Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪,

আইনজীবী ইউসুফসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে চিঠি

মো. মাসুম বিল্লাহ

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২, ০১:১২ এএম


আইনজীবী ইউসুফসহ ৮ জনের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে চিঠি

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের তিন নেতা ও আইনজীবী ইউসুফ আলী সহ আট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে থাকা ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা আটকে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ বা ফ্রিজ করতে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সংস্থাটির উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের সই করা পৃথক এসব চিঠির সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের তিনটি ব্যাংক হিসাব এবং ইউসুফ আলীর ল ফার্মের একটি অ্যাকাউন্টে থাকা ১৬ কোটি টাকার কথা বলা হয়েছে ফ্রিজের তালিকায়। বেসরকারি দ্য সিটি ব্যাংক, কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও ব্যাংক এশিয়ায় ওই টাকাগুলো জমা রয়েছে।

এছাড়া গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা কামরুজ্জামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও 
মাইনুল ইসলামের ব্র্যাক ব্যাংক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ১৫টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে চিঠি দিয়েছে দুদক। যেখানে জমা রয়েছে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। শ্রমিকদের টাকা অবৈধভাবে গ্রহণ করার অভিযোগ এনে ফ্রিজ বা অবরুদ্ধ করার অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।

শ্রমিক ও গ্রামীণ টেলিকম সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকমের ১২ বছরের লভ্যাংশ ৪৩৭ কোটি টাকা শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন হওয়ার কথা থাকলেও ২৬ কোটি টাকার হিসাবে গরমিল পাওয়া যায় বলে দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে। শ্রমিকদের টাকা বণ্টন না হয়ে গ্রামীণ টেলিকম এমপ্লোয়ি ইউনিয়ন অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে গত ২৫ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাৎ হয়নি বলে দাবি করেন তারা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিসে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর।

চলতি বছরের ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করার কথা জানান সংস্থাটির সচিব মো. মাহবুব হোসেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছেন।

ওই প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করে দুদক। টিমে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

টিমের অপর সদস্যরা হলেন— সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিক। গত ১৬ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত ১১ ধরনের নথিপত্র সংগ্রহ করে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

Link copied!