ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

জন্মনিবন্ধনে ভোগান্তির শেষ কোথায়

রেজাউল করিম

রেজাউল করিম

জানুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০১:৫৯ পিএম

জন্মনিবন্ধনে ভোগান্তির শেষ কোথায়

সম্ভবত গত ২২ ডিসেম্বর বগুড়ার একজন সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ‘জন্মনিবন্ধন সংশোধন। লাগবে ৮ হাজার টাকা। এ লজ্জা আমাদের।’ এমন আবেগি পোস্ট অনেকের বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। আমিও নড়ে বসেছিলাম। এরপর বেশ কিছু ইউনিয় পরিষদ ও পৌরসভা ঘুরে দেখেছি। লাগে কত এটা ঠিক করে বলতে না পারলেও নিশ্চিত হয়েছি এ পথ চরম ভোগান্তির। সময়ের কাজ সময়ে হচ্ছে না, সরকার নির্ধারিত ফি মানছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভোগান্তি নিরসনে যে যা পারছে, দিচ্ছে। যে যা পারছে, নিচ্ছে। একদিনের পথ একমাসেও শেষ হচ্ছে না। এ ভোগান্তির শেষ কোথায়? 

দেশের সব বয়সি নাগরিকের জন্য জন্মনিবন্ধন প্রযোজ্য। জন্ম সনদ হচ্ছে একজন মানুষের জন্ম, বয়স, পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রমাণ। রাষ্ট্র-স্বীকৃত নাগরিকের মর্যাদা ও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে হলে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদর্শণ করা বাধ্যতামূলক। ২০০৪ সালে জন্মনিবন্ধন আইন করা হয়, কার্যকর হয় ২০০৬ সালে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ (২০০৪ সালের ২৯নং আইন) এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান ও জন্ম সনদ প্রদান করা হয়। 

সর্বশেষ নীতিমালা অনুসারে ৪৫ দিনের মধ্যে শিশুর নতুন জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে কোন ফি জমা দিতে হবে না। ৪৫ দিনের পর শিশুর ৫ বছর বয়স পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে ২৫ টাকা ফি এবং পাঁচ বছর পরে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করতে আবেদনকারীকে প্রতিটি জন্মনিবন্ধনের জন্য ৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। এই টাকা স্থানীয় সরকার বিভাগ অথবা নিবন্ধকের কার্যালয় গ্রহণ করবে। অথচ সরকারি ফি কত সেটা জানেন না অধিকাংশ গ্রাহক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নিচ্ছেন ইচ্ছেমতো ফি। 

সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ মাসের পর মাস ঘুরতে হয় জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে অথবা সংশোধন করতে। শিশুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পাসপোর্ট ইস্যু, বিয়ে নিবন্ধন, সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় নিয়োগদান, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, আমদানি ও রপ্তানি লাইসেন্স প্রাপ্তি, গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি, ঠিকাদারি লাইসেন্সপ্রাপ্তি, বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রাপ্তি, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, শিশু শ্রম প্রতিরোধ ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তিসহ নানা কাজে জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে। 

এ সবের মধ্যে কিছু কাজ জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে করা যায়। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতেই জন্মনিবন্ধন সনদের প্রয়োজন পড়ে। সেই গুরুত্বপূর্ণ জন্মনিবন্ধন তৈরি, সংশোধন, ইংরেজিকরণে সাধারণ মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে জন্মনিবন্ধন বা সংশোধনের কাজে অতিরিক্ত ফি. আদায়েরও। বগুড়ার সেই পোস্টের মতো টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌর নাগরিকদের অহরহ এমন ভোগান্তির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এ ভোগান্তি শুধু বগুড়া বা টাঙ্গাইলের নয়, সারাদেশের চিত্র।

শিশুদের জন্ম সনদ নিয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্কুলে ভর্তির সময় শিশুর বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম সনদ চাওয়া হয়। সময়মতো জন্মনিবন্ধন পেতে দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে অভিভাবকদের। শিশুর জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে গিয়ে দেখা যায় শিশুদের জন্মনিবন্ধনে বাবা মায়ের নাম ভুল রয়েছে। বাবার নামে মোহাম্মদ আছে শিশুর জন্মনিবন্ধনে বাবার নামে মোহাম্মদ নেই। মায়ের নামে আক্তার থাকলে শিশুর জন্মনিবন্ধনে মায়ের নামের ঘরে বেগম লিপিবদ্ধ হয়েছে। 

অনেক ক্ষেত্রে পিতা মাতার জন্মনিবন্ধনের সাথে নামের মিল নেই জাতীয় পরিচয়পত্রের। এ ক্ষেত্রে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে প্রথম ধাপে সংশোধন করতে হয় পিতামাতার নাম। ভোগান্তিটা এখান থেকেই শুরু হয়। অন্য দিকে শিশুর পিতা প্রবাসে থাকায় পাসপোর্টের নামের সাথে অনেকের মিলছে না জন্ম নিবন্ধনের নাম। এতে অভিভাবকদের আরেক ধাপে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দেশে ফিরে নতুন করে পাসপোর্ট করতে গেলে জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টে ত্রিমুখী ভুল থাকায় ভোগান্তি আরও বাড়ছে। 

সম্প্রতি বিভিন্ন স্কুলে চলছে ভর্তি। নবম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে থাকতে হচ্ছে ইংরেজি ভার্সনে শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন। অথচ অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর জন্মনিবন্ধন অনলাইনে ইংরেজি ভার্সন করা নেই। এদিকে সদ্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী শেষ করা ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হচ্ছে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করতে জন্মনিবন্ধনের ইংরেজি ভার্সনের প্রয়োজন হওয়ায় অধিকাংশ মাধ্যমিক-নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করতেই শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধনের ইংরেজি ভার্সন নিচ্ছেন। ইংরেজি ভার্সন জন্মনিবন্ধন সনদ তুলতে দেরি হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছে না নতুন শ্রেণিতে। 

বই দিবসের ১৪ দিন পার হলেও শুধুমাত্র জন্মনিবন্ধনের ইংরেজি ভার্সন সংগ্রহ করতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থী নতুন বছরের পাঠ্য বই এখনও হাতে পায়নি। এতে বিশেষ করে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। জন্মনিবন্ধনের ইংরেজি ভার্সন তৈরি করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ফরম পূরণ করার পর সেই আবেদন উপজেলা বা জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দিয়ে অনুমোদন করাতে হয় । কোথাও কোথাও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমোদন হলেও আবার কোথাও উপজেলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সামনে স্বশরীরে হাজির হয়ে সাক্ষাতকারের মাধ্যমে আবেদন অনুমোদন করাতে হচ্ছে। উপজেলা থেকে অনুমোদিত আবেদন নিয়ে পুনরায় আবেদনকারীকে আসতে হয় নিজস্ব ইউনিয়ন পরিষদে। 

ভুক্তভোগীদের দাবি, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকেই এসব সেবার ব্যবস্থা করা হোক। জন্মনিবন্ধনের প্রথম ধাপে তথ্য সংগ্রহ করা হয় স্বল্প প্রশিক্ষত জনবল দিয়ে। ফলে প্রথম পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের সময় সার্টিফিকেট বা অন্যান কাগজপত্রের সাথে মিল না রেখেই এনালগ বইতে তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। ভোগান্তিটা তখন থেকেই শুরু। এরপর ২০১০ সালে এনালগ তথ্য বহি থেকে অনলাইন সার্ভারে জন্মনিবন্ধন তথ্য স্থানান্তর করা হয়। তখন এই ভুল তথ্যগুলোই ডিজিটাল ভুলে রূপান্তরিত হয়। এরপর অনলাইনে সংশোধন করতে শুরু হয় নাগরিকদের চরম ভোগান্তি। জনবল কম থাকায় কোথাও কোথাও একযোগে অনলাইনে তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। ফলে নাগরিকের অনলাইন সনদ পেতে দ্বিতীয় দফায় তথ্য দিতে হচ্ছে। 

২০১০ সালের পর যে সার্ভারে কাজ করা হতো, সম্প্রতি তা পাল্টানো হয়েছে। নতুন এই সার্ভারেও আগের সার্ভারের সব তথ্য স্থানান্তর হয়নি বলে জানা গেছে। এতে ভোগান্তিতে আরও বেড়েছে। জন্মনিবন্ধন করার ৯০ দিনের মধ্যে সংশোধন করতে হলে তা নিবন্ধকের কার্যালয় থেকেই সম্ভব। এরপর উপজেলা বা জেলা প্রশাসনে গিয়ে করতে হয়। সংশোধনীর জন্য নিবন্ধকের কার্যালয় থেকে আবেদন উপজেলা বা জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে অনুমোদন দেয়া হলে নিবন্ধকের কার্যালয় থেকে তা সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু আবেদন দিনের পর দিন সংশোধনের জন্য পড়ে থাকে। 

তখন দ্রুত পাওয়ার জন্য মানুষ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে গিয়ে ভিড় জমান। জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সরকার আরও একটি নিয়ম যুক্ত করেছে। যাদের জন্ম ২০০১ সালের ১ জানুয়ারির পর, তাদের সনদ পেতে হলে মা-বাবার জন্মসনদসহ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকতে জন্মসনদ কেন প্রয়োজন এই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। যদিও সম্প্রতি কিছুটা শিথিলযোগ্য। অন্যদিকে ২০১১ সাল থেকে যে সার্ভারে কাজ চলছিল, সেখানকার সব তথ্য বর্তমান সার্ভারে স্থানান্তর করে নিলে নতুন করে কাউকে জন্মনিবন্ধন করতে হতো না। 

পুরোনো জন্মনিবন্ধনের নম্বর দিয়ে পাসপোর্ট করেছে বা ভিসার জন্য ব্যবহার করেছে। এখন তাদের ১৭ ডিজিট নেই। নতুন করে করলে সেই নম্বর পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বর্তমান সার্ভারের সক্ষমতার চেয়ে ব্যবহারকারী বেশি। এতে প্রায়ই ডাউন হয়ে যাচ্ছে সার্ভার। নিবন্ধন ফরম ও সংশোধনীর ফরমটাই অনেকে বুঝছে না। সংশোধণের ক্ষেত্রে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের ফি ৫০ টাকা, বয়স সংশোধন ১০০ টাকা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ইচ্ছে মতো।

বিবিএসের তথ্য মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৭ কোটি। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত ৬ মার্চ পর্যন্ত দেশে জন্মনিবন্ধনের পরিমাণ ১৯ কোটি ৩৫ লাখের বেশি। এ ছাড়া ৬ মার্চ পর্যন্ত সংশোধনের আবেদন জমা ছিল প্রায় ২২ লাখ। বিবিএসের পরিসংখ্যানের চেয়ে জন্মনিবন্ধন বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ জানা যায়, স্কুল পরিবর্তন বা পছন্দের স্কুলে ভর্তির জন্য অনেক অভিভাবক একাধিক জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়েছেন। আগের সার্ভারে একাধিক জন্মনিবন্ধন কেউ করলে তা ধরা যেত না। 

তবে এখন ধরা যায়। এদিকে জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে আসা অধিকাংশ নাগরিকের অভিযোগ, প্রায়ই সার্ভার ডাউন থাকে। সার্ভার ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়। সাধারণ মানুষের অভিযোগ অতিরিক্ত ফি আদায় করতে ইন্টারনেটের গতি কম, সার্ভার ডাউন ইত্যাদি অজুহাত দেখিয়ে সেবাপ্রার্থীদের দিনের পর দিন ঘোরানো হচ্ছে। 

এমনও শোনা যাচ্ছে, কোনো কোনো কেন্দ্রে অসাধু কর্মকর্তাদের হাতে কিছু টাকা তুলে দিলেই জন্মসনদ পাওয়া যায় দ্রুত। এ অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে চাই আইনের কঠোর প্রয়োগ। যেখানে জন্ম সনদ তাৎক্ষণিক প্রয়োজন সেখানে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সনদ পাচ্ছে না। অনেকের অভিযোগ, মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে সনদ পেতে। বস্তুত এ সনদ পেতে বা সংশোধনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সব শ্রেণির মানুষকেই।

শিশুদের ক্ষেত্রে ভোগান্তি আর বয়স্কদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে হয়রানি তো আছেই। অনেক ইউনিয়নে প্রায়ই তথ্য সেবাকেন্দ্র থেকে নোটিস জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সার্ভার আপডেট করার জন্য সমস্যা হচ্ছে, এ কারণে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ। অনেকে বলছে সার্ভার ডাউনের জন্য জন্ম সনদ দিতে বিলম্ব হচ্ছে। এদিকে মৃত্যু সনদেও গুনতে হয় অতিরিক্ত অর্থ। 

অথচ অর্থ গ্রহণের নেই কোনো রশিদ। সরকারি নির্ধারিত ফি নেয়ার পরও কোথাও কোথাও বাড়তি সার্ভিস চার্জের নোটিস টাঙানো হয়। ডিজিটাল সেবার উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের ভোগান্তি কমানো। কিন্তু সেই ডিজিটাল সেবায় জন্মনিবন্ধনে ক্রমশ ভোগান্তি বেড়েই চলছে। গ্রাহক থেকে কর্মকর্তা সবাই এ বিষয় নিয়ে বিরক্তে আছেন। তবুও মিলছে না সমাধান। ইউনিয়ন কিংবা পৌরসভা সবখানে একই চিত্র। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে বিড়ম্বনা বাড়ালেও নেই কোনো জবাবদিহি। ভোগান্তির সমাধান নিয়েও কারও সদিচ্ছা নেই। সমস্যাই এখন নিয়মে পরিণত হচ্ছে। 

অধিকাংশ নাগরিকের ধারণা জন্মনিবন্ধন মানেই ঘুরতে হবে। বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। তবে এ বিড়ম্বনার শেষ কোথায় সেটাও অজানা। গত অক্টোবরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালন উপলক্ষে ক্ষোভও প্রকাশ করেন ঢাকার দুই মেয়র। তাদের বক্তব্যেই উঠে আসে দিনের বেলা জন্মনিবন্ধনের সার্ভার ডাউন থাকে, কখনো বন্ধও থাকে। ওই সময় লোকজন নিবন্ধন করতে পারেন না। আবার রাতে সার্ভার ঠিক থাকে। 

রাতে গ্রাহক উপস্থিত থাকার কথা না। ডিজিটাল সেবার জন্মনিবন্ধনের মতো একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এত অবহেলা কেন? এর সমাধানে জোড়ালো পদক্ষেপ নেই কেন? এ ভোগান্তির শেষই বা কোথায়।

 লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

Link copied!