ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
আজ বিশ্ব নদী দিবস

মেলেনি আন্তঃসীমান্ত ৬৯ নদীর স্বীকৃতি

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ১১:০৪ এএম

মেলেনি আন্তঃসীমান্ত ৬৯ নদীর স্বীকৃতি
এক সময়ের খোরস্রোতা সোমেশ্বরী এখন হেঁটেই দেওয়া যায় পাড়ি।

সারাবিশ্বের মতো আজ রোববার বাংলাদেশেও বিশ্ব নদী দিবস পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

আজ সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নদনদীর সংজ্ঞা ও সংখ্যা বিষয়ে সেমিনারের আয়োজন করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এতে নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে।

১৯৮০ সাল থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের শেষ রোববার বিশ্ব নদী দিবস পালন করতে শুরু করে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া (বিসি) ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি। বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশে ভারত থেকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, রৌমারী ও রাজারহাটের মধ্য দিয়ে এসেছে ১৯টি আন্তঃসীমান্ত নদী। তবে ভারত-বাংলাদেশের অভিন্ন ৫৪ নদীর তালিকায় উত্তরাঞ্চলে শুধু ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও জিঞ্জিরামের নাম আছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৪ নদী।

শুধু কুড়িগ্রাম নয়, সারাদেশে এমন ৬৯টি নদী বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) তালিকায় নেই। এসব নদীর স্বীকৃতিও নেই।

নদী, জলাভূমি ও পানিসম্পদবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রিভারাইন পিপলের এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য। গত জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ গবেষণা এখনও চলছে। সংগঠনটি এখন পর্যন্ত ৬৯টি নদীর খোঁজ পেয়েছে। যেগুলো ১৯৭২ সালে স্বীকৃতি পাওয়া নদী তালিকার বাইরে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তঃসীমান্ত প্রতিটি নদনদীর স্বীকৃতি এবং যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা নদী ও জীবনের স্বার্থে অপরিহার্য। স্বীকৃতি না পেলে বাদ পড়া নদীর হিস্যা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। আন্তঃসীমান্ত নদনদীতে অভিন্ন অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এর প্রকৃত সংখ্যা জানা জরুরি।

গবেষণায় নদীর সংখ্যা

যে নদী এক দেশে উৎপন্ন হয়ে সীমান্ত পার হয়ে অন্য এক বা একাধিক দেশে ঢোকে কিংবা সীমান্ত ধরে প্রবাহিত হয়, সেগুলোকে আন্তঃসীমান্ত নদী বা আন্তর্জাতিক নদী বা অভিন্ন নদী বলা হয়। রিভারাইন পিপল জানিয়েছে, বাংলাদেশ দাপ্তরিকভাবে ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী দাপ্তরিকভাবে স্বীকৃত।

এর মধ্যে তিনটি নদী মিয়ানমারের সঙ্গে এবং ৫৪টি নদী ভারতের সঙ্গে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রবাহিত তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদীর মধ্যে মিয়ানমারের দিক থেকে শুধু নাফ নদ স্বীকৃত। অন্য দুটি নদী সম্পর্কে দেশটির কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দাপ্তরিকভাবে স্বীকৃত ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর বাইরেও এ পর্যন্ত আরও অন্তত ৬৯ নদী চিহ্নিত করেছে রিভারাইন পিপল। যেগুলো ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে কিংবা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছে।

রিভারাইন পিপল অনুসন্ধানে পাওয়া তালিকাবহির্ভূত আন্তঃসীমান্ত নদীগুলো হলো– সাতক্ষীরার হাড়িভাঙ্গা বা হাড়িয়াভাঙ্গা, দিনাজপুরের চিরি বা শ্রী, ইছামতী বা ঘুকসি, ঠাকুরগাঁওয়ের নোনা বা লোনা, পঞ্চগড়ের বেরং বা গোবরা, কুরুম, যমুনা, চাওয়াই, ভেরসা, ভাতা, আলাইকুমারী, সুই, সাউ বা সাহু, লালমনিরহাটের গিদারী বা গিরিধারি, মালদাহা, সানিয়াজান বা সিমলাজান, সিংগিমারী, সাকোয়া, কুড়িগ্রামের সঙ্কোশ, কালো, দন্নী, গঙ্গাধর, গদাধর, নওজল, নীলকমল, বারোমাসি, ফুলকুমার, তোর্ষা, কালজানি, হাড়িয়ারডারা, গিরাই, শিয়ালদহ, শেরপুরের কর্ণঝোরা, মহারশি, নেত্রকোনার গণেশ্বরী, উপদাখালী, কর্ণ-বালজা (মঙ্গলেশ্বরী), মহাদেও, সুনামগঞ্জের মহেষখোলা বা মহিষখোলা, খাসিমারা, বড়ছড়া, লাকমাছড়া, আশাউড়া, উমফুঙ, মৌলা, উমস্তা, জাল্লাগাঙ, সিলেটের রাঙাপানি/রাঙাগাঙ বা রাঙা-বাগলি, চেলা বা শিলা, জালিয়াছড়া, লুভা/লোভা বা লুবহা, উতমাছড়া, তুরংছড়া, কুড়িছড়া, কুলুমছড়া, তাইরঙ্গল, হিঙ্গাইর, হুরই, নুনছড়া, দোনা, আমরি, মৌলভীবাজারের মুরইছড়া, লাঘাটা, বিলাস, হবিগঞ্জের করাঙ্গী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লহর বা লৌর, রাঙামাটির কর্ণফুলী (ঠেগামুখ, বরকল), বান্দরবানের বাঁকখালী (নাইক্ষ্যংছড়ি) ও কক্সবাজারের উখিয়ার রেজুখাল।

এ ব্যাপারে রিভারাইন পিপলের পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, দেশে স্বীকৃত আন্তঃসীমান্ত নদীর সংখ্যা ৫৭ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। শুধু রংপুর বিভাগে স্বীকৃত আন্তঃসীমান্ত নদী আছে ১৮টি। অনেক বড় নদীও এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। যেমন, কুড়িগ্রামের গঙ্গাধর বড় নদী হওয়ার পরও তালিকার বাইরে। নদী ছোট হোক, বড় হোক সব আন্তঃসীমান্ত নদীর দ্বিদেশীয় স্বীকৃতি থাকা জরুরি।

নদীর প্রশ্নে উজানের দেশ ভারতের মনোভাব কখনোই সৌহার্দ্যপূর্ণ নয়। ফলে তারা চাইবে নদীগুলোর স্বীকৃতি না হোক। এতে এসব নদীর পানি তারা প্রশ্নহীনভাবে প্রত্যাহার করার সুযোগ পেতে পারে। ভাটির দেশ হিসেবে আমাদের তাগিদ দিয়ে হলেও আন্তঃসীমান্ত সব নদীর স্বীকৃতি নেওয়া জরুরি। তিনি বলেন, অর্ধশতাধিক বছরের বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আমরা আন্তঃসীমান্ত নদীর প্রকৃত তালিকাই প্রস্তুত করতে পারিনি। এটা লজ্জার।

রিভারাইন পিপল গবেষণায় সীমান্তে যে কোনো প্রাকৃতিক প্রবাহকেই আন্তঃসীমান্ত নদী হিসেবে চিহ্নিত করা, পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন, আন্তঃসীমান্ত নদী সংরক্ষণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করাসহ ১০টি সুপারিশ তুলে ধরেছে।

সাত বছরেও মেলেনি ১৬ নদীর স্বীকৃতি

১৯৭২ সালের জুনে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত যৌথ নদী কমিশনের প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত ৫৪ নদীর তালিকা চূড়ান্ত হয়েছিল। এর আগে ১৯৭২ সালের মার্চে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধীর যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে ‘ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন’ গঠিত হয়।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন আরও ১৬টি আন্তঃসীমান্ত নদীর খোঁজ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ওই নদীগুলোকে আন্তঃসীমান্ত নদী ঘোষণা করতে ভারতের কাছে তালিকা পাঠিয়েছিল পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে ভারতের কাছ থেকে সাত বছরেও এ বিষয়ে সাড়া মেলেনি।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো ১৬ নদী হলো– হাঁড়িভাঙ্গা, সংকোষ, কর্ণঝড়া, সোমেশ্বরী, মহারশি, উপদাখালী, মঙ্গলেশ্বর, মহাদেও, মহিষখোলা, রাঙ্গা বাগলি, কাশিমারা, চেলা, জালিয়াছড়া, লুবহা, লোহার ও কর্ণফুলী।

এ ব্যাপারে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) উপনির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা এ খান বলেন, ১৯৭২ সালে আন্তঃসীমান্ত নদী ছিল ৫৭টি। আমরা রিভিউ করে দেখেছি কোনো নদী বাদ পড়ে গিয়েছিল কিনা। এখানে ১৬টিরও বেশি নদী পাওয়া গিয়েছিল। আমার জানা মতে, এ তালিকা ভারতে পাঠানো হয়নি। এটি আমরা অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা করে রেখে দিয়েছি।

তবে যৌথ নদী কমিশন, বাংলাদেশের সদস্য ড. মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, ‘১৬ নদীর স্বীকৃতির জন্য ভারতে পাঠানো হলেও তারা গ্রহণ করেনি। তারা এই ১৬ নদীর সংজ্ঞা ঠিক করতে বলেছে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে। আরও ৬৯টি নদীর বিষয়ে আমার জানা নেই।’

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আন্তঃসীমান্ত নদী নিয়ে আমরা এখনও কাজ শুরু করিনি। আন্তঃসীমান্ত নদীর সংখ্যা একেকজন একেক রকম বলছে। তবে এ সংখ্যা অফিসিয়াল স্বীকৃত হতে হবে। সীমান্তের ৫৮ উপজেলার এসিল্যান্ডদের কাছ থেকে আমরা তথ্য নেব। সবকিছু যাচাই-বাছাই না করে আন্তঃসীমান্ত নদীর বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।

এ ব্যাপারে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, নদীগুলোকে অভিন্ন নদীর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।

এইচআর

Link copied!