউনিকেশন নিয়ে বলেন - কথায় বিশ্বাস গড়া হয়, কমিউনিকেশনে গড়ে তোলা হয় সম্পর্ক।

কথাটার মর্মার্থ্য যদি বিশ্লেষণ করতে চাই তাহলে বলা যায় আপনি কারো সঙ্গে কথা বলে একটা সাময়িক আস্থা অর্জন করলেন হয়তো সেটা আপনার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা বা আপনাকে অনস্পটে খাবারের আমন্ত্রণ জানানো পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে কিন্তু সেই আস্থার প্রসারতা ঘটানোর জন্য আপনার কমিউনিকেশন চালিয়ে যেতে হবে। এতে করে আপনার ব্যবসা এর প্রসারতা হবে কিনা জানিনা তবে ব্যাবসায়ীক বন্ধুত্ব হয়ে যাবে।

এবার চলেন আজকের মেইন পয়েন্টে আসি। আমাদের দেশে অনেক উৎসব হয়। এই উৎসব তবে আপনার জন্য কমিউনিকেশন বা নেটওয়ার্কিং বাড়ানোর ভালো সময়।

কারো খবর নেয়া হয়না কিংবা তার সঙ্গে আপনার সেভাবে কোন কাজ হয়ে উঠেনি তাই তার সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা হয়না আপনার। ঈদে, পুজা বা অন্যান্য যেকোন উৎসবে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।

তবে হ্যাঁ শুভেচ্ছা জানাতে আলসেমি না করা অনুরোধ করছি। ইমেজ বাড়াতে গিয়ে কমায় আসবেন এতে করে। আলসেমি বলতে বুঝিয়েছি একই মেসেজ সবাইকে দেয়ার দরকার নাই। পার্সোনালিটি অনুযায়ী মেসেজ করুন। কেউ সিম্পল মেসেজ লাইক করেন আপনি তাঁকে হিজিবিজি বিহু কিছু লিখে দিলেন মানুষটা বিরক্ত হবে। তাঁকে পারলে এক লাইনে বলুন - ‘ঈদ মোবারক ভাইয়া, সব সময় শুভ কামনা”। আবার কাউকে উইশ এর লিখা লিখতে লিখতে ভরিয়ে ফেলেন।

কোন মাধ্যমটা ইউজ করবেন? আমার মতে ফোনের নাম্বারে মেসেজ পাঠানো টাকা এবং সময়ের অপচয়। এখন সব প্রমোশনাল মেসেজ তবে নরমাল নাম্বারের মত আসে। তাই এত এত প্রমোশনাল মেসেজের ভিড়ে আপনার মেসেজ দৃষ্টি কাড়বে বলে মনে হয় না। তবে হ্যাঁ আপনি মেইল, লিংকডইন ও হোয়াটসআপ মাধ্যমটা ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই উইশে যাকে পাঠাচ্ছে তার নাম মেনশন করবেন। অর্থাৎ, “হাসিব ভাই, আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক”। দেখবেন এর কেলমা।

একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন। আপনার কাছে যেসব মানুষ ইম্পর্টেন্ট বা কর্পোরেট লিডার তাঁদের একটা ছবি বা ক্রিয়াটিভ পাঠায় দিয়ে বসে থাকবেন না। আপনার কোম্পানির প্রমোশন অবশ্যই দরকার সেটা চেষ্টা করবেন লিখে দিতে। মনে রাখবেন এক ক্লিকের শুভেচ্ছা আর নিজের হাতের লিখা শুভেচ্ছার মর্ম কখনোই সেইম হবে না। ক্রিয়াটিভ যদি দিতেই চান তাও অন্তত ঈদ মোবারক’টা লিখে দিন।

এছাড়াও বলতে পারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা, বার্তা বা ইমেল পাঠানো নেটওয়ার্কিং এবং যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কেন দিবেন বলেন তো এই শুভেচ্ছা বার্তা?

সম্পর্ক গড়ে তোলা: উৎসব, জন্মদিন, বার্ষিকী বা অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানের মতো অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা, বার্তা বা ইমেল পাঠানো সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এটি বুঝায় যে আপনি ব্যক্তিটির কেয়ার করেন এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে স্বীকার করেন। এটি আপনাদের মধ্যে বন্ধনকে শক্তিশালী করবে।

নেটওয়ার্কিং সুযোগ: যেকোন উপলক্ষে যখন আপনি কাউকে বার্তা পাঠাবেন তাহলে মনে রাখবেন আপনার নামটা তার মনে ঢুকিয়ে দেয়াই আপনার মুখ্য উদ্দেশ্য হতে হবে। পরবর্তীতে কোথাও নাম বললে তার মনে হবে কোথায় যেন আপনার এই নাম্বা কোম্পানির নাম শুনেছে। এটাই সাকসেস।

পেশাগত শিষ্টাচার: পেশাদার পরিমণ্ডলে, অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা, বার্তা বা ইমেল পাঠানোকে পেশাদার শিষ্টাচারের একটি অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এটি পেশাদারিত্ব, ভদ্রতা এবং ভাল আচরণ প্রদর্শন করে। এটি একটি ইতিবাচক এবং সম্মানজনক যোগাযোগ সংস্কৃতি বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা পেশাদার সম্পর্ক এবং নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

সামাজিক নিয়ম: বাংলাদেশে, শুভেচ্ছা, বার্তা বা ইমেইল পাঠানো একটি সাধারণ সামাজিক নিয়ম। এটি একটি ভদ্র অঙ্গভঙ্গি এবং শুভকামনা বা অভিনন্দন প্রকাশ করার একটি উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়। সামাজিক নিয়ম অনুসরণ করা সামাজিক সংযোগ স্থাপনে এই বার্তার ভূমিকাই বেশি।

মনে রাখবেন কর্পোরেট জীবন মানেই কমিউনিকেশন যুদ্ধ। যার কমিউনিকেশ স্কিল যত ভালো তার চাহিদাও বেশি। যার চাহিদা বেশি তার সেলারি বেশি। যার সেলারি বেশি তাঁকে সবাই তোশামদ করে। যাকে সবাই তোশামদ করে সে ভালো থাকে।  আর আমরা সবাই যে করেই হোক ভালই থাকতে চাই।

তাই কমিউনিকেশন হ্যাকস গুলো বেশি বেশি জানার চেষ্টা করুন।

লেখক: কো-ফাউন্ডার, বেস্ট এইড লিমিটেড

Link copied!