ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণার তিন বছর

বদলে গেছে বুয়েট ক্যাম্পাস

মো. নাঈমুল হক

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২, ০১:০৫ এএম

বদলে গেছে বুয়েট ক্যাম্পাস

অর্ধ মাস পরই বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যার তিন বছর পূর্ণ হবে। হত্যার পরই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বুয়েটে। নিষিদ্ধের তিন বছরে বদলে গেছে বুয়েট ক্যাম্পাসের চিত্র। এখন আর ক্যাম্পাসে র‌্যাগিং, চাঁদাবাজি, ভিন্ন মত দমন করা হয় না। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগী হয়েছে। সিনিয়র জুনিয়রের মধ্যে প্রভু আর ভৃত্যর পরিবর্তে শ্রদ্ধার সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। সিএসবি গ্রুপের সিনিয়র জুনিয়র সমান আলোচনায় অগ্রাধিকার মত প্রাধান্য পায়। ছাত্র রাজনীতির ব্যাপারে পূর্ণ আগ্রহ হারিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি করতে হলে ছাত্রদের অধিকারের পক্ষে রাজনীতি করতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে অপরাজনীতি না থাকাই পছন্দ তাদের। তবে  সাবেক শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মাঝে অধিকারের প্রশ্নে চেক অ্যান্ড  ব্যালান্স করা, গোপন সংগঠন বা জঙ্গিবাদ বন্ধের জন্য ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে। ছাত্রী হলে পূর্বেও সমস্যা ছিলো না এখনো নেই। 

বুয়েটের ১৯, ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ক্যাম্পাসে আসার পর পুরোপুরি রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস দেখেছেন।

ড. বজলুর রহমান হলের ১৯ ব্যাচের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসে আমরা বেশ ভালো আছি। ক্যাম্পাসে  সবাই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে। পড়াশোনা করতে পারছে। সিনিয়রদের সম্মানের জন্য র‌্যাগিংয়ের প্রয়োজন হচ্ছে না। আমরা এমনিতেই সম্মান দিচ্ছি। ক্যান্টিনের উদ্বৃত্ত টাকায় ভালো খাবারের ব্যস্থা করা হচ্ছে।

অন্য হলের বন্ধুদের জানাতে পারি, আমাদের হলে ভালো খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। আগের চেয়ে ডাইনিংয়ের খাবারের মান যথেষ্ট ভালো। এমনিতেও খাবারের মান ভালো আর শেষের ১০ দিন তো আরও ভালো। ক্যান্টিনে টাকার মানে খাবারের খেতে পারছি। আমাদের যেকোনো সমস্যায় সিএসবি (কারেন্ট স্টুডেন্ট অব বুয়েট) গ্রুপ আছে।

সেখানে আমরা আলোচনা করি। মতামত শেয়ার করি। জুনিয়র, সিনিয়র মতামতের ভিত্তিতেই র‌্যাগ ব্যাচ বা ফাইনাল ইয়ারের ভাইরা সিদ্ধান্ত নেন। অধিকাংশের মতকে প্রাধান্য দেয়া হয়। জুনিয়রদের কোনো সমস্যা দেখা গেলে সরাসরি না বলে ওই ব্যাচ সম্পর্কে মিম তৈরি করা হয়। সিনিয়র, জুনিয়র একসাথেই থাকি। হলের সিট দেন প্রভোস্টরা। যাদের বাড়ি ঢাকার থেকে দূরে সিট পাওয়া ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ছাত্ররাজনীতি ছাড়াই আমরা ভালো আছি। মাঝে মাঝে ভয় কাজ করে, না জানি কবে আবার রাজনীতি ফিরে আসে।

ছাত্ররাজনীতির সময়ে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্ররাজনীতি থাকাকালীন সময়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হতো। নিয়মিত মিছিলে অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক ছিলো। আগামীকাল সিটি পরীক্ষা আজ রাতেও তাদের গেস্ট রুমে ডাকা হতো। রাজনৈতিক ভাইরা ডাকলে সেখানে না যাওয়ার সাধ্য কারো ছিলো না।

বুয়েটের রাজনীতি করতো ২-৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, তারাই পুরো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের তাদের গোলামের মতো ব্যবহার করতো। রাজনৈতিক ভাইদের যদি ইচ্ছে হয় কাউকে পিটাবে বা মারবে এটা তারা ইজিলি করতে পারত। চুল লম্বা রাখা, ভুলবশত সালাম না দেয়ার মতো তুচ্ছ কারণেও অনেকেই র‌্যাগিংয়ের শিকার হতো। নিয়মিত গেস্ট রুমে নিয়ে তাদের র‌্যাগ দেয়া হতো।  

ক্যাম্পাসে সিনিয়দের কেউ কেউ মনে করছে, রাজনীতি চর্চার প্রয়োজন রয়েছে। 

সপ্তম, ১১তম ও ১৩তম ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে আমার সংবাদকে জানান, ছাত্রদের মাঝে রাজনীতি না থাকলে অধিকার সচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হবে। শিক্ষকদের একচেটিয়া সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার একটা ব্যাপার কাজ করবে। ছাত্রদের অধিকার ক্ষুণ্ন হতে পারে। শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স করার জন্য রাজনীতির প্রয়োজন আছে। আমাদের সময়ের রাজনীতি ভালো ছিলো।

সেখানে রাজনীতির মাধ্যমে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মাঝে একটা ভালো সম্পর্ক ছিলো। রাজনীতি না থাকলে জঙ্গিবাদ  গোপন সংগঠনগুলো কাজ বেড়ে যাবে। জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরের গত বছরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলো বুয়েটের। ২০১৪ সালে ক্যাম্পাসে শিবির নিষিদ্ধ করার পরও আবরারের হত্যা হয়েছিল। সেজন্য নিষিদ্ধ কোনো সমাধান না। টুকটাক যে সমস্যা ছিলো সেটার সমাধান করা যেত।

এ ব্যাপারে আহসান উল্যাহ হলের ১৭ ব্যাচের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী বলেন, বর্তমান ছাত্রদের অধিকারের বিষয়গুলো আমরা সিএসবি গ্রুপে আলোচনা করি। আমাদের র‌্যাগ ব্যাচের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি নির্ধারণ করা আছে। তারাই আমাদের দাবি দাওয়া ভিসি স্যার ও প্রশাসনকে জানাচ্ছেন। গোপনে সংগঠন বন্ধ করার দায়িত্ব তো কোনো ছাত্র সংগঠনের না। এর জন্য সরকারের নির্দিষ্ট বাহিনী আছে। তারা ব্যবস্থা নেবে। 
ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মাঝে এখনো চাপা আতঙ্ক ও ভয় কাজ করছে। তারা আশঙ্কা করছেন যেকোনো সময় ছাত্ররাজনীতি ফিরে আসতে পারে। 

তিতুমীর হলের প্রোভোস্ট আবু সায়েম কাহার আমার সংবাদকে জানিয়েছেন, আগের তুলনায় শিক্ষার্থীরা এখন পড়াশোনায় মনোযোগী হয়েছে। রাজনৈতিক ঝামেলা না থাকায় হলের পরিবেশ অনেক ভালো হয়েছে। ক্যাম্পাসে র‌্যাগিং নেই। সিনিয়র জুনিয়র কোনো ঝামেলা নেই।

দেশে প্রকৃত ছাত্ররাজনীতির চর্চা হয় না জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি আছে। তারা কী ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করছে? এরা কী শিক্ষার জন্য রাজনীতি করে? এরা কী গবেষণার বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য রাজনীতি করে? শিক্ষার্থীরা গণরুমে বস্তির মতো জীবনযাপন করে, খাবারের মান এতো খারাপ, ক্যাফেটেরিয়া নেই এগুলোর ব্যাপারে ছাত্র রাজনীতিকরা কী করছেন?  ছাত্ররাজনীতি করতে হলে ছাত্রদের অধিকারের পক্ষে রাজনীতি করতে হবে। অথচ নিজেদের একটা পদ পায়নি বলে চিটাগং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। ছাত্ররাজনীতি বাংলাদেশের ক্ষতি করছে। ক্যাম্পাসে ছাত্রবান্ধব রাজনীতি ছাড়া সব রাজনীতি বন্ধ করা উচিত।

Link copied!