ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
প্রথম আলোর অনুসন্ধান

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ১৩৩ শিশু শহীদ

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

আগস্ট ৪, ২০২৫, ০১:০২ পিএম

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ১৩৩ শিশু শহীদ

২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ–অভ্যুত্থানে অন্তত ১৩৩ শিশু শহীদ হয়েছে বলে প্রথম আলোর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। ২০১৩ সালের শিশু আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের সবাইকে শিশু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

শহীদ শিশুদের মধ্যে ৯১ জন ছিল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এবং ৪১ জন বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক খাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। শহীদদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী শিশু ছিল চার বছরের আবদুল আহাদ।

আবদুল আহাদ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় ১১ তলা একটি ভবনের ৮ তলায় বাবা–মায়ের সঙ্গে বসবাস করত। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকেলে বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয় সে। 

তার বাবা আবুল হাসান জানান, হঠাৎ নিচ থেকে বিকট শব্দ শুনে পরিবারের সবাই বারান্দায় যান। তখন হেলমেট পরা অস্ত্রধারীরা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এবং ওপরের দিকে গুলি ছোড়ে। একটি গুলি আহাদের ডান চোখ ভেদ করে মাথায় লাগে। পরদিন ২০ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দুই মাস পর পরিবারটি ওই বাসা ছেড়ে মিরপুর ১ নম্বরে চলে যায়।

আহাদের মতো বাসার বারান্দায় থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে আরও তিন শিশু—মিরপুরের সাফকাত সামির (১০), উত্তরার নাঈমা সুলতানা (১৫) ও নারায়ণগঞ্জের রিয়া গোপ (৬)। 

নাঈমার মা আইনুন নাহার জানান, ১৯ জুলাই বিকেলে কাপড় আনতে গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালে নাঈমার মাথায় গুলি লাগে। সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল এবং চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখত।

এই গণ–অভ্যুত্থানে প্রথম কোনো শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৭ জুলাই। ভোলার মো. সিয়াম (১৫) ঢাকায় খালাতো ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসে যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট অনুযায়ী, ২ আগস্ট পর্যন্ত সরকারিভাবে শহীদ তালিকায় ছিল ৮৪৪ জনের নাম। তবে ৩ আগস্ট রাতের গেজেটে ৮ জনের নাম বাদ দিয়ে চূড়ান্ত সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৩৬। বাদ পড়াদের মধ্যে একজন শিশুসহ চারজনের নাম তালিকায় দুইবার ছিল, আর বাকি চারজন সরাসরি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন না।

প্রথম আলোর বিশ্লেষণ বলছে, শহীদ শিশুদের মধ্যে মাত্র চারজন ছিল মেয়েশিশু—রিয়া গোপ, নাঈমা সুলতানা, রিতা আক্তার (১৭) ও নাফিসা হোসেন মারওয়া (১৭)। রিতা ও নাফিসা সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

শহীদ শিশুদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা পদচারী সেতুর পাশে পুলিশ একের পর এক গুলি ছুড়ে হত্যা করে ইমাম হাসান তায়িম ভূঁইয়াকে (১৭)। সে নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজীনগর এমডব্লিউ কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। তার ভাই রবিউল আউয়াল জানান, তায়িম হত্যার পর তার বাবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ৭০ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছেন।

আশুলিয়ার শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আস সাবুর (১৪)–এর অর্ধপোড়া মরদেহ পায় তার পরিবার। ভাই রিজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র–জনতার আন্দোলন দমন করতে গুলি করার নির্দেশ শেখ হাসিনাই দিয়েছিলেন, এটি এখন নানাভাবে প্রমাণিত। আমরা চাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।’

গেন্ডারিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র শাহারিয়ার খান আনাস (১৬) শহীদের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ৫ আগস্ট মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে মাকে চিঠিতে সে লেখে, ‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। মৃত্যুর ভয়ে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যু অধিক শ্রেষ্ঠ।’ ওই দিন রাজধানীর চানখারপুলে গুলিতে শহীদ হয় সে।

রাজধানীর মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া (১৭), যিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফারহান ফাইয়াজ’ নামে পরিচিত ছিলেন, ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। মৃত্যুর একদিন আগে ফেসবুকে সে লিখেছিল, ‘একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। এমন জীবন গড়ো, যাতে মৃত্যুর পর মানুষ তোমাকে মনে রাখে।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী এ ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “শিশু–কিশোরসহ নিরস্ত্র মানুষ হত্যার এই ঘটনা জাতির মুখে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে। তবে আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বুক পেতে দিয়েছিল সবাই, যা গর্বের বিষয়।”

সূত্র: প্রথম আলো

ইএইচ

Link copied!