রাবি প্রতিনিধি
আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
দলীয় ছাত্র রাজনীতির বাইরে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন একটি নির্দলীয় ছাত্র সংগঠন—‘ইউনাইটেড স্টুডেন্টস ডেমোক্রেটিক ফোরাম (ইউএসডিএফ)’।
সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক তাসিন খান। এ সময় সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিফাত হোসাইন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম সন্ধী, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হোসেন মোহাম্মদ সাফিনসহ প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি একটি স্বাধীন, মেধাভিত্তিক এবং অধিকারের পক্ষে লড়তে আগ্রহী ছাত্র প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। দলীয় রাজনীতির বাইরে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত এই ফোরাম নিজেদের পরিচয় দিয়েছে—‘নন-পার্টিজান গণতন্ত্রকামী ছাত্রজনতার কণ্ঠস্বর’ হিসেবে।
তাসিন খান বলেন, “আমরা কোনো দল বা গোষ্ঠীর অনুসারী নই। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র রাজনীতি মানে সংঘাত নয়, বরং নীতিনির্ধারণে ছাত্রদের অংশগ্রহণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্র।”
প্রচলিত ছাত্র রাজনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাঙ্গনে দলীয় রাজনীতির নামে সহিংসতা, ট্যাগিং এবং ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। বুয়েটের আবরার, চমেকের আবিদ কিংবা রাবির রিমুর মতো অসংখ্য শিক্ষার্থীর রক্ত এই ফ্যাসিবাদী ছাত্ররাজনীতির খেসারত।”
সাংগঠনিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরাই আমাদের প্রকৃত শক্তি। আমাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্র, কোনো দলের রক্ষীবাহিনী তৈরির কারখানা নয়। যুক্তিনির্ভর বিতর্ক, কনফারেন্স ও ডায়লগের মাধ্যমেই হতে পারে ন্যায়ের পক্ষে রাজনীতি। আমাদের লক্ষ্য হলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ করে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং অধিকারের শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলা—এই কাজেই ইউএসডিএফ কাজ করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই উদ্যোগ কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, এটি একটি অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে। আমরা ছাত্ররাজনীতিকে পুনঃসংজ্ঞায়িত করতে চাই, যেখানে সহিংসতার পরিবর্তে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে মেধা ও চিন্তার মাধ্যমে।”
রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে রিফাত হোসাইন বলেন, “আমরা কেবল রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আত্মপ্রকাশ করছি না। আমরা মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি নতুন কণ্ঠ হয়ে কাজ করতে চাই। ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ শব্দের একটি নতুন সংজ্ঞা উপস্থাপন করাই আমাদের লক্ষ্য।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ইউএসডিএফ-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। জানানো হয়, সদস্যদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সংগঠনের মুখপাত্র নির্বাচন করা হবে।
ইএইচ