আমার সংবাদ ডেস্ক
আগস্ট ১৫, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে থাকার সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, এই নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত।
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত এ কর্মসূচির পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায়ও মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
আব্বাস বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের এমন একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল, যেখানে ইঁদুর আর পোকামাকড় দৌড়াত। কয়েকজন জেলার ও ডেপুটি জেলার অন্যায়ভাবে তাকে ছাদের ওপর একটি কক্ষে রেখেছিল। এই নির্যাতনের জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচার হওয়া উচিত।
বিএনপির দুর্দিনে দলের নেতৃত্ব দিয়ে খালেদা জিয়া যে ভূমিকা রেখেছেন তা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা যারা কয়েকজন তাদের সঙ্গে কাজ করেছি তারা দেখেছি দেখেছি তার দৃঢ় মনোবল। গণতন্ত্রের প্রশ্নের তার আপোষহীন নেতৃত্ব এবং নেতা-কর্মীদের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও স্নেহ তা তুলনাহীন।
২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে তাকে রাখা হয়। ওই সময় নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। দলের পক্ষে থেকে বারবার তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে এবং বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানালেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমতি দেয়নি।
পরে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে, ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বেগম খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার। এ সময় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ অনেকটা গৃহবন্দি রাখা হয় খালেদা জিয়াকে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে খালেদা জিয়া চতুর্থ। বাবা এস্কান্দর মজুমদার, মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। পৈত্রিক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে বাবার কর্মস্থলে। ১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখেন গৃহবধূ খালেদা। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে তিন দফা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দলের চেয়ারপারসনের আরোগ্য কামনায় এই মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নয়া পল্টনের মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানও বক্তব্য রাখেন। এই মিলাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নিরব, আসাদুল করীম শাহিন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানরগর দক্ষিণ বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জেএইচআর